স্যর ববি চার্লটন। — ফাইল চিত্র।
প্রয়াত ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার স্যর ববি চার্লটন। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে এ কথা জানানো হয়েছে। পরে তাঁর ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের তরফেও বিবৃতি দেওয়া হয়। ৮৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরেই ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন। সেই লড়াইয়ে অবশেষে হারতে হল তাঁকে। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন স্যর ববি। সেই বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা ফুটবলার ছিলেন তিনিই।
শনিবার সন্ধের দিকে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, নিজের বাড়িতেই শান্তিপূর্ণ ভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃত্যুর সময় পরিবারের লোকেরাই তাঁর সঙ্গে ছিলেন। ম্যান ইউয়ের তরফে বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “শুধুমাত্র ম্যাঞ্চেস্টার বা ইংল্যান্ড নয়, বিশ্বের যেখানে যেখানে ফুটবল খেলা হয়েছে, সেখানকার লক্ষ লক্ষ লোকের হৃদয়ে ছিলেন স্যর ববি।” তাঁর ভাই জ্যাক ২০২০-র জুলাইয়ে মারা যান। তিনিও শেষ দিকে ডিমেনশিয়ায় ভুগেছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে আর এক ভাই গর্ডনের মৃত্যু হয় ক্যানসার এবং ডিমেনশিয়ার কারণে।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে এক সারিতে উচ্চারণ করা হয় স্যর ববির নাম। দিয়েগো মারাদোনা এবং পেলের পর সাম্প্রতিক কালে আর এক বিশ্বজয়ী ফুটবলার চলে গেলেন। ইংল্যান্ড প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত একমাত্র ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছে ১৯৬৬ সালে। সেই বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার ছিলেন স্যর ববি। সে বছরের শেষের দিকে বালঁ দ্যর পুরস্কার জেতেন।
ম্যান ইউয়েও কিংবদন্তি ছিলেন তিনি। সেই ক্লাবের হয়ে ৭৫৮টি ম্যাচে ২৪৯টি গোল করেছেন। ১৯৬৮ সালে ক্লাব প্রথম বার ইউরোপিয়ান কাপ (এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) জিতেছিল।
মিডফিল্ডার হিসাবেই খেলতেন। কিন্তু গোল করার ধারাবাহিকতা ছিল দেখার মতো। ইংল্যান্ডের হয়ে ১০৬টি ম্যাচে ৪৯টি গোল করেছেন। কেরিয়ারের বেশির ভাগ সময়েই ম্যান ইউয়ে কাটিয়েছেন। পাস এবং দূরপাল্লার শটের কারণে বিখ্যাত ছিলেন। তবে স্যর ববির জীবনে অন্যতম সেরা ঘটনা ১৯৫৮ সালে মিউনিখের বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা। ম্যান ইউয়ের প্রথম দলের আট জন ফুটবলার এবং অনেক সাপোর্ট স্টাফ মারা গিয়েছিলেন সেই ঘটনায়। অক্ষত ছিলেন স্যর ববি।
তাঁর স্ত্রী লেডি নর্মা ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রথম বার ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে স্যর ববির লড়াই প্রকাশ্যে আনেন। ১৯৬৬-র সেই দলের আরও চার ফুটবলারের মৃত্যু হয়েছে ডিমেনশিয়ায়।
১৯৩৭ সালের ১১ অক্টোবর নর্দাম্বারল্যান্ডের আশিংটন গ্রামে জন্ম স্যর ববির। ম্যান ইউয়ে ১৫ বছর বয়সে যোগ দেন। চার্লটন অ্যাথলেটিকের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচ। চোট পাওয়া পেশি নিয়েও জোড়া গোল করেছিলেন। ধীরে ধীরে ক্লাব এবং দেশের অন্যতম সেরা অস্ত্র হয়ে ওঠেন। জীবনে বহু লড়াইয়ে জিতেছেন। কিন্তু ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আর ফেরা হল না।