যুবভারতীতে জনি কাউকোর হুঙ্কার। ছবি: এক্স।
মোহনবাগানের কোচের দায়িত্ব নিয়েই আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাস জানিয়ে দিয়েছিলেন, জনি কাউকোকে দলে চাই তাঁর। সেই মতো মরসুমের মাঝেই হুগো বুমোসকে ছেড়ে কাউকোকে সই করিয়েছে বাগান। দ্বিতীয় বার সবুজ-মেরুন জার্সিতে নেমে প্রথম তিনটি ম্যাচেই কাউকো বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন কোচ তাঁর উপর এতটা ভরসা করেছেন। শনিবার যুবভারতীতে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে গোল করতে না পারলেও তিনিই ম্যাচের সেরা। কারণ, বাগানের চারটি গোলের মধ্যে তিনটিই এল কাউকোর পাস থেকে। ৬৩ মিনিটের খেলাতেই নিজের জাত চেনালেন ইউরো কাপে খেলা এই ফুটবলার।
হায়দরাবাদ ও গোয়ার বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসাবে খেলতে নেমেছিলেন কাউকো। ৬০ মিনিটের পরে তাঁকে নামিয়েছিলেন হাবাস। যে টুকু মাঠে ছিলেন, তাতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মাঠে তাঁর থাকাটা কতটা জরুরি। গোয়ার বিরুদ্ধে গোলরক্ষকের ভুল থেকে দিমিত্রি পেত্রাতোস যে গোলটি করেছিলেন তার বলও বাড়িয়েছিলেন কাউকো। শনিবার যুবভারতীতে তিন বার সেই কাজ করলেন তিনি।
নর্থইস্টের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই কাউকোকে খেলান হাবাস। রক্ষণ ও মাঝমাঠের মাঝে একটি জায়গায় খেলছিলেন তিনি। আবার প্রয়োজনে মাঝমাঠ ও আক্রমণের সংযোগ ঘটাচ্ছিলেন। প্রথম ৩০ মিনিট ছন্নছাড়া ফুটবল খেলার পরে ধীরে ধীরে খেলায় ফেরে বাগান। ফেরান কাউকো। মাঝমাঠে বাগান বল ধরে খেলা শুরু করলে চাপ বাড়ে নর্থইস্টের উপর।
বাগানের প্রথম গোল আসে কাউকোর পা থেকে। প্রথমার্ধেই সংযুক্তি সময়ে বক্সের বাইরে বল পেয়ে বাঁ দিকে অরক্ষিত লিস্টন কোলাসোর দিকে বাড়ান তিনি। গোলরক্ষককে পরাস্ত করে গোল করেন লিস্টন। তিন মিনিট পরেই আবার কাউকোর জাদু। পেত্রাতোসের ফ্রি কিকে হেড করেন হেক্টর ইয়ুস্তে। সাইড লাইনের কাছে বল পান কাউকো। তিনি হেডে বল নামিয়ে দেন গোলের সামনে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা জেসন কামিন্সের পায়ে। সহজ গোলে বাগানকে এগিয়ে দেন কামিন্স।
দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের চার নম্বর গোলটিও আসে কাউকোর পা থেকে। প্রতিআক্রমণে মাঝমাঠ থেকে ডান পায়ের আউট স্টেপে ঠিকানা লেখা পাস বাড়ান তিনি। এক পাসে পুরো নর্থইস্টের রক্ষণ কেটে যায়। বল চলে যায় সাহাল আবদুল সামাদের পায়ে। একা গোলরক্ষককে পরাস্ত করে গোল করেন সামাদ। ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় বাগান।
দলের জয় নিশ্চিত বুঝে ৬৩ মিনিটে কাউকোকে তুলে নেন হাবাস। অতিরিক্ত ঝুঁকি নিতে চাননি তিনি। কাউকো উঠে যাওয়ার সময় সবুজ-মেরুন সমর্থকদের চিৎকার বুঝিয়ে দিচ্ছিল, তাঁকে কতটা ভরসা করছেন বাগান জনতা। নর্থইস্ট ম্যাচের আগে কাউকো বলেছিলেন, সমর্থকদের ভালবাসা পেয়ে অভিভূত তিনি। দলকে জেতানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। কলকাতায় নেমে সেই কাজটাই শুরু করে দিলেন কাউকো।