কোলনে অনুশীলনে এফসি ক্রিভবাসের মহিলা ফুটবলাররা। ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ওঁরা। এক রকম উদ্বাস্তু হয়েই আশ্রয় নিয়েছেন জার্মানিতে। সেখানেই চলছে ইউক্রেনের মহিলা ফুটবল ক্লাব এফসি ক্রিভবাসের অনুশীলন।
নতুন জায়গা। নতুন দেশ। নতুন পরিবেশ। নতুন আবহাওয়া। সব কিছুর সঙ্গেই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ফুটবলাররা। সঙ্গে চলছে ফুটবল অনুশীলন। যদিও, সকলেরই মন পরে রয়েছে দেশে। পরিবার-পরিজনদের চিন্তায় উদ্বিগ্ন তাঁরা।
মাস খানেক আগে প্রশিক্ষণ শিবির এবং ম্যাচ খেলার জন্য তুরস্কে যাওয়ার কথা ছিল ইউক্রেনের মহিলা ফুটবল দল এফসি ক্রিভবাসের। দলটি যখন বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল সে সময়ই রুশ ক্ষেপনাস্ত্র আছড়ে পরে তাঁদের শহর ক্রিভি রি-তে। তুরস্কে আর যাওয়া হয়নি মহিলাদের ফুটবল দলটির। বিপদের সময় তাদের আশ্রয় দিয়েছে জার্মানির ফুটবল ক্লাব এফসি কোলন।
বুন্দেশলিগার ক্লাব এফসি কোলনের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরও ফুটবল দল রয়েছে। সেখানেই এখন রয়েছে এফসি ক্রিভবাসের গোটা দল। কোলনের মাঠেই অনুশীলন করছেন ফুটবলাররা। এক সঙ্গে কোনও রকমে দিন যাপন করছেন কোচ, ফুটবলাররা। এফসি কোলন কর্তৃপক্ষের আতিথেয়তায় খুশি ইউক্রেনের দলটি।
দলের মিডফিল্ডার লিউবভ মোজগা বলেছেন, ‘‘আমি খুবই খুশি যে আমাদের গোটা দল এখানে এসে পৌঁছতে পেরেছি। দলটা অক্ষুণ রাখতে পেরেছি আমরা। সত্যি বলতে এই মুহূর্তে আমার কাছে ফুটবল প্রাধান্য পাচ্ছে না। দেশে শান্তি ফিরে আসুক এটাই আমি সবার প্রথম চাইছি।’’ দলের কয়েক জন সদস্য অবশ্য সঙ্গে নেই। তাঁরা ইউক্রেনের জাতীয় মহিলা দলের শিবিরে রয়েছেন। জাতীয় শিবিরে থাকা সতীর্থদের সঙ্গে আবার কবে দেখা হবে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন মোজগা।
নিরাপত্তার স্বার্থে ক্লাব কর্তারা প্রথমে ক্রিভি রি-র একটি হোটেলে রাখেন দলকে। সেখানেই দু’সপ্তাহ কার্যত বন্দি অবস্থায় কেটেছে এফসি ক্রিভবাসের কোচ, ফুটবলারদের। ওই অবস্থায় তাঁরা যোগাযোগ করেন বর্তমানে জার্মানির বাসিন্দা ক্লাবের পুরুষ দলের এক প্রাক্তন ফুটবলারের সঙ্গে। তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। যোগাযোগ হয় এফসি কোলন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। বিপদের সময় পাশে দাঁড়িয়েছে জার্মান ক্লাবটি।
প্রথম কয়েক দিন জার্মান ক্লাবটির আতিথেয়তায় থাকার পর এখন কোলনের একটি হোটেলে রয়েছে এফসি ক্রিভবাসের গোটা দল। হোটেলটি ইউক্রেনীয় উদ্বাস্তুদের আশ্রয় স্থল হিসেবে পরিণত করা হয়েছে। অনুশীলনের জন্য এফসি কোলন তাদের সমস্ত অত্যাধুনিক পরিকাঠামো ব্যবহার করতে দিচ্ছে ইউক্রেনের দলটিকে।
দেশ ছাড়ার সময় ইউক্রেনের মহিলাদের লিগে তৃতীয় স্থানে ছিল এফসি ক্রিভবাস। লিগ আবার কবে শুরু হবে তা অনিশ্চিত বর্তমান পরিস্থিতিতে। দলের কোচ চাইছেন অনুশীলনের যে উন্নত পরিকাঠামোর সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন, তা কাজে লাগিয়ে দলকে ভাল ভাবে তৈরি করতে। কিন্তু দেশের এই দুর্দিনে কি আর ফুটবলে মন বসে! দলের অধিনায়ক আনা ইভানোভা বলেছেন, ‘‘জার্মানির এই জীবন মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে যখন আমাদের পরিবার ইউক্রেনে ভয়ঙ্কর বিপদের মধ্যে রয়েছে।