হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পেলে। সেখান থেকেই টুইট করে নেমারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। —ফাইল চিত্র
হাসপাতাল থেকে ব্রাজিল দলকে শুভেচ্ছা জানালেন পেলে। তিনি আরও জানিয়েছেন, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নেমারদের খেলা দেখবেন।
সোমবার ভারতীয় সময় রাত ১২৩০ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে খেলতে নামছে ব্রাজিল। তার আগেই টুইট করেন পেলে। সঙ্গে দেন ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের একটি ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় সতীর্থের সঙ্গে হাঁটছেন তিনি। ক্যাপশনে পেলে লেখেন, ‘‘১৯৫৮ সালে আমি রাস্তায় হাঁটার সময় ভাবতাম কী ভাবে বাবাকে দেওয়া কথা রাখব। আমি জানি, তোমাদের মধ্যেও অনেকে নিজেদের বাবাকে দেওয়া কথা রাখতে চাও। কথা রেখ।’’ এখানেই থেমে থাকেননি পেলে। তিনি আরও লেখেন, ‘‘আমি হাসপাতালে শুয়ে তোমাদের জন্য গলা ফাটাব। শুভেচ্ছা রইল।’’
শনিবার ব্রাজিলের একটি সংবাদপত্র জানিয়েছিল, পেলের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক। প্যালিয়াটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে ব্রাজিলের হয়ে তিন বার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারকে। কিন্তু তাঁর মেয়ে ফ্লাবিয়া নাসিমেন্টো জানিয়েছেন, পেলের শারীরিক অবস্থা মোটেও অতি সঙ্কটজনক নয়। অসুস্থ হলেও স্থিতিশীল রয়েছেন তিনি। পেলের অসুস্থতা নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
পেলের শারীরিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে গ্লোবে টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্লাবিয়া বলেছেন, ‘‘অনেকে বলছেন বাবা মৃত্যুমুখে রয়েছেন। তাঁকে রাখা হয়েছে ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’-এ। যাঁরা এই খবর প্রচার করছেন, তাঁরা ঠিক করছেন না। আমাদের বিশ্বাস করুন। পরিস্থিতি একদমই তেমন নয়।’’ পেলের শারীরিক পরিস্থিতি অতি সঙ্কটজনক বলে শনিবার ব্রাজিলের সংবাদপত্র ‘ফোলহা ডে সাও পাওলো’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তা নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন পেলের পরিবারের কোনও সদস্য। এই ধরনের সংবাদ পরিবেশনকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছেন ফ্লাবিয়া।
প্রকাশিত খবরে অসন্তুষ্ট পেলের আর এক মেয়ে কেলিও। তিনি জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ আগে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন পেলে। তার পর থেকে তাঁর শ্বাস নেওয়ার সমস্যা হচ্ছে। কেলি বলেছেন, ‘‘বাবা অসুস্থ। ওঁর বয়স হয়েছে। এখন শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা চলছে। একটু ভাল হলেই বাড়ি ফিরবেন। আপাতত কয়েক দিন বাবাকে হাসপাতালে থাকতে হবে।’’
রবিবার হাসপাতালের রিপোর্টের ছবি দিয়ে পেলে নিজেও ইনস্টাগ্রামে অনুরাগীদের আশ্বস্ত করেন। তিনি লেখেন, ‘‘আমার বন্ধুরা, সকলকে শান্ত এবং ইতিবাচক রাখতে চাই। আমি শক্তিশালীই রয়েছি। যথেষ্ট আশাবাদী আমি। যথাযথ ভাবেই চিকিৎসা চলছে। আমার সব চিকিৎসক এবং নার্সদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ওঁরা খুব যত্ন করছেন আমাকে।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘ঈশ্বরের উপর আমার প্রচুর আস্থা রয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে ভালবাসা মাখানো অসংখ্য বার্তা আমাকে প্রাণশক্তিতে ভরপুর করে রেখেছে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের দিকে তাকিয়ে রয়েছি আমি।’’
সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, পেলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ৮২ বছরের ফুটবলার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির কোনও অবনতি হয়নি। ফ্লাবিয়া অস্বীকার করলেও হাসপাতালের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছিল, পেলেকে রাখা হয়েছে ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’-এ।