আর্জেন্টিনায় বাসের ছাদে বসে উৎসব করছেন লিয়োনেল মেসিরা। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনায় ফিরে হুডখোলা বাসে চেপে উৎসব করতে গিয়ে প্রায় পড়েই যাচ্ছিলেন মেসিরা। কোনও রকমে রক্ষা পান তাঁরা। না হলে বড় বিপদ হতে পারত। এই ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে।
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে মেসিদের জন্য হুডখোলা বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। বিমান থেকে নেমে সোজা বাসে গিয়ে ওঠেন আর্জেন্টিনার ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফরা। বাসের একটু উঁচু জায়গায় বসেছিলেন মেসি, দি মারিয়া, দি পল, ওটামেন্ডি ও পারেদেস। বাস কিছু দূর যাওয়ার পরে হঠাৎই বিদ্যুতের একটি তার মেসিদের সামনে চলে আসে। সেই তারে লাগলে বড় বিপদ হতে পারত। মেসিরা পড়েও যেতে পারতেন। কোনও রকমে শেষ মুহূর্তে মাথা ঝুঁকিয়ে নেন মেসিরা। সেটা করতে গিয়েও পড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল। কোনও রকমে পরিস্থিতি সামলান তাঁরা।
এই ঘটনার ভিডিয়ো সামনে এসেছে। সব থেকে বেশি বিপদ হতে পারত পারেদেসের। কারণ, তিনি একদম ধারে ছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে পারলেও নিজের টুপি বাঁচাতে পারেননি তিনি। তারে লেগে সেই টুপি নীচে পড়ে যায়। এই ঘটনায় রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকরা চিৎকার করে ওঠেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও বিপত্তি হয়নি।
মঙ্গলবার ভোরে রোম থেকে মেসিদের বিমান নামে বুয়েনস আইরেসের ইজেইজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। আগে থেকেই বিমানবন্দর ও তার বাইরে ভিড় জমেছিল। বিমান থেকে প্রথমেই বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নেমে আসেন মেসি ও দলের কোচ স্কালোনি। তার পরে বাকি ফুটবলাররা নামেন।
আর্জেন্টিনার বিমান কখন বুয়েনস আইরেসে নামবে তার দিকে নজর ছিল সে দেশের মানুষের। স্থানীয় এক সংবাদপত্র জানিয়েছে, ১ লক্ষ ৭৬ হাজার মানুষ অ্যাপের মাধ্যমে বিমানের অবতরণের দিকে নজর রেখেছিলেন। বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করছিল বিশেষ বাস। সেখানে লেখা ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’। সেই বাসে করে বিমানবন্দরের বাইরে বার হন মেসিরা।
রাস্তার দু’ধারে তখন কাতারে কাতারে মানুষ। সুসজ্জিত বাসে চেপে বিমানবন্দর থেকে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের দফতরে যান মেসিরা। প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে লাগে ১ ঘণ্টা। পুরো রাস্তায় মেসির হাতে ছিল বিশ্বকাপ। বাকিরা তাঁকে ঘিরে গাইছিলেন। আনন্দে উদ্বেল হচ্ছিল জনতা।
তবে মেসির সঙ্গে ফেরেনি তাঁর পরিবার। বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষ হওয়ার পরে মেসিরা বিমান ধরার আগেই দেশে ফেরার বিমান ধরে মেসির পরিবার। তিন সন্তান মাতেও, থিয়াগো ও সিরোকে নিয়ে মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো ও মা সিলিয়া মারিয়়া সোজা ফেরেন রোজ়ারিয়োতে। এই শহরেই জন্মেছেন মেসি ও আন্তোনেল্লা। সেখানেই থাকেন তাঁরা। সোমবার বিকালে গাড়ি থেকে সেখানে নামে মেসির পরিবার।