ব্রাজিলের কোচ তিতের সঙ্গে নেমার। দলের প্রধান ফুটবলারকে নিয়ে উদ্বেগে তিতে। —ফাইল চিত্র
এ বারের বিশ্বকাপে কি আর খেলতে পারবেন নেমার? না কি এ বারের মতো বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেল তাঁর? গত দু’দিন ধরে এই প্রশ্নই ঘুরছে ব্রাজিল সমর্থকদের মনে। অবশেষে নেমারের চোট নিয়ে মুখ খুললেন দলের কোচ তিতে। তবে খুব বেশি আশার কথা শোনাতে পারলেন না তিনি।
তিতে জানিয়েছেন, তিনি আশাবাদী যে নেমার আবার দলে ফিরবেন। ব্রাজিলের আর এক ফুটবলার দানিলোও চোট পেয়েছেন। তিনিও চোট সারিয়ে ফিরবেন বলে আশা করছেন তিতে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি চিকিৎসক নই। বিশেষজ্ঞও নই। তবে আমি বিশ্বাস করি চোট সারিয়ে নেমার ও দানিলো দলে ফিরবে। আবার ব্রাজিলের হয়ে খেলবে ওরা।’’
ব্রাজিলের রিজার্ভ বেঞ্চ যথেষ্ট শক্তিশালী। নেমার খেলতে না পারলে পরিবর্ত ফুটবলার রয়েছে তিতের হাতে। তবে নেমারের বিকল্প নেই বলেই জানিয়েছেন ব্রাজিল কোচ। বলেছেন, ‘‘নেমারের মতো ফুটবলাররা মাঠে অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে পারে। নেমার আমাদের জন্য কী করেছে তা সবাই জানে। ওর বিকল্প পাওয়া কঠিন।’’
চোট সারাতে নেমার ২৪ ঘণ্টা ফিজিয়োর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলে তাঁর সতীর্থ মারকুইনোস। তিনি বলেছেন, ‘‘নেমার ২৪ ঘণ্টা ফিজিয়োর সঙ্গে থাকছে। এটা থেকেই প্রমাণিত ও দলে ফিরতে কতটা মরিয়া। আমরা জানি না নেমার কবে ফিরতে পারবে। তবে আমরা চাইব দ্রুত সুস্থ হয়ে ও মাঠে নামুক।’’
চোট সারানোর মাঝেই দলের সঙ্গে যাতে নেমাররা সময় কাটান সে দিকে নজর রাখছেন তিতে। সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগে রবিবার ব্রাজিলের অনুশীলনে তিনি জোর করে নেমার ও দানিলোকে পাঠিয়েছেন। নেমার মাঠে থাকলে সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সেটা জানেন তিতে। তাই এই কাজ করেছেন তিনি।
২৪ নভেম্বর সার্বিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে চোট পান নেমার। সেই ম্যাচের ৮০ মিনিটে মাঠ ছাড়ার সময় তাঁর চোখে জল দেখা গিয়েছিল। মুখে ছিল যন্ত্রণা এবং হতাশার ছাপ। তাঁর দেওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে ডান পায়ের গোড়ালি বেশ ফুলে রয়েছে। রয়েছে যন্ত্রণা। ঠিক মতো পা ফেলতে পারছেন না। বিশেষ ধরনের ব্যান্ডেজ বেধে রেখেছেন পায়ে। যদিও তাঁর মুখ কিছুটা প্রত্যয়ী।
নেমার গোড়ালির পরিস্থিতি নিয়ে নিজের নতুন পোস্টে কিছু লেখেননি। তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার তিনি লিখেছিলেন, “ব্রাজিলের জার্সি পরার গর্ব এবং ভালবাসা বোঝানো সম্ভব নয়। আমাকে যদি ঈশ্বর জিজ্ঞেস করেন কোন দেশে জন্ম নিতে চাও, আমি বলব ব্রাজিল। আমি জীবনে কিছু সহজে পেয়ে গিয়েছি, এমন নয়। আমাকে সব সময় নিজের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যের দিকে দৌড়তে হয়েছে। কখনও কারও খারাপ চাইনি। সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। আমার জীবনের আরও একটা কঠিন সময়। আবার একটা বিশ্বকাপেই চোট পেলাম। হ্যাঁ, চোট রয়েছে আমার। কষ্ট হচ্ছে। ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে আমার। সেই চেষ্টা আমি করব। দেশ, সতীর্থ এবং নিজের জন্য ফিরে আসতে হবে। আমাকে এই ভাবে মারার জন্য শত্রুদের খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। আমি ঈশ্বরের পুত্র, তাঁর উপর বিশ্বাস আছে আমার।”