ব্রাজিলের সদ্য প্রাক্তন কোচ তিতেকে নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা জানালেন নেমার। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিল ছিটকে যাওয়ার পরেই ইস্তফা দিয়েছেন কোচ তিতে। ২০১৬ থেকে ব্রাজিলের জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন। পর পর দুটো বিশ্বকাপে দায়িত্বে থেকেও ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি পৌঁছে দিতে পারেননি। তবু তিতেকেই সেরা কোচ বেছে নিলেন নেমার।
কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হবে ভাবেননি নেমার। গোড়ালির চোটের জন্য গ্রুপের দু’টি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। চোট সারিয়ে মাঠে নেমে পড়েছিলেন বিশ্বকাপে। উড়িয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপে আর খেলতে না পারার জল্পনা। কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই শেষে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন নেমার। জাতীয় দলের কোচের বিদায় বেলাতেও আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না।
সমাজমাধ্যমে পোস্টে তিতের সঙ্গে নিজের ছবি দিয়েছেন নেমার। তিনি লিখেছেন, ‘‘আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা হওয়ার আগে অনেক বার আপনার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছি। বলতে বাধা নেই, আপনাকে দেখে আমার খুব বিরক্তিকর মানুষ বলেই মনে হত। কারণ আপনি আমাকে আটকানোর জন্য একাধিক ফুটবলারকে ব্যবহার করতেন। যারা আমাকে সারাক্ষণ ঘিরে রাখত। আপনি আমাকে হারানোর জন্য সব রকম চেষ্টা করতেন এবং আমার সম্পর্কে অসত্যও বলতেন! কিন্তু ভাগ্য কী হাস্যকর। তাই না? অথচ কোচ হয়ে আসার পর সেই আপনিই আমাকে নিজের দলের ১০ নম্বর হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন।’’
ব্রাজিলের কোচ হিসাবেও তিতের প্রশংসা করেছেন নেমার। বিদায়ী কোচ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি জানি আপনি এক জন দারুণ কোচ। আমি এটাও জানি আপনি তার থেকেও অনেক বেশি ভাল এক জন মানুষ। দেখা হওয়ার আগেই আমার সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল আপনার। সেটা আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি আপনাকে সব কিছুর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। প্রায় সব কিছুই শিখিয়েছেন আমাদের।’’
নেমার আরও লিখেছেন, ‘‘আপনি আমার দেখা অন্যতম সেরা কোচ। সব সময়ই আপনি আমার সেরা কোচদের এক জন থাকবেন। আমি আপনাকে ধরে রাখতে চাই। একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ছিল। এমন অনেক মুহূর্তও কাটিয়েছি যেগুলো আমাদের কষ্ট দিয়েছে। তার শেষটা আমাদের দীর্ঘ দিন কষ্ট দেবে। আপনি বিশ্বকাপের সঙ্গে সেরা কোচের মুকুট পাওয়ার যোগ্য। আমরা যা যা করেছি, সব কিছুর জন্যই এটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমাদের সব থেকে বড় স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য সব কিছু ত্যাগ করেছিলাম আমরা। হয়তো ঈশ্বর চাননি আমরা এই ভাবে অর্জন করি। ধৈর্য রাখুন।’’
ব্রাজিলের জাতীয় দলের ফুটবলারদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন তিতে। ২০১৬ সালে প্রথম কোনও জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ পান তিনি। তার আগে ব্রাজিলের বাইরে এক মাত্র সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে দু’দফায় দু’টি দলকে ১০ মাস প্রশিক্ষণ দেন। ব্রাজিলের জাতীয় দলকে নিজের মতো করে তৈরি করেছিলেন লুই ফিলিপে স্কোলারির ছাত্র।