পেনাল্টি থেকে গোল করার মুহূর্তে জেসন কামিংস। ছবি: এক্স।
কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে জিতলেও ফাইনালে জেতাতে পারলেন না বিশাল কাইথ। বাগানের লিস্টন কোলাসো ও শুভাশিস বসুর পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেন নর্থইস্টের গোলরক্ষক গুরমীত সিংহ। তিনিই ম্যাচের নায়ক।
৯০ মিনিট পরে খেলার ফল ২-২। অর্থাৎ, ডুরান্ড ফাইনালের ফয়সালা হবে টাইব্রেকারে।
বিশাল কাইথ না থাকলে আরও অন্তত দু’টি গোল খেত মোহনবাগান। পুরো দল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কাকে পাস দেবে, কী ভাবে আক্রমণ করবে, বুঝতেই পারছে না তারা। এই পরিস্থিতির সুবিধা নিচ্ছে নর্থইস্ট। বিশাল কোনও রকমে বাঁচিয়ে রেখেছেন দলকে।
তিন মিনিটে জোড়া গোল খেয়ে মোহনবাগান রক্ষণ চাপে পড়ে গিয়েছে। একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছে নর্থইস্ট। আরও গোল করতে পারত পাহাড়ের দল। কোনও রকমে গোল বাঁচিয়ে রেখেছেন বিশাল।
তিন মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল শোধ পাহাড়ের ক্লাবের। বক্সের মধ্যে থেকে চলতি বলে শট মারেন গুলেরমো। কিছু করার ছিল না বিশালের। দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে এল বাগান রক্ষণের খারাপ হাল।
এক গোল শোধ নর্থইস্টের। বক্সের মধ্যে অরক্ষিত জায়গায় বল পান আজ়ারাইয়ে। চলতি বলে ডান পায়ের শটে বিশাল কাইথকে পরাস্ত করেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার চেষ্টা করছে নর্থইস্ট। আক্রমণের চাপ বাড়াচ্ছে তারা। কয়েক বার বক্সে ঢুকলেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি পাহাড়ের দল।
বিরতির আগে ব্যবধান বাড়াল মোহনবাগান। গোল করলেন সাহাল। তবে গোলের কৃতিত্ব লিস্টন কোলাসোর। তিনি বাঁ প্রান্ত ধরে বক্সে ঢুকে ঠিকানালেখা পাস বাড়ান। গোল করতে ভুল করেননি সাহাল। ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় বাগান।
৪০ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে থেকে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন মনবীর সিংহ। তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন নর্থইস্টের গোলরক্ষক।
সেমিফাইনালে প্রথমার্ধে চোট পেয়ে উঠতে হয়েছিল শুভাশিস বসুকে। ফাইনালেও প্রথমার্ধে চোট পেয়ে উঠে গেলেন এক ডিফেন্ডার। এ বার চোট পেলেন বাগানের বিদেশি আলবের্তো রদ্রিগেস। তাঁকে তুলে আশিস রাইকে নামালেন কোচ মোলিনা।
আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণের খেলা চলছে। দু’দলই সুযোগ তৈরি করছে। দু’দলই চেষ্টা করছে প্রান্ত ধরে আক্রমণ করার। কিন্তু ১০ মিনিটে করা কামিংসের গোলের পরে আর কোনও গোল হয়নি যুবভারতীতে।
সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল নর্থইস্ট। বক্সের মধ্যে থেকে হেড করেন জিতিন। কিন্তু তৎপর ছিলেন বিশাল। বল বার করে দেন বাগানের গোলরক্ষক।
১৮ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ ছিল মোহনবাগানের। একক দক্ষতায় বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। সামনে ছিলেন শুধু গোলরক্ষক। তাঁর মাথার উপর দিয়ে মারতে গিয়ে একটু জোরে মেরে দেন স্টুয়ার্ট। ফলে বল বার উঁচিয়ে চলে যায়।
এগিয়ে গেল মোহনবাগান। গ্রেগ স্টুয়ার্ট বল বাড়ান বক্সে থাকা সাহালের দিকে। সাহাল বল ধরার সময় পিছন থেকে আশির আখতার তাঁর জার্সি ধরে টেনে ফেলে দেন। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। গোল করতে ভুল করেননি জেসন কামিংস। রেফারিকে ভুল দিকে ফেলে গোল করেন তিনি।
যুবভারতীতে খেলা শুরু হয়েছে। দুই দলই বলের দখল রাখার চেষ্টা করছে। তবে কিছুটা হলেও বেশি আক্রমণাত্মক নর্থইস্ট। কয়েক বার বাগান বক্সে ঢুকে পড়েছে তারা। প্রতিপক্ষকে কিছুটা মেপে নিতে চাইছে সবুজ-মেরুন।
খেলা শুরু হওয়ার আগে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হল সমাপ্তি অনুষ্ঠান। আকাশে চক্কর কাটল সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার। তাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। মাঠে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের সংস্কৃতি নাচের মাধ্যমে তুলে ধরলেন জওয়ানেরা। পাশেই অনুশীলন সারলেন দু’দলের ফুটবলারেরা।
ফাইনালে প্রথম একাদশে নেই দিমিত্রি পেত্রাতোস। তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে রাখা হয়েছে। তবে বাগান সমর্থকদের জন্য ভাল খবর, শুরু থেকেই খেলবেন অধিনায়ক শুভাশিস বসু। চার বিদেশিকে রেখে দল গড়েছেন কোচ হোসে মোলিনা।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশ— বিশাল কাইথ, টম অলড্রেড, শুভাশিস বসু, আলবের্তো রদ্রিগেস, অনিরুদ্ধ থাপা, গ্রেগ স্টুয়ার্ট, লিস্টন কোলাসো, সাহাল আব্দুল সামাদ, আপুইয়া, মনবীর সিংহ, জেসন কামিংস।