এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেল মরক্কো। বেলজিয়ামকে হারিয়ে উচ্ছ্বাস সে দেশের ফুটবলারদের। ছবি: রয়টার্স
এ বারের ফুটবল বিশ্বকাপে আবার অঘটন। গ্রুপ এফ-এর খেলায় মরক্কোর কাছে ০-২ গোলে হেরে গেল বেলজিয়াম। দ্বিতীয়ার্ধে মরক্কোর হয়ে গোল দু’টি করেন আব্দেলহামিদ সাবিরি ও জাকারিয়া আবৌখলাল। প্রথমার্ধে মরক্কোর একটি গোল বাতিল হয়। নইলে লজ্জা আরও বাড়ত বেলজিয়ামের।
কানাডার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কোনও রকমে জিতেছিল বেলজিয়াম। জয়ের পরে দলের অন্যতম প্রধান ফুটবলার কেভিন দ্য ব্রুইন জানিয়েছিলেন, নিজেদের খেলায় খুশি নন তিনি। মরক্কোর বিরুদ্ধে নামার আগে আর একটি বোমা ফাটান তিনি। জানান, এ বারের বিশ্বকাপ জেতার দাবিদার নন তাঁরা। কারণ হিসাবে দলের ফুটবলারদের বয়স তুলে আনেন দ্য ব্রুইন। মরক্কোর বিরুদ্ধে সেই ছবিটাই দেখা গেল। আফ্রিকার দেশের গতির কাছে হার মানতে হল বেলজিয়ামকে।
কানাডার বিরুদ্ধে পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক হয়ে উঠেছিলেন দলের গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়া। কিন্তু মরক্কোর বিরুদ্ধে তিন বার পরাস্ত হলেন তিনি। এক বার ভার প্রযুক্তির সাহায্যে রেফারি গোল বাতিল করেন। ধারে-ভারে মরক্কো অনেক পিছনে থাকলেও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে তারা। বার বার চাপে পড়ে যাচ্ছিল বেলজিয়ামের রক্ষণ। প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটে অনেক আক্রমণ করেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি মরক্কো।
তবে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ফ্রিকিক থেকে গোল করে মরক্কো। বাঁ পায়ে ফ্রিকিক নিতে যান হাকিম জিয়েচ। তাঁর শট সরাসরি বেলজিয়ামের গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়াকে পরাস্ত করে গোলে চলে যায়। মরক্কোর ফুটবলাররা উল্লাস শুরু করেন। কিন্তু তার পরেই ভার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই গোল বাতিল করেন রেফারি।
যে মুহূর্তে হাকিম ফ্রিকিক নেন, সেই মুহূর্তে অফসাইডের ফাঁদে পড়েন দলের আর এক ফুটবলার রোমাইন সাইস। তিনি হেডে গোল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল তাঁর মাথায় লাগেনি। তার পরেও অফসাইডের কারণ বাতিল করা হয়েছে সেই গোল। কারণ, যে মুহূর্তে বল কুর্তোয়ার কাছে পৌঁছয় সেই সময় সাইস তাঁর চোখের সামনে ছিলেন। ফলে ঠিক ভাবে সেই বল দেখতে পাননি কুর্তোয়া। সেই কারণে বাতিল করা হয়েছে গোল। ফ্রিকিকের সময় সাইস অনসাইডে থাকলে অবশ্য গোল বাতিল হত না। তিনি অফসাইডে থাকায় খেসারত দিতে হয় দলকে।
দ্বিতীয়ার্ধে একই ভাবে ফ্রিকিক থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন সাবিরি। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে বল গোলে রাখেন তিনি। আবার সাইস বলের দিকে যান। কিন্তু এ বার আর তিনি অফসাইডে ছিলেন না। তাই কুর্তোয়ার সামনে গেলেও সমস্যা হয়নি। বল দেখতে না পেয়ে গোল খেয়ে যান কুর্তোয়া। গোল খাওয়ার পরে গোল শোধ করার অনেক চেষ্টা করে। অলআউট আক্রমণে ওঠে তারা। ফলে প্রতি-আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ বেশি পায় মরক্কো। সেটাই কাজে লাগায় তারা।
অতিরিক্ত সময়ে মরক্কোর হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন জাকারিয়া। আর ম্যাচে ফেরার সুযোগ ছিল না বেলজিয়ামের। এই ম্যাচের পরে গ্রুপ এফ-এর শীর্ষে মরক্কো। তাদের পয়েন্ট ৪। দ্বিতীয় স্থানে বেলজিয়ামের পয়েন্ট ৩। ক্রোয়েশিয়া তৃতীয় স্থানে। তাদের পয়েন্ট ১। তবে একটি ম্যাচ কম খেলেছে তারা। রবিবার কানাডার বিরুদ্ধে খেলবে তারা। কানাডাকে তারা হারালে গ্রুপে তিন নম্বরে নেমে যাবে বেলজিয়াম।