ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করলেন গোয়ার ইকের। গোলের পরে তাঁর উচ্ছ্বাস। ছবি: টুইটার
আবার এক হার। আবার এক জঘন্য ফুটবলের প্রদর্শনী। আবার সমর্থকদের কাছে এক রাশ হতাশা। সরস্বতী পুজোর দিনেও লাল-হলুদ সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে আরও একটি ম্যাচে হারল তারা। এ বার এফসি গোয়ার কাছে ২-৪ গোলে হারল স্টিভেন কনস্টানটাইনের দল। পয়েন্ট তালিকায় নবম স্থানেই থাকল ইস্টবেঙ্গল। অন্য দিকে ম্যাচ জিতে তিন নম্বরে উঠে এল গোয়া। ফলে চার থেকে পাঁচ নম্বরে নেমে গেল এটিকে মোহনবাগান।
আগের ম্যাচে হায়দরাবাদের কাছে ০-২ গোলে হেরেছিল ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচে ৪ গোল খেল তারা। দেখে মনে হচ্ছে প্রতি ম্যাচে গোল খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে লাল-হলুদ বাহিনি। কোনও ম্যাচে ২, কোনও ম্যাচে ৩, তো কোনও ম্যাচে ৪। পেট ভরছে না লাল-হলুদ রক্ষণের। এ বারের আইএসএলে এখনও পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে ৩১টি গোল খেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। পয়েন্ট তালিকার একেবারে শেষে থাকা নর্থইস্ট ইউনাইটেড একমাত্র তাদের থেকে বেশি গোল খেয়েছে (৪১টি)।
প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া যায়নি ইস্টবেঙ্গলকে। দেখে মনে হচ্ছিল, মাঠে শুধু প্রতিপক্ষের পিঠনে দৌড়নোর জন্য নেমেছেন ক্লেটন সিলভারা। ১১ মিনিটে গোয়ার হয়ে প্রথম গোল করেন ইকের গুয়ারোক্সেনা। খুঁজেই পাওয়া গেল না লাল-হলুদ রক্ষণকে। ততটাই খারাপ অবস্থা লাল-হলুদ গোলরক্ষক কমলজিৎ সিংহের।
আইএসএলে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক করলেন ইকের। মাত্র ১২ মিনিট লাগল তিন গোল করতে। ১১ মিনিটে শুরু, ২৩ মিনিটে শেষ। মাঝে ২১ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় গোল করেন তিনি। তিনটি গোলের ক্ষেত্রেই ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণের ভুল পরিষ্কার দেখা গেল। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল কতটা খারাপ খেলেছে তা একটি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। সব থেকে বেশি বল ছোঁয়া প্রথম পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের কেউ নেই। সব থেকে বেশি দৌড়নো প্রথম পাঁচ ফুটবলারও গোয়ার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোয়ার হয়ে চতুর্থ গোল করেন ব্রেন্ডন ফের্নান্দেস। তাঁর বাঁক খাওয়ানো ফ্রিকিক কমলজিৎকে পরাস্ত করে গোলে গিয়ে ঢোকে। দেখে মনে হচ্ছিল, আরও লজ্জা অপেক্ষা করছে ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু ৫৯ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ করেন ভিপি সুহের। বাঁ প্রান্ত ধরে উঠে মহেশের ঠিকানা লেখা ক্রসে হেডে গোল করেন তিনি। ৬৬ মিনিটের মাথায় মহেশেরই কর্নার থেকে হেডে আর একটি গোল করেন সার্থক গোলুই।
দু’গোল শোধ করার পরে কিছুটা আশা তৈরি হয়েছিল লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশাহত হয়েই মাঠ ছাড়তে হল তাঁদের। ২-৪ গোলে হারল ইস্টবেঙ্গল। এই মরসুমে ১৫ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে হারল ইস্টবেঙ্গল। গত মরসুমেও ১১টি ম্যাচ হেরেছিল তারা। তবে এ বার এখনও ৫টি ম্যাচ বাকি। তাই লজ্জা আরও বাড়তে পারে। এর পর ৩ ফেব্রুয়ারি কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল। এখন দেখার সেই ম্যাচে খেলার ছবিটা তারা বদলাতে পারে কি না।