সৌজন্য: ম্যাচের পরে হাকিমিকে জড়িয়ে ধরলেন এমবাপে। ফাইল চিত্র
মাঠের দ্বৈরথে তিনি হারিয়ে দিয়েছেন বন্ধুকে। কিন্তু সেই ফলাফলের গণ্ডিতে নিজেকে বেঁধে রাখতে রাজি নন ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে। ম্যাচের পরেই এগিয়ে যান প্যারিস সঁ জরমঁ সতীর্থ আশরাফ হাকিমির দিকে। সামান্য কিছু কথাবার্তা, জার্সি বদল এবং তার পরে সেই জার্সি পরে সারা মাঠে দৌড়ের ছবিটা নিমেষে পাল্টে দিয়েছে আবহ।
মরক্কোর লড়াইয়ে যে সারা বিশ্ব গর্বিত, ম্যাচের পরে তা জানান এমবাপে। মরক্কোর হারের পরে হাকিমিকে জড়িয়ে ধরেন। দু’জনে জার্সি বদল করেন। হাকিমি-সহ মরক্কোর সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে হাত মেলান। পরে তাঁর সঙ্গে হাকিমির ছবি দিয়ে টুইট করেন, ‘‘বন্ধু, দুঃখ পেয়ো না। তোমরা যা করেছো সে জন্য সকলে গর্বিত। তোমরা ইতিহাস গড়েছো।’’
ম্যাচের আগেও এমবাপের আচরণ সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। ওয়ার্ম আপের সময় হঠাৎ তাঁর একটা শট উড়ে গ্যালারিতে গিয়ে লাগে এক সমর্থকের মুখে। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন তিনি। এর পরেই দেখা যায় ফেন্সিং টপকে গ্যালারিতে চলে এসেছেন এমবাপে। চলে যান আহতের কাছে। খোঁজ নেন, চোট কতটা গুরুতর। বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে, এমবাপে সেই ভক্তের কাঁধে হাত রেখে উদ্বিগ্ন মুখে তাকিয়ে আছেন। তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।
ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপে মরক্কোর স্বপ্নের দৌড় শেষ হয়ে গেলেও হার মানছেন না কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুই। বলছেন, ‘‘বিশ্বকাপ জিততে খুব উঁচু স্তরে নিজেদের উন্নীত করতে হবে। তবে আমরা খুব দূরেও নেই।’’
ইতিহাস গড়ে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল মরক্কো। ফ্রান্সের কাছে হেরে ফাইনালের যাত্রাপথে দাঁড়ি পড়ে গেলেও দলকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন কোচ রেগ্রাগুই। ম্যাচের পরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি। সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’ তবে তাঁরা যে লড়াই ছাড়বেন না, তা জানিয়ে জিয়েশ, হাকিমিদের কোচ বলেন, ‘‘অঘটন ঘটিয়ে বিশ্বকাপ জয় হয় না। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আমরা সেটাই করে চলব।’’ জানিয়ে দেন, তিন নম্বর জায়গা পেতে তাঁর সিংহেরা ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তৈরি।
মরক্কোর প্রশংসা শোনা গিয়েছে ম্যাচ দেখতে উপস্থিত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র মুখেও। মরক্কোর ড্রেসিংরুমে গিয়ে তিনি জানান, তাঁর চোখে এই বিশ্বকাপের সেরা মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাত। টাইব্রেকারে পেনাল্টি বাঁচিয়ে নজর কেড়েছেন গোলকিপার ইয়াসিন বোনো। বিশ্বকাপে দেখে বোনোকে নেওয়ার জন্য আসরে নেমেছে বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাব।