মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার হার এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন। ছবি: রয়টার্স
প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হার। মেসির আর্জেন্টিনার এই হার যদিও বিশ্ব ফুটবলে প্রথম অঘটন নয়। আগেও বহু বার এমন অঘটন ঘটেছে ফুটবল বিশ্বকাপে। সৌদির কাছে ১-২ গোলে হারের মতো এর আগে ১৯৯০ সালেও ক্যামেরুনের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা।
মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার হার এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন। ১৯৯০ সালে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ০-১ গোলে হেরেছিল দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্টিনা। সে বছর ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। নীল-সাদা সমর্থকেরা মঙ্গলবারের হারের পর আশা করতেই পারেন যে আবার ফিরে আসবে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখা যাবে মেসিদের।
১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপে রোমানিয়ার হারকেও অঘটন হিসাবে দেখা হয়। সেই সময় কিউবার বিরুদ্ধে ১-২ গোলে হেরেছিল রোমানিয়া। সে বছর কিউবার বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার কথাই ছিল না। মেক্সিকো সরে যাওয়ায় জায়গা পায় কিউবা। কেউ ভাবেনি যে তারা একটা গোলও করতে পারবে। কিন্তু রোমানিয়াকে হারিয়েই দেয় তারা।
১৯৫০ সালে ইংল্যান্ড হেরে যায় আমেরিকার কাছে। টানা সাতটি ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল আমেরিকা। সেই সাতটি ম্যাচে ৪৫টি গোল খেয়েছিল তারা। দিয়েছিল মাত্র দু’টি গোল। ইংল্যান্ডের ফুটবলাররাও সহজ ভাবে নিয়ে ফেলেছিলেন ম্যাচটিকে। যদিও সে বারের বিশ্বকাপে ওই একটা ম্যাচই জিতেছিল আমেরিকা। বোঝাই যায় যে কতটা অঘটন ছিল সেই ম্যাচ।
১৯৬৬ সালে কোরিয়ার কাছে হেরে যায় ইটালি। উত্তর কোরিয়া এবং ইটালি কেউ ভুলতে পারবে না পাক ডু ইক নামটা। ৪২ মিনিটের মাথায় গোল করেন পাক ডু। বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটন এই ম্যাচ। শক্তিশালী ইটালির বিরুদ্ধে এশিয়ার কোনও দল জয় তুলে নেবে, তা ভাবাই যায়নি। কাজটা করে দেখিয়েছিলেন পাক ডু-রা।
১৯৭৪ সালে পূর্ব জার্মানি হারিয়ে দেয় পশ্চিম জার্মানিকে। ১-০ গোলে জেতে পূর্ব জার্মানি। সে বছর বিশ্বকাপ জিতেছিল পশ্চিম জার্মানি। কিন্তু একটি হার কাঁটা হয়ে রইল তাদের জন্য। রাজনৈতিক কারণেও সেই হার বড় ক্ষত হয়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপ জয়ের পরেও।
১৯৮২ সালের দু’টি ম্যাচকে অঘটন হিসাবে ধরা হয়। প্রথমটি অবশ্যই আলজিরিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিম জার্মানির হার। সেই ম্যাচে ১-২ গোলে হেরে যায় পশ্চিম জার্মানি। প্রথম বার বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিল আলজিরিয়া। কেউ ভাবতেই পারেনি যে পশ্চিম জার্মানি এই ম্যাচ হেরে যাবে। হাজার জনের মধ্যে এক জন ভেবেছিল আলজেরিয়া জিতবে। তিন জনের মধ্যে এক জন বলছিল পশ্চিম জার্মানি জিতবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে হেরে যায় তারা। সেই বছর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড হারিয়ে দিয়েছিল স্পেনকে। শেষ ৩০ মিনিট ১০ জনে খেলেছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু তাতেও গোল শোধ করতে পারেনি স্পেন। সে বছর প্রথম রাউন্ডে একটি ম্যাচও হারেনি আয়ারল্যান্ড। ০-১ গোলে হেরেছিল আয়ারল্যান্ড।
১৯৯৪ সালে বুলগেরিয়া হারিয়ে দিয়েছিল জার্মানিকে। ১-২ গোলে হেরে যায় তারা। লোথার ম্যাথুসের দল পেনাল্টিতে গোল পেয়েছিল। সেই গোল শোধ করে জয়ের গোল করে বুলগেরিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ম্যাচ হেরে বিদায় নেয় জার্মানি।
২০০২ সালের দু’টি ম্যাচকে অঘটন হিসাবে ধরা হয়। তার মধ্যে সেনেগালের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের হার অন্যতম। ১-০ গোলে হেরে যায় তারা। ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। চার বছর পর বিশ্বকাপ খেলতে নেমে সেই দেশ হেরে যায় সেনেগালের কাছে। সেটাই বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ ছিল ফ্রান্সের। অন্য একটি ম্যাচে কোরিয়া হারিয়ে দেয় ইটালিকে। সে বার বিশ্বকাপ ছিল কোরিয়াতেই। ঘরের মাঠে ইটালিকে ২ গোল দিয়েছিল তারা। ইটালি প্রথমে একটি গোল করেছিল। পরে কোরিয়া দু’টি গোল দেয়। সেই হারে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যায় ইটালি।