মেসি, রোনাল্ডোদের মতো ব্যস্ত কে? ফাইল ছবি
বিশ্বকাপের মঞ্চে সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ কে? অনেকেই লিয়োনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বা কিলিয়ান এমবাপের নাম করবেন। দেশের হয়ে সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রতি ম্যাচে এবং অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করছেন তাঁরা। প্রত্যেকেরই পাখির চোখ ট্রফি। তবে এঁরা কেউই নন, বিশ্বকাপে সবচেয়ে ব্যস্ত ব্যক্তির নাম আহমেদ আলসানাউই। তাঁর সঙ্গে ফুটবলের কোনও যোগাযোগ নেই। কিন্তু ফুটবলারদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। পেশায় তিনি বিশেষজ্ঞ নাপিত। অর্থাৎ চুল কাটায় সিদ্ধহস্ত। তাঁর কাছে চুল কাটান, এমন ফুটবলারদের নাম শুনলে চমকে উঠতে হবে।
কে নেই সেই তালিকায়। এমবাপে, করিম বেঞ্জেমা, আর্লিং হালান্ড, পল পোগবা, এদেন অ্যাজার, জ্যাক গ্রিলিশ, ফিল ফোডেন— তারকার ছড়াছড়ি। কতটা ব্যস্ত তিনি সেটা একটা ঘটনার উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। লন্ডন থেকে সম্প্রতি ৭ ঘণ্টার বিমানযাত্রা করে দোহায় নামেন আহমেদ। প্রাতরাশ করেই ইংল্যান্ড শিবিরে ছুটে যান। বিকেলে ট্যাক্সিতে এক ঘণ্টা চেপে চলে যান ডেনমার্ক শিবিরে। রাত দুটোর সময় শেষ হয় তাঁর কাজ। মাঝের এই সময়টায় অন্তত ২৭ জন ফুটবলারের চুলের কারুকাজ করেছেন তিনি। দোহা থেকে সকাল ৭টার বিমান ধরে ফিরে যান লন্ডন। তবে আবার দোহায় আসার কথা রয়েছে তাঁর। সে বার দু’-তিন দিন থাকতে পারেন। এতটাই ব্যস্ত, যে বিশ্বকাপে এ বার এক দিনের বেশি সময় দিতে পারেননি।
আহমেদের জন্ম বাগদাদে। ন’বছর বয়সে চলে আসেন লন্ডনে। চুলের সাজসজ্জা নিয়ে বিশেষ কোর্স করেছেন তিনি। এর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে পোগবার অনুরোধে গিয়েছিলেন তিনি। গোটা প্রতিযোগিতায় চার বার পোগবার চুলের সাজ বদলে দেন। এ বার ইংল্যান্ড শিবিরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর। গ্রিলিশের চুলের স্টাইল করেছেন ‘টাইটানিক’ সিনেমার মুখ্য চরিত্র জ্যাকের আদলে। ফোডেন আবার আলাদা ধরনের চুলের ছাঁট চেয়েছিলেন। তিনটি রেখার সাহায্যে আলাদা ধরনের ছাঁট করে দিয়েছেন তিনি।
চুল নিয়ে আলাদা করে মনোযোগ দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। লিয়োনেল মেসির এই নিয়ে বিশেষ শখ নেই। কিন্তু অনেক ফুটবলারকেই চুলের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে দেখা যায়? কেন ফুটবলাররা এত চুলের সাজ নিয়ে আগ্রহী? আহমেদ বলেছেন, “পুরোটাই আত্মবিশ্বাস। চুলের সাজ একটা মানুষের ব্যক্তিত্ব বদলে দিতে পারে। মাঠে নামার সময় সে অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে নামে। নিজের সম্পর্কে একটা ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। সমর্থকরা প্রশংসা করলে তা আরও বাড়ে।”
ম্যাচের শেষের দিকে ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়লেও চুলের সাজের কোনও বদল হয় না। কী ভাবে এটা সম্ভব? ‘রহস্য’ ফাঁস করতে চাননি আহমেদ। তবে জানিয়েছেন, নতুন একটি জিনিস তৈরি করতে চান তিনি। চুলে লাগালে তাতে সুগন্ধির মতোই গন্ধ বেরোবে।
ফুটবলারদের সঙ্গে খুবই ভাল সম্পর্ক আহমেদের। নিজে চেলসির সমর্থক। চেলসির ফুটবলারদের সঙ্গেও সম্পর্ক খুবই ভাল। তবে এখন পড়শি ক্লাবগুলির ফুটবলারদের মধ্যেও তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তিনি জানিয়েছেন, পোগবা ব্যাপক মজা করতে পারেন। এমবাপে গল্প করতে পারদর্শী। চুল কাটার মাঝেই অনেক কথা হয়। তার মধ্যে ব্যক্তিগত কথাও রয়েছে।