FIFA World Cup 2022

স্ট্রাইকার হওয়ার কথাই ছিল না, রোনাল্ডোর পরিবর্তে নেমে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক র‍্যামোসের

র‍্যামোস জায়গা পেয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জায়গায়। তাঁকে বসিয়ে রাখেন পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো স্যান্টোস। তিনি ৭৩ মিনিটের মাথায় মাঠে নামান রোনাল্ডোকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৩৮
Share:

পর্তুগালের ঘরোয়া লিগে বেনফিকার হয়ে খেলেন র‍্যামোস। ছবি: রয়টার্স

গনসালো র‍্যামোস নাকি স্ট্রাইকারই নন! হ্যাঁ, তিনি স্ট্রাইকার হিসাবে ফুটবল খেলা শুরু করেননি। কিন্তু তাঁর স্ট্রাইকার হওয়া এবং মঙ্গলবার বিশ্বকাপে নামার মধ্যে একটা মিল রয়েছে। অন্যের পরিবর্ত হিসাবেই মাঠে নেমেছিলেন তিনি। সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জায়গায় প্রথম একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন র‍্যামোস। অ্যাকাডেমিতেও এমনই হয়েছিল। এক জন অসুস্থ থাকায় তাঁর জায়গায় স্ট্রাইকার হিসাবে খেলতে নেমে দু’গোল করেন র‍্যামোস। তার পর থেকে স্ট্রাইকার হিসাবেই পরিচিত হয়ে যান তিনি।

Advertisement

পর্তুগালের ঘরোয়া লিগে বেনফিকার হয়ে খেলেন র‍্যামোস। ২০১৩ সালে তিনি যখন এই ক্লাবে আসেন, তখন তাঁর বয়স ১২ বছর। ২০১৯ সালে বেনফিকার ‘বি’ দলে সুযোগ পান র‍্যামোস। পরের বছরই সিনিয়র দলে সুযোগ পেয়ে যান তিনি। সিনিয়র দলের হয়ে ঘরোয়া লিগে ৪৫টি ম্যাচে ২০টি গোল করেছেন র‍্যামোস। পর্তুগালের হয়ে তাঁর অভিষেক হয় এই বছরের ১৭ নভেম্বর। নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে খেলেন তিনি। সেই ম্যাচে গোলও করেন র‍্যামোস।

মঙ্গলবার রাতে হ্যাটট্রিক করেন। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে ১৯৯০ সালের পর এটাই প্রথম হ্যাটট্রিক। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব এর আগে ছিল মিরোস্লাভ ক্লোজের। যিনি ২০০২ সালে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন। ম্যাচ শেষে র‍্যামোস বলেন, “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে, নকআউট পর্বে প্রথম একাদশে থাকব।”

Advertisement

র‍্যামোস জায়গা পেয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জায়গায়। রোনাল্ডোকে বসিয়ে দেন পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো স্যান্টোস। তিনি ৭৩ মিনিটের মাথায় মাঠে নামান রোনাল্ডোকে। পর্তুগালের তারকা ফুটবলারকে বেঞ্চে বসে থাকতে হলেও তিনি দলের পাশে ছিলেন বলেই জানিয়েছেন র‍্যামোস। পর্তুগালকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে তিনি বলেন, “রোনাল্ডোর বেঞ্চে বসা নিয়ে দলে কোনও কথা হয়নি। দলের অধিনায়ক হিসাবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আমাদের যে ভাবে সাহায্য করত, সে ভাবেই করেছে। শুধু আমাকে নয়, গোটা দলকে উজ্জীবিত করেছে ও।”

বুধবার ১৭ মিনিটের মাথায় গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন র‍্যামোস। থ্রো থেকে বক্সের মধ্যে র‍্যামোসকে পাস দেন জোয়াও ফেলিক্স। প্রথম পোস্টে থাকা গোলরক্ষকের পাস দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন র‍্যামোস। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন গোলরক্ষক। ৫১ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে ডান প্রান্ত ধরে ওঠেন দিয়োগো দালত। তিনি ক্রস রাখেন বক্সে। বাঁ পায়ের টোকায় গোলরক্ষকের পায়ের তলা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন র‍্যামোস। ৬৭ মিনিটের মাথায় নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন র‍্যামোস। নিজেদের মধ্যে বল খেলে বক্সের মধ্যে তাঁর দিকে বল বাড়ান ফের্নান্দেস। আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথায় উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন র‍্যামোস।

এই বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া হত না র‍্যামোসের। সেখানেও তিনি বদলি ফুটবলার। লিভারপুলের দিয়োগো জোটা চোট পেয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় সুযোগ পান র‍্যামোস। প্রথম একাদশে জায়গা পাবেন ভাবেননি। রোনাল্ডোকে যদি নকআউট পর্বের ম্যাচে না বসানো হত, তা হলে হয়তো সুযোগ আসত না র‍্যামোসের সামনে। কিন্তু সুযোগ আসে তাঁর সামনে। সেই সুযোগ তিনি প্রতি বার কাজেও লাগান। অনূর্ধ্ব-১৯ ইউরো কাপে খেলার সময় র‍্যামোস বলেছিলেন, “আমি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপিয়ান লিগ, বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতা জিততে চাই।” সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন র‍্যামোস। চেষ্টা করছেন। রোনাল্ডোর জুতোয় পা গলিয়ে বিশ্বের কাছে একটি ম্যাচেই নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন। এ বার লড়াই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement