মগ্ন: দোহায় এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিতে সুনীলরা। ছবি: এআইএফএফ।
এএফসি এশিয়ান কাপে ‘বি’ গ্রুপে ভারতের তিন প্রতিপক্ষ— অস্ট্রেলিয়া, উজ়বেকিস্তান ও সিরিয়া। ফিফা ক্রমতালিকায় যারা রয়েছে যথাক্রমে ২৬, ৬৮ ও ৯১ নম্বরে। সুনীল ছেত্রীদের অবস্থান ১০২তম স্থানে। ভারতের তিন প্রতিপক্ষ শুধু ফিফা ক্রমতালিকায় নয়, তাদের ফুটবলাররা শারীরিক শক্তিতেও অনেক এগিয়ে। তাই লড়াই যে শুধু মাঠের মধ্যে নয়, বাইরেও।
ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্তিমাচ মনে করেন মানসিক ভাবে শক্তিশালী না হলে মাঠে নেমে লড়াই করা কঠিন। শুধু অনুশীলনেই নয়, ফুটবলারদের মানসিক শক্তিও বাড়াতে হবে। যা সম্ভব ধ্যানের মাধ্যমেই।
শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে দোহার টিম হোটেলে সকালে জিম করছেন সুনীলরা। সামান্য বিশ্রাম নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের আগে বসছেন ধ্যানে। অন্ধকার হলঘরে বাজানো হচ্ছে হাল্কা সঙ্গীত। পঁয়তাল্লিশ মিনিট থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধ্যান করছেন ফুটবলাররা। তার পরে সন্ধেয় অনুশীলন করতে মাঠে নামছেন প্রীতম কোটাল, লিস্টন কোলাসোরা। ৩০ ডিসেম্বর রাতে দোহা পৌঁছয় ভারতীয় দল। ক্রীড়া মনোবিদের নির্দেশে পরের দিন থেকেই ধ্যান শুরু সুনীলদের। অনুশীলন না থাকলেও ধ্যান করা থেকে ছুটি নেই ফুটবলারদের।
এএফসি এশিয়ান কাপে অভিযান শুরু করার আগে ধ্যানে জোর দেওয়ার কারণ কী? ভারতীয় দলের সদস্যরা খোলাখুলি জানালেন, অস্ট্রেলিয়া নিয়মিত বিশ্বকাপের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জনকারী দল। একাধিক ফুটবলার ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেন। পিছিয়ে নেই উজ়বেকিস্তান ও সিরিয়ার ফুটবলাররাও। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র মাঠে অনুশীলনই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন মানসিক শক্তি বৃদ্ধির। এ ছাড়া চাপমুক্ত থাকাও জরুরি। পাশাপাশি ইগর আরও একটা কাজ করছেন। এএফসি কাপ থেকে বিদায় এবং আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকের ধাক্কায় ভেঙে পড়া মোহনবাগানের ফুটবলারদের উজ্জীবিত করছেন। ইগরের কথায়, ‘‘আমাদের দলে মোহনবাগানের একাধিক ফুটবলার রয়েছে। ক্লাবের সাম্প্রতিক ফলে মানসিক ভাবে ওরা খুব একটা ভাল জায়গায় নেই। ওদের মনোবল ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য।’’ নিয়মিত ধ্যান ও কোচের অনুপ্রেরণায় মানসিক চাপ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন শুভাশিস বসু। মোহনবাগান অধিনায়কের কথায়, ‘‘আমরা মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। প্রত্যেকেই নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার জন্য তৈরি।’’
নিয়মিত ধ্যান সন্দেশ জিঙ্ঘন, অনিরুদ্ধ থাপাদের মানসিক শক্তি কতটা বাড়িয়েছে, আগামী ১৩ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই বোঝা যাবে।