নাকে চোট পাওয়ার পরে এ ভাবেই ফেস গার্ড পরে খেলছেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে। ছবি: রয়টার্স।
ইউরো কাপের সেমিফাইনালে নামার আগে দুই কোচের সামনে দুই সমস্যা। এক দিকে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশঁর প্রধান অস্ত্র কিলিয়ান এমবাপে গোল করতে পারছেন না। অন্য দিকে স্পেনের মিডফিল্ডার পেদ্রি চোটে ইউরো থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু দুই সমস্যাকেই অস্ত্র বানাতে চাইছেন দু’দলের দুই কোচ।
চলতি ইউরোয় ৩৭৪ মিনিট খেলে মাত্র একটি গোল করেছেন এমবাপে। গোদের উপর বিষফোঁড়া তাঁর নাকের চোট। হাড় ভেঙে গিয়েছে। ইউরো শেষ হলে অস্ত্রোপচার হবে। আপাতত ফেস গার্ড পরে খেলছেন। কিন্তু যে এমবাপেকে বিশ্বকাপে দেখা গিয়েছিল, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হতে পারে চোটের কারণে একটু সাবধানে খেলছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের বিরুদ্ধে মুখে বল লাগার পরে এমবাপেকে আর খেলাতে পারেননি কোচ। তুলে নিতে হয়েছে।
সেই এমবাপের উপরেই ভরসা রাখছেন দেশঁ। তিনি জানেন, স্পেনকে হারাতে হলে এমবাপেকে ভাল খেলতেই হবে। তিনি গোলের মধ্যে না থাকায় ফ্রান্স বেশি গোল করতে পারছে না। বাকিরা চেষ্টা করলেও ফ্রান্সের খেলা ফ্রান্সের মতো হচ্ছে না। একমাত্র এমবাপেই গোটা দলকে আবার আগের ফর্মে ফেরাতে পারেন। সেই কারণে দেশঁ সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট বলেছেন, “এমবাপে ১০০ শতাংশ ফিট না হলেও ওকে নিয়ে প্রতিপক্ষ ভয়ে থাকবে। ও কী করতে পারে তা সবাই জানে। নাকে চোট পাওয়ার পরে এমবাপে ইউরো থেকে ছিটকে যেতে পারত। কিন্তু ও এখনও খেলছে। সেটাই আমাদের কাছে ইতিবাচক বিষয়।” দেশঁ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, সেমিফাইনালেও শুরু থেকে খেলবেন এমবাপে।
কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে হারালেও বড় ধাক্কা খেয়েছে স্পেন। টনি ক্রুজ়ের ট্যাক্লে ইউরো শেষ হয়ে গিয়েছে পেদ্রির। পরে ক্রুজ় ক্ষমা চাইলেও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না স্পেনের কোচ লুইস ডে লা ফুয়েন্তে। পেদ্রি না থাকায় তিনি ভরসা রাখছেন লামিনে ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামসের উপর। ইয়ামাল ইউরোর ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি যা খেলছেন তা দেখে অবাক বিশেষজ্ঞেরা। গোল করতে না পারলেও দলের জয়ে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন তিনি। উইলিয়ামসও খুব ভাল খেলছেন। স্পেনের হয়ে দুই প্রান্তে খেলেন এই দুই ফুটবলার। দুই প্রান্ত ধরেই আক্রমণ তুলে আনছে স্পেন। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তাই এই দু’জনের কাঁধেই বেশি দায়িত্ব দিতে চান কোচ।
সেমিফাইনালে দেখা যাবে মাঝমাঠ দখলের লড়াই। দুই দলেই মাঝমাঠের ফুটবলার ফর্তি। ফ্রান্সের দলে যেমন কন্তে, গ্রিজ়ম্যান, থুরাম, চুয়ামেনি, কামাভিঙ্গারা রয়েছেন, তেমনই স্পেনে ভরসা ফাবিয়ান রুইজ়, রদ্রিরা। যে দল মাঝমাঠের দখল নিতে পারবে সেই দল সুবিধা পাবে। বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারবে তারা।
এ বারের ইউরোয় এখনও পর্যন্ত দু’দলের খেলা পর্যালোচনা করলে বোঝা যাবে, স্পেন বেশি ভাল খেলেছে। তাদের গোলের সংখ্যাও বেশি। জার্মানির বিরুদ্ধে একটি গোল খাওয়া ছাড়া এ বারের প্রতিযোগিতায় তাদের বিরুদ্ধে কোনও ফুটবলার গোল করতে পারেননি। তবে বড় মঞ্চে বড় ফুটবলারেরা জ্বলে ওঠেন। সেই সুযোগ রয়েছে এমবাপের কাছে। আরও এক বার নায়ক হয়ে ওঠার সুযোগ। দলকে ফাইনালে তোলার সুযোগ। এখন দেখার এই লড়াইয়ে বাজিমাত করে কোন দল।
মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাতে সাড়ে ১২টা থেকে শুরু খেলা। টেলিভিশনে দেখা যাবে সোনি স্পোর্টস চ্যানেলে। ডিজিটাল মাধ্যমে খেলা দেখা যাবে সোনি লিভ অ্যাপে।