এ ভাবেই জাপানের একের পর এক পেনাল্টি বাঁচালেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। ছবি: রয়টার্স
শট মারতে এগিয়ে যাচ্ছেন মিনামিনো। গোলপোস্টের মাঝে দাঁড়িয়ে ৬ ফুট ২ ইঞ্চির ডমিনিক লিভাকোভিচ। মিনামিনো বলে শট মারার মুহূর্তেই নিজের বাঁ দিকে ঝাঁপালেন। বল আটকে গেল তাঁর হাতে। এক বার নয়, তিন বার এই কাজ করলেন তিনি। তাঁর হাতেই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল ক্রোয়েশিয়া। দেশের হয়ে অভিষেকে টাইব্রেকারে হয়েছিলেন খলনায়ক। সেই লিভাকোভিচই এখন ক্রোয়েশিয়ার নায়ক।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জাপানের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ে ১-১ শেষ হয় খেলা। অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে জাপানের চারটি পেনাল্টির মধ্যে তিনটি বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ। এক বার নিজের বাঁ দিকে ও দু’বার ডানদিকে ঝাঁপান তিনি। টাইব্রেকারে লিভাকোভিচের চোখেমুখে আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ছিল। তেকাঠির নীচে তাঁর একের পর এক পেনাল্টি বাঁচানো দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কতটা দক্ষ তিনি।
পরিবারের সবাই শিক্ষিত। বাবা দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী। ঠাকুরদা চিকিৎসক, ঠাকুমা শিক্ষক। কিন্তু লিভাকোভিচ ছোট থেকেই ফুটবলের ভক্ত। ইকের ক্যাসিয়াস, ড্যানিয়েল সুবাসিচ তাঁর আদর্শ। পরিবার অবশ্য সব সময় পাশে থেকেছেন লিভাকোভিচের। স্বপ্ন পূরণে তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন বাবা, মা।
তবে জাতীয় দলের জার্সিতে কেরিয়ারের শুরুটা ভাল হয়নি লিভাকোভিচের। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রথম ক্রোয়েশিয়া শিবিরে ডাক পান তিনি। পরের বছর চিন কাপে চিলির বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তাঁর। সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে বেশ কিছু ভুল করেছিলেন তিনি। তাঁর বগলের তলা দিয়ে বল গোলে চলে গিয়েছিল। লিভাকোভিচের ভুলে ম্যাচ হারে ক্রোয়েশিয়া। সেই গোলরক্ষকই এ বার হয়ে উঠলেন দেশের নায়ক।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপেও দলের সঙ্গে ছিলেন লিভাকোভিচ। কিন্তু নিয়মিত সুযোগ পেতেন না। লভ্রে কালিনিচের খারাপ ফর্মের জন্য ২০২০ সালের ইউরো কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক হয়ে যান তিনি। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ছিলেন সুবাসিচ। তিনি সে বার টাইব্রেকারে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনালে দলকে জিতিয়েছিলেন তিনি। সেই কাজ এ বার করলেন তাঁকে আদর্শ মেনে চলা লিভাকোভিচ।