ATK Mohun Bagan

আইএসএল ফাইনালে লাল-হলুদ! ট্রফির লড়াইয়ে মোহনবাগানের সামনে হঠাৎ হাজির ইস্টবেঙ্গল!

এই মরসুমে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে মোহনবাগান। যে আত্মত্যাগ করেছেন ফুটবলাররা, তার জন্যই ট্রফি জিততে চান কোচ ফেরান্দো। অধিনায়ক প্রীতম জানালেন, এই ম্যাচ ডার্বির মতোই কঠিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ২০:৫৬
Share:

শনিবার এই ট্রফি উঠবে কার হাতে? ম্যাচের আগের দিন প্রীতম এবং সুনীল। ছবি: পিটিআই

দু’বছর আগে আইএসএলের ফাইনালে উঠেও মুম্বই সিটির কাছে হেরে শেষ হয়ে গিয়েছিল ট্রফিজয়ের স্বপ্ন। শনিবার রাতে আর একই ভুল করতে রাজি নয় এটিকে মোহনবাগান। এ বার পাখির চোখ ট্রফিই। অনুশীলনে কোনও খামতি রাখছে না সবুজ-মেরুন শিবির। বৃহস্পতিবার সকালে প্রস্তুতি সেরেই গোয়ার বিমানে উঠেছিলেন জুয়ান ফেরান্দোর ছেলেরা। শুক্রবার সন্ধেয় বেনোলিমের মাঠে অনুশীলনে করলেন তাঁরা। প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গেই আত্মবিশ্বাসও বাড়ছে দলের। ম্যাচের আগে প্রীতম কোটাল বলেই দিলেন, এই ম্যাচ ডার্বির মতোই কঠিন।

Advertisement

শুক্রবার সকালে মিডিয়া ডে-র আয়োজন করা হয়েছিল আইএসএলের তরফে। দুই দলের কোচ এবং অধিনায়ক ছাড়াও ছিলেন চার জন করে ফুটবলার। সেখানে ফেরান্দো ও অধিনায়ক প্রীতম কোটালের কথা শুনে মনে হয়নি যে টানা ১১ ম্যাচ জিতে আসা বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ট্রফি জেতার লড়াইয়ের আগে তাঁরা বিন্দুমাত্র চাপে রয়েছেন। বরং, এই মরসুমে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, যে আত্মত্যাগ করেছেন ফুটবলাররা, তার জন্যই ট্রফি জিততে চান ফেরান্দো।

স্প্যানিশ কোচের কথায়, “গোটা মরশুম ধরে দলের ছেলেরা প্রচুর পরিশ্রম করেছে। পুজো, দীপাবলি, বড়দিন, কোনও কিছুতেই পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতে পারেনি। ট্রফি জয়ের আনন্দটা ওদের প্রাপ্য। অনেক কঠিন সময় পেরিয়েছে। কী ভাবে সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়, কী ভাবে দল বেঁধে থাকতে হয় তা শিখেছি। ট্রফি জয়ের চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।”

Advertisement

ফেরান্দোর মুখে এ দিনও ৯০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করার কথা। বলেছেন, “বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে আগের ম্যাচগুলোতে যা-ই হোক, এই ম্যাচে তার প্রভাব পড়বে না। শুধুমাত্র জয় চাই। যে ভাবে এত দিন খেলে এসেছি, সে ভাবেই খেলব। লিগের সেরা মুহূর্তটা অর্জন করুক ছেলেরা। সবাই তৈরি। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ানো পছন্দ করি না। তাই ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে চাই। যদিও সেটা আমাদের হাতে নয়। প্রতিপক্ষ কেমন খেলবে তার উপরও নির্ভর করে।”

ফেরান্দো মানতে চাননি যে ট্রফি জিতলেই তিনি বিরাট কোচ হয়ে যাবেন। বললেন, “নিজের কোচিং জীবনের কথা ভেবে এখানে আসিনি। এখানে কোচিং উপভোগ করছি। কর্তাদের মানসিকতার সঙ্গেও আমার মানসিকতা কিছুটা মেলে। আমার কাজের উপর সবাই আস্থা রেখেছে। সে জন্যই ট্রফি জিততে চাই। বাকি কিছু নিয়ে কখনও ভাবিইনি।”

চলতি মরসুমে অনেক উত্থান-পতনের পরেও দলের আত্মবিশ্বাস দেখে খুশি মোহনবাগান কোচ। বলেছেন, “অনেক কঠিন সময় পেরোতে হয়েছে। তার মধ্যেও দলের সবাই আত্মবিশ্বাস বজায় রেখেছে। চোটের জন্য একাধিক ম্যাচে আমরা খুব খারাপ খেলেছি। তবে চোট-আঘাত, কার্ড সমস্যা ফুটবলেরই অঙ্গ। কী ভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে, তা ছেলেদের বলে দিয়েছি বার বার। ওরা সেটা মেনে দল হিসেবে এই জায়গায় পৌঁছেছে, এটাই বড় ব্যাপার।”

বেঙ্গালুরু ম্যাচে কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপারে বদল আনতে চান ফেরান্দো। বেঙ্গালুরুর খেলার কৌশল বুঝে নিয়ে দল গড়তে চান তিনি। বলেছেন, “হায়দরাবাদ আর বেঙ্গালুরু একই রকম দল নয়। বেঙ্গালুরু অন্য কৌশলে খেলে। তবে আমাদের বল পায়ে রাখতে হবে, জায়গা তৈরি করে আক্রমণে উঠতে হবে। মানসিকতাও একই থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “বেঙ্গালুরু গত ছ’-সাতটা ম্যাচে ভাল খেলেছে। মুম্বইয়ের মতো দলকেও হারিয়েছে। মুম্বইকে হারানো অত সোজা নয়। লিগের দ্বিতীয় পর্বে ওরা দুর্দান্ত খেলেছে। যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস রয়েছে ওদের। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে খেলাটা খুবই জরুরি। ওরা সেটাই করে।”

ফেরান্দো এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ফাইনালের আগে দলে কোনও চোট নেই। আশিক কুরুনিয়ানও প্রায় সুস্থ। মোহন-কোচ বলেছেন, “চোট-আঘাতের সমস্যা নেই। যে হেতু এখনও অনুশীলন বাকি আছে, তাই কখন কী হবে কেউ জানে না। এখন পর্যন্ত সব ঠিকই আছে। আশিক গত দু’দিনের অনুশীলন করেছে। ও সুস্থ। ম্যাচের আগে আশা করি খেলার অবস্থায় চলে আসবে।”

বেঙ্গালুরু দলে রয়েছে চার প্রাক্তনী। তবে ফেরান্দো তাঁদের নিয়ে ভাবিত নন। বলেছেন, “ওদের জন্য বাড়তি কোনও সুবিধা পাবে না বেঙ্গালুরু। আমাদের খেলোয়াড়রা ওদের চেনে। ওরা ভাল ফুটবলার ঠিকই। কিন্তু খেলাটা এগারো বনাম এগারো। গোটা দলটাকে নিয়েই ভাবতে হচ্ছে। ওদের দলের প্রতি আমাদের যথেষ্ট সমীহ রয়েছে, তবে বেশি ভেবে লাভ নেই।”

এ বারে খুব একটা ছন্দে ছিলেন না মনবীর। তবে ফাইনালে অন্য রূপে নামতে চান তিনি। এর আগে দুটি আইএসএলের ফাইনালে খেলেছেন। একবার গোয়ার হয়ে, আর এক বার মোহনবাগানের হয়ে। কিন্তু কোনও বারই জিততে পারেননি। এ বার আর হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে চান না। বলেছেন, “দু’বার হেরেছি আগে। মানসিক ভাবে খুব ধাক্কা লাগে। এ বার আশা করি হতাশ হতে হবে না। আমরা জেতার জন্য তৈরি।”

চার প্রাক্তনীর প্রসঙ্গ অধিনায়ক প্রীতম বলেছেন, “এটাও ডার্বির মতোই একটা কঠিন ম্যাচ। এই ম্যাচে কিছু ব্যক্তিগত লড়াই থাকবেই। পুরনো বন্ধুরা বেঙ্গালুরুতে খেলে। তাদের সঙ্গে ছোটখাটো যুদ্ধ হবেই। ওরাও ট্রফি জেতার জন্য মরিয়া, আমরাও তাই। আমরা নিজেদের একশো শতাংশ দিতে চাই এবং ট্রফি জিততে চাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement