ইগর স্তিমাচ। — ফাইল চিত্র
সাফ কাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে অনায়াসে হারালেও লাল কার্ড দেখেছেন ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ। বিপক্ষের ফুটবলার এবং কোচেদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। কিন্তু যা করেছেন তার জন্যে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই স্তিমাচের। বরং পরিষ্কার জানিয়ে রাখলেন, পরিস্থিতি এলে আবার একই কাজ করবেন তিনি।
লাল কার্ড দেখায় ম্যাচের পর স্তিমাচ সাংবাদিক বৈঠকে আসতে পারেননি। কিন্তু টুইটারে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। লিখেছেন, “ফুটবল পুরোটাই আবেগের খেলা। বিশেষত যেখানে আপনি দেশের জার্সি গায়ে লড়াই করতে নামেন। গত কাল আমার কাজের জন্যে আপনি আমাকে ভালবাসতে পারেন বা ঘৃণা করতে পারেন। কিন্তু আমি একজন যোদ্ধা। কোনও ব্যাখ্যাহীন সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে মাঠে দলের ছেলেদের রক্ষা করার জন্যে আবার একই কাজ করব আমি।”
সহকারী কোচ মহেশ অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন যে স্তিমাচের দোষ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘স্তিমাচের ও ভাবে মাথা গরম করা উচিত হয়নি। খেলা আমাদের দখলে ছিল। কোনও দরকার ছিল না ওদের ফুটবলারের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর। স্তিমাচের দোষ ছিল।’’ তবে সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে স্তিমাচকে একটু কড়া শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ভারতের সহকারী কোচ বলেন, ‘‘ওকে লাল কার্ড দেখানো উচিত হয়নি। পাকিস্তানের কোচও তো ঝামেলা করেছিল। ওকে হলুদ কার্ড দেখানো হল। স্তিমাচকেও হলুদ কার্ড দেখালে ঠিক হত।’’
ঘটনাটি ঘটে প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে। তখন ০-২ গোলে পিছিয়ে ছিল পাকিস্তান। ফলে গোল করার তাগিদ অনেক বেশি ছিল পাক ফুটবলারদের। ভারতের ডাগআউটের সামনে পাকিস্তানের ডিফেন্ডারের সঙ্গে লড়াইতে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান প্রীতম কোটাল। পাকিস্তান থ্রো-ইন পায়। কিন্তু ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ আবেদন করতে থাকেন ফাউলের। রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। পাকিস্তানের আবদুল্লাহ ইকবাল থ্রো করতে যান। ঠিক তার আগে ভারতের কোচ পিছন থেকে তাঁর হাত থেকে বল কেড়ে নেন।
পাকিস্তানের ফুটবলাররা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একের পর এক ফুটবলার ছুটে আসেন। পাকিস্তানের কয়েক জন ফুটবলার ধাক্কা মারেন স্তিমাচকে। ভারতের ফুটবলাররা এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাকিস্তানের ফুটবলারদের রাগ কিছুতেই কমছিল না। আসরে যোগ দেন পাকিস্তানের কোচও। তিনিও রেগে গিয়ে স্তিমাচকে লক্ষ্য করে কিছু বলতে থাকেন। বেশ কয়েক বার তেড়েও যান।
রেফারি, লাইন্সম্যান এবং দু’দলের কিছু ফুটবলারের মধ্যস্থতায় ঝামেলা থামে। রেফারি ভারতের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী এবং পাকিস্তানের অধিনায়ক হাসান বশিরকে মাঠে ডেকে কিছু কথা বলেন। তার পরেই স্তিমাচকে লাল কার্ড দেখান তিনি। এর ফলে শনিবার নেপালের বিরুদ্ধে ভারতের দ্বিতীয় ম্যাচে ডাগ আউটে থাকতে পারবেন না স্তিমাচ। তাঁর বদলে কোচিং করাবেন মহেশ গাউলি। পাকিস্তানের কোচকেও হলুদ কার্ড দেখানো হয়। এ ছাড়া হলুদ কার্ড দেখানো হয় ভারতের সন্দেশ জিঙ্ঘন এবং পাকিস্তানের নবিকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্তিমাচের ওই আচরণ নিন্দনীয়। ওই পরিস্থিতিতে, প্রতিপক্ষ যেখানে পাকিস্তানের মতো দল, ও রকম আচরণ করার কোনও দরকারই ছিল না। সাজঘরে ফেরার আগে স্তিমাচ অবশ্য হাততালি দিয়ে দর্শকদের আরও তাতিয়ে দেন।