এ ভাবেই অন্ধকারে দাঁড়িয়ে রইল ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’। ছবি: রয়টার্স
স্পেনের ঘরোয়া লিগে রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফুটবলার ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। তার প্রতিবাদে আলো নেভানো হল রিয়ো ডি জেনিরোর ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’এ। অন্ধকারে পড়ে থাকল বিশ্বের সব থেকে উঁচু যিশুখ্রিস্টের মূর্তি।
ভিনিসিয়াসকে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের প্রতিবাদ হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে। সেই প্রতিবাদে যুক্ত হয়েছে ব্রাজিল ফুটবল সংস্থা ও বার্জিল সরকার। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’এর সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য সময় নানা রকমের আলোয় সেজে থাকে এই মূর্তি। কিন্তু সোমবার থেকে অন্ধকারেই ডুবে রয়েছে সেটি।
রবিবার ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ০-১ গোলে হারে রিয়াল। কিন্তু ম্যাচের মাঝে বার বার বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ করা হয় ভিনিসিয়াসকে। তাঁর গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। ডাকা হয় ‘বাঁদর’ বলে। ভিনিসিয়াস এক বার তীব্র প্রতিবাদ করেন। গোলের পিছনে থাকা দুই সমর্থককে চিহ্নিত করে দেন। রিয়ালের তরফে খেলা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়। রেফারি তা মানতে চাননি। বলেন, আগে মাঠের স্পিকারে সমর্থকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হবে। তার পরেও একই ঘটনা ঘটলে খেলা বন্ধ করা হবে।
কিন্তু ঘটনা তার পরেও থামেনি। ফলে খেলা বন্ধ রাখতে হয় সাত মিনিট। ৭০ মিনিটের মাথায় রেফারিকে দেখিয়ে এক সমর্থককে চিহ্নিত করে দেন ভিনিসিয়াস। দুই দলের ফুটবলাররা সমর্থকদের শান্ত করানোর চেষ্টা করেন। লাভ হয়নি। পুলিশ দর্শকাসনে গিয়ে সমর্থকদের শান্ত করে। স্টেডিয়ামের স্পিকারেও বার্তা শোনানো হয়। খেলা শুরুর পরেই ভ্যালেন্সিয়ার এক ফুটবলারের সঙ্গে ঝামেলা করে লাল কার্ড দেখেন ভিনিসিয়াস।
ম্যাচের পর ভিনিসিয়াস ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার নয়। লা লিগায় বর্ণবিদ্বেষ খুব স্বাভাবিক। প্রতিযোগিতার আয়োজকরা, ফুটবল সংস্থাও সেটাই মনে করে। বিপক্ষ দল এতে আরও উৎসাহ পায়। যে লিগে রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, ক্রিশ্চিয়ানো (রোনাল্ডো) এবং মেসির মতো ফুটবলাররা খেলে গিয়েছে, তা এখন বর্ণবিদ্বেষীদের দখলে চলে গিয়েছে। কিন্তু আমি শক্তিশালী এবং শেষ পর্যন্ত বর্ণবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে লড়াই করব।”
ভিনিসিয়াসের পাশে দাঁড়িয়েছেন রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলোত্তি। তিনি বলেছেন, “যখন স্টেডিয়ামে কোনও ফুটবলারের উদ্দেশে বাঁদর বলে চিৎকার করা হয় এবং কোচ সেই ফুটবলারকে তুলে নেওয়ার কথা ভাবেন, তার মানে লিগে বড় সড় সমস্যা রয়েছে। ম্যাচটা অবশ্যই থামিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। এমন ঘটনা ঘটা উচিত হয়নি। এর আগেও অনেক স্টেডিয়ামে এই ঘটনা ঘটেছে।”
ফ্রান্সের ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে লিখেছেন, “তুমি একা নও। আমরা তোমার সঙ্গে রয়েছি এবং তোমাকে সমর্থন করছি।” রিয়ালে ভিনিসিয়াসের সতীর্থ থিবো কুর্তোয়া জানিয়েছেন, ভিনিসিয়াস মাঠ থেকে উঠে যেতে চাইলে তিনিও উঠে যেতেন।