FIFA World Cup 2022

হ্যারি কেনরা গোঁ ধরে বসেছিলেন, নির্বাসিত হতে পারত ইংল্যান্ড, কী ভাবে সামলানো হয়েছিল?

ফিফার নির্দেশের পরেও ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন হ্যারি কেন। জানতে পেরে ফিফার পাঁচ কর্তা ছুটে এসেছিলেন। তাঁদের আচরণকে নজিরবিহীন অভিনয় বলছে ইংল্যান্ড।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১৬:২৯
Share:

ফিফার নির্দেশের প্রতিবাদে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের আর্চ সাত রঙের আলোয় সাজিয়েছে ইংল্যান্ড। ছবি: টুইটার।

সাত রঙের ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরে মাঠে নামলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফিফার এই নির্দেশ প্রথম মানতে চাননি ক্ষুব্ধ হ্যারি কেন। ইংল্যান্ডের ফুটবল কর্তারা তাঁকে শান্ত করেন। ফিফার নির্দেশের বিরুদ্ধে অন্য ভাবে প্রতিবাদ জানাল ইংল্যান্ড।

Advertisement

শুক্রবার আমেরিকার বিরুদ্ধে ম্যাচেও ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরতে পারেননি হ্যারি কেন। ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরে হ্যারি কেন যাতে মাঠে না নামেন, তা নিশ্চিত করতে এক জন বা দু’জন নয়, ফিফার পাঁচ জন কর্তা ছুটে এসেছিলেন ইংল্যান্ড শিবিরে। কারণ ফিফার নির্দেশের পরেও ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন হ্যারি কেন। তাঁকে নিরস্ত্র করতে ইংল্যান্ড শিবিরে গিয়ে ফিফা কর্তারা হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ। ফিফার এই আচরণের প্রতিবাদে শুক্রবার ম্যাচের সময় ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের উপরে থাকা ধাতব আর্চ সাত রঙের আলোয় সাজানো হল। ম্যাচের সময় সারাক্ষণ জ্বলল সেই আলো।

কেমন শাস্তি দেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি ফিফার তরফে। হ্যারি কেনকে ব্যক্তিগত ভাবে জরিমানা বা নির্বাসিত করা হবে, না গোটা দলকেই জরিমানা বা নির্বাসিত করা হবে, সে সব কিছুই বলা হয়নি। ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত পয়েন্ট কেড়ে নিয়েও শাস্তি দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আর্থিক জরিমানা নিয়ে তেমন চিন্তিত ছিলেন না হ্যারি কেন। চিন্তা ছিল না ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনেরও। নির্বাসন বা পয়েন্ট কেটে নেওয়ার শাস্তি নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়।

Advertisement

মানবতা, সমানাধিকারের স্বার্থে ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী পরে মাঠে নামার ব্যাপারে অনড় ছিলেন হ্যারি কেন। ঝুঁকির কথা বলেও তাঁর সুর নরম করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে আসরে নামতে হয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বড় কর্তাদের। যদিও তাঁরাও ফিফার নির্দেশ এবং আচরণে যথেষ্টই বিরক্ত ছিলেন। প্রশ্ন ওঠে, ফিফা ক্ষমতা প্রয়োগ করে কাতারের আইন এ ভাবে তাদের উপর চাপিয়ে দিতে পারে কিনা। কিন্তু সুর নরম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের সঙ্গে সমঝোতা করতে চাননি।

ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সিইও মার্ক বুলিংহ্যাম বলেছেন, ‘‘আমরা চাইনি ফুটবলারদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন বিঘ্নিত করতে। ওরা স্বপ্নটা নিয়েই বড় হয়। ছোট থেকে এই একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখেই কঠোর পরিশ্রম করে। নিজেদের তৈরি করে। হঠাৎ একটা কারণে ওরা বিশ্বকাপের আসরে নির্বাসিত হোক বা ওদের স্বপ্নের পথে বাধা তৈরি হোক সেটা আমরা চাইনি।’’ ফিফা থেকে কী বলা হয়েছিল? বুলিংহ্যাম বলেছেন, ‘‘ঠিক কী শাস্তি দেওয়া হবে, তা জানানো হয়নি। যদিও ফিফার কর্তারা আমাদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। হয়তো দলের সকলকেই শাস্তির মুখে পড়তে হত।’’

ফিফার আচরণ এবং ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ গোপন করেননি বুলিংহ্যাম। তিনি বলেছেন, ‘‘ফিফার প্রতিনিধিরা নজিরবিহীন অভিনয় করছিলেন। আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। ওঁদের আচরণে আমরা অত্যন্ত বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। এতটা হতাশ হতে হবে আমরা ভাবিনি। ফিফা আচরণ অত্যন্ত বিরক্তিকর।’’ ফিফা দাবি করে, সমাজের উন্নতি এবং ভালর জন্য ফুটবল। অথচ সমানাধিকারের প্রশ্নে ফিফার আচরণ সেই দাবিকেই নস্যাৎ করে দিয়েছে বলে মনে করছেন ইংল্যান্ডের ফুটবল কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement