মহিলাদের সমানাধিকারের দাবি তুললেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত ইরানের সমর্থকরা। ছবি: রয়টার্স
কাতারে ইরান-আমেরিকা ম্যাচের পরে স্টেডিয়ামের বাইরে সংঘর্ষে জড়ান ইরানের দু’পক্ষের সমর্থকরা। সেই সংঘর্ষের ছবি তুলে বিপাকে এক সাংবাদিক। তাঁকে আটক করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ডেনমার্কের এক টেলিভিশনের সাংবাদিক র্যাসমাস টানথোল্ড ইরান ও আমেরিকার খেলা চলাকালীন মাঠে ছিলেন। খেলা শেষে মাঠের বাইরে ইরানের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তাতে অনেকে আহত হন। আহতদের মধ্যে মহিলারাও ছিলেন। সেই ছবি তোলেন র্যাসমাস। তার পরেই সেখানে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা তাঁকে আটক করেন।
আটক হওয়ার কথা টুইটারে লেখেন র্যাসমাস। বলেন, ‘‘ইরানের সমর্থকদের সংঘর্ষের ছবি তোলায় কাতারের পুলিশ আমাকে আটক করেছে।’’ ১৩ মিনিট পরে আরও একটি টুইট করেন র্যাসমাস। বলেন, ‘‘এই মাত্র আমাকে ছাড়ল পুলিশ। তারা আমাকে ছবি মুছে ফেলতে বলে। কিন্তু আমি সেটা করিনি।’’ পরে নিজের তোলা কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন র্যাসমাস।
ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক মাস ধরেই বিদ্রোহ করছেন সে দেশের অনেক মানুষ। মহিলাদের সমানাধিকারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। তার মাঝেই সেপ্টেম্বর মাসে মাহসা আমিনির মৃত্যু আগুনে ঘি ঢেলেছে। সেপ্টেম্বর মাসে হিজাব না পরায় ইরানের পুলিশ গ্রেফতার করে মাহসাকে। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশের বিরুদ্ধে মাহসাকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। শুরু হয় বিক্ষোভ। কঠোর ভাবে সেই বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে পুলিশ। সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত শিশু-সহ ৩০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
ইরানের ম্যাচে মাঠেও দেখা গিয়েছে প্রতিবাদ। প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীত গাননি দলের ফুটবলাররা। স্টেডিয়ামে মাহসার নামে ব্যানারও দেখা যায়। তাঁর মৃত্যুর ন্যায়বিচার চাওয়া হয়। মহিলাদের অধিকার ও স্বাধীনতার দাবি লেখা শার্ট পরে স্টেডিয়ামে আসেন ইরানের অনেক সমর্থক। মাঠেই তাঁদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান সরকারের সমর্থনে থাকা দর্শকরা। পরে মাঠের বাইরে সেই বিবাদ সংঘর্ষের চেহারা নেয়।
বিশ্বকাপে আমেরিকার কাছে হেরে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার আগেই ছিটকে গিয়েছে ইরান। খেলা শেষে সে দেশের বাসিন্দাদের উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে। তাঁরা রাস্তায় নেমে নাচ-গানের মাধ্যমে উল্লাস করেছেন। পুড়িয়েছেন বাজি। সরকারের বিরোধিতা করার জন্যই এই উল্লাস করেছেন তাঁরা।