Stephen Constantine

Lallianzuala Chhangte: নৌ সেনার বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে কনস্ট্যান্টাইনকে গুরুদক্ষিণা ছাংতের

ভারতীয় দলের কোচ থাকার সময় বছর সাতেক আগে স্টিভনই আবিষ্কার করেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ আই লিগে পুণের শিবাজিয়ান্সের হয়ে দুর্দান্ত খেলা ছাংতেকে।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৬:৫০
Share:

গুরু-শিষ্য: যুবভারতীতে স্টিভন। উৎসব ছাংতের। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

ডুরান্ড কাপে বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে ভারতীয় নৌ সেনার বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেবে নেমে জোড়া গোল করে উল্লাসে দু’হাত শূন্যে ছুড়লেন লালিয়ানজ়ুয়ালা ছাংতে। সেই সময় আরও এক জনের হৃদয় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল গর্বে। তিনি, স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন।

Advertisement

ভারতীয় দলের কোচ থাকার সময় বছর সাতেক আগে স্টিভনই আবিষ্কার করেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ আই লিগে পুণের শিবাজিয়ান্সের হয়ে দুর্দান্ত খেলা ছাংতেকে। ডেকে নিয়েছিলেন জাতীয় দলে। তিরুঅনন্তপুরমে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে শুধু অভিষেক স্মরণীয় করে রাখেননি মিজ়োরামের এই প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার, ভেঙেছিলেন ভাইচুং ভুটিয়ার নজিরও। ভারতের হয়ে ছাংতে প্রথম ম্যাচ খেলেন আঠারো বছর চার মাস বয়সে। জাতীয় দলে ভাইচুংয়ের অভিষেক হয় আঠারো বছর ছয় মাস বয়সে। সেই ছাংতে এখন কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফুটে উঠেছেন। অন্যতম প্রিয় ছাত্রকে দেখতেই বৃহস্পতিবার প্রবল গরম উপেক্ষা করে স্টিভন চলে এসেছিলেন যুবভারতীতে। ভারতীয় নৌ সেনার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে ছাংতের নাম না দেখে হয়তো একটু হতাশই হয়েছিলেন তিনি। ৬৪ মিনিটে বিক্রম সিংহের পরিবর্তে তাঁর প্রিয় ছাত্র মাঠে নামতেই মন ভাল হয়ে যায় স্টিভনের।

জয় দিয়ে বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে ডুরান্ড কাপে যাত্রা শুরু করলেও বিদেশিহীন নৌ সেনা দলের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েছিল মুম্বই। একাধিক সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও বিক্রমরা গোল করতে পারেননি নৌ সেনা দলের গোলরক্ষক বেলুতা বিষ্ণুর তৎপরতায়। গতির বিরুদ্ধে ৪৩ মিনিটে গোল করে নৌ সেনা দলকে এগিয়ে দেন আদর্শ মাট্টুমল। অবশ্য প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়েই (৪৫+৩ মিনিটে) বিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে অসাধারণ গোলে ১-১ করেন বিক্রম।

Advertisement

আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হর্ঘে দিয়াসকে তুলে আহমেদ জোসুয়াকে নামান মুম্বই কোচ ডেসমন্ড বাকিংহাম। কিন্তু নৌ সেনার রক্ষণাত্মক ফুটবলের সামনে তাঁর পরিকল্পনা বারবার ভেস্তে যাচ্ছিল। ছাংতে নেমেই ছবিটা বদলে দেন। ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে মুম্বইকে ২-১ এগিয়ে দেন। ৮৯ মিনিটে অসাধারণ শটে প্রথম গোল করেন ছাংতে। এক মিনিটের মধ্যেই ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তিনি। ম্যাচের সেরাও হলেন ছাংতে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে তৃপ্ত মুখে দাঁড়িয়েছিলেন স্টিভন। প্রাক্তন ছাত্রের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বললেন, ‘‘ছাংতে এখনও ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম তারকা।’’ ছাংতের তারা হয়ে ওঠার নেপথ্যে প্রধান কারিগর তো আপনি? স্টিভন বললেন, ‘‘কোচ হিসেবে আমার কাজই তো প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার খুঁজে আনা। ছাংতে এই জায়গায় পৌঁছেছে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায়।’’

মুম্বইয়ের জয়ের নায়ক অবশ্য জানতেনই না স্টিভন খেলা দেখতে এসেছিলেন। যখন বেরোলেন, ততক্ষণে প্রিয় গুরু হোটেলে ফিরে গিয়েছেন। স্টিভনের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় হতাশ ছাংতে। বললেন, ‘‘স্টিভন স্যর এসেছিলেন!ওঁর ঋণ কখনও শোধ করতে পারব না। স্টিভন স্যরকেই আমার দু’টো গোল উৎসর্গ করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement