ওড়িশার কাছে চার গোল খেল ইস্টবেঙ্গল। ছবি: টুইটার
প্রথমার্ধে দু’গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে চার গোল হজম। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষেই বোধহয় এমন খেলা সম্ভব। শুক্রবার যুবভারতীতে হাজির হওয়া হাজার দশেক সমর্থক প্রথমার্ধে বেশ শান্তিতে ছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। ম্যাচের শেষে মাঠ ছাড়লেন হতাশায় মাথা নাড়তে নাড়তে। ঘরের মাঠে এখনও জিততে পারল না ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার আইএসএলের সপ্তম ম্যাচে ওড়িশা এফসির কাছে হারতে হল ২-৪ ব্যবধানে। ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্টেই থাকল লাল-হলুদ বাহিনী।
ওড়িশা-ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ মানেই গোলের বন্যা। এ দিনও তার ব্যতিক্রম নয়। অতীতে দু’বার ছ’গোল হজম করতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। শুক্রবার অল্পের জন্য ঘরের মাঠে সেই লজ্জার পুনরাবৃত্তি থেকে রক্ষা পাওয়া গেল। তাতেও খেতে হল চার গোল। যে ভাবে ম্যাচের শেষ দিকে ওড়িশা আক্রমণ করেছে, তাতে এ বারও ছ’গোল দিয়ে দিলে বলার কিছু ছিল না।
ম্যাচের শুরু দেখে অবশ্য এটা বোঝার কোনও উপায় ছিল না। প্রথম থেকেই ব্যাপক আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ২৩ মিনিটেই প্রথম গোল পেয়ে যায় তারা। মাঝ মাঠে বল পেয়েছিলেন জর্ডান ও’ডোহার্টি। তিনি বাড়িয়ে দেন ডান দিকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ভিপি সুহেরকে। তিনি একটু এগিয়ে বল পাস দেন থোংখোসিয়েম হাওকিপকে। হাওকিপ ফাঁকায় বল জালে জড়িয়ে দেন।
কিছু ক্ষণ পরে আবার গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এ বারও সেই সুহেরের পাস। কারালাম্বোস কিরিয়াকুর থেকে পাস পেয়ে যান ক্লেটন সিলভা। তার থেকে বল পেয়ে সুহের পাস দেন নাওরেম মহেশকে। মহেশ অনায়াসে গোল করেন। বিরতিতে দু’গোলে এগিয়ে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তখন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মুখে হাসি। তাঁরা ভাবতেও পারেননি দ্বিতীয়ার্ধে তাঁদের জন্যে কী দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে।
বিরতিতে ইসাককে তুলে পেদ্রো মার্টিনকে নামান ওড়িশা কোচ জোসেপ গোম্বাউ। ওটাই তাঁর মাস্টারস্ট্রোক হয়ে যায়। প্রথম টাচেই গোল করেন পেদ্রো। দিয়েগো মৌরিসিয়োর থেকে বল পেয়ে ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে এক গোল শোধ করেন পেদ্রো। পরের মিনিটেই তাঁর দ্বিতীয় গোল। বাঁ দিক থেকে আসা ক্রস হেড করে নামিয়ে দিয়েছিলেন মৌরিসিয়ো। ফাঁকায় থাকা পেদ্রো বল জালে জড়িয়ে দেন। দু’টি ক্ষেত্রেই ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের দোষ দিতে হবে। কোনও বারই তাঁরা পেদ্রোকে মার্ক করেননি। সেই সুযোগ পুরোপুরি নিয়ে গেলেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।
ইস্টবেঙ্গলের দুর্ভোগের তখনও বাকি ছিল। ৬৫ মিনিটের মাথায় বাঁ দিকে বল পেয়েছিলেন ধনচন্দ্র। বল বেশ কিছু ক্ষণ তাঁর পায়ে থাকলেও ইস্টবেঙ্গলের কেউ তা কেড়ে নিতে পারেননি। ডান দিক থেকে উঠে আসা জেরিকে বল বাড়ান ধনচন্দ্র। অনায়াসে গোল করেন জেরি। এর পর একাধিক বদল করেও দলের চতুর্থ গোল খাওয়া আটকাতে পারেননি স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। ৭৬ মিনিটে ওড়িশার হয়ে চতুর্থ গোল নন্দকুমারের।