সান্ত্বনা দিতে আসা পেরিসিচের ছেলে লিয়োনার্দোকে কাছে টেনে নিলেন নেমার। ছবি: টুইটার।
ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর মাঠেই ভেঙে পড়েন নেমার। তখন তিনি শিশুর মতো কাঁদছিলেন। সতীর্থরা সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন তাঁকে। সে সময়ই দৌড়তে দৌড়তে তাঁর দিকে এগিয়ে যায় দু’টি শিশু। গায়ে তাদের ক্রোয়েশিয়ার জার্সি।
মাঠের মাঝখানে দানি আলভেজ়ের কাঁধে মাথা রেখে তখন কাঁদছিলেন নেমার। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় বিদ্ধ সতীর্থকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন আলভেজ়। তাঁদের কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন ব্রাজিল দলের দুই নিরাপত্তাকর্মী। শিশু দু’টিকে নেমারের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে তাদের আটকান নিরাপত্তাকর্মীরা। মেয়েটি একটু দূরে দাঁড়িয়ে গেলেও, ছেলেটি সাহস করে আরও একটু কাছে চলে যায়। খানিকটা দূর থেকেই ডাকে নেমারকে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন নেমার। নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা দিতে বারণ করেন।
ছেলেটি আসলে পরাজিত নায়ককে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিল। সে ক্রোয়েশিয়ার হলেও, তার প্রিয় ফুটবলার নেমার। তাই পরাজয়ের পর দেশের ব্যবধান মুছে সে পৌঁছে গিয়েছিল নেমারের কাছে। নেমারও তাকে বুকে জড়িয়ে নেন। কপালে চুম্বন করেন। কড়া নিরাপত্তার এড়িয়ে ছেলেটি কী ভাবে পৌঁছে গেল নেমারের কাছে? এই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ফুটবলারদের পরিবারের সদস্যদের মাঠের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল আনন্দে সামিল হওয়ার জন্য তখনই শিশুটি মাঠে ঢোকে। তার বাবার নাম ইভান পেরিসিচ। ব্রাজিলকে হারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার অভিজ্ঞ ফুটবলার। ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ তৈরির অন্যতম কারিগর পেরিসিচের ছেলে লিয়োনার্দো নেমারের ভক্ত। মাঠের মাঝখানে নিজের প্রিয় ফুটবলারকে কাঁদতে দেখে সে এগিয়ে যায়। নেমারও সৌজন্যের খামতি রাখেননি। প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারের সন্তানকে কাছে টেনে নেন। টান টান লড়াইয়ের শেষে এক অন্য রকম মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন ফুটবলপ্রেমীরা। উল্লেখ্য, ম্যাচ শেষে পেরিসিচও সান্ত্বনা জানিয়ে যান হতাশ নেমারকে।