বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দেখা গেল এই ছবি। সমর্থক পেল না প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ। ছবি: গেটি ইমেজ
ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে তখন খেলছে আয়োজক দেশ কাতার, অথচ গ্যালারিতে দেখা যাচ্ছে ফাঁকা দর্শকাসন। হলটা কী? প্রথমার্ধের শেষে দেখা গেল গ্যালারি অর্ধেক ফাঁকা। খেলা যত গড়াল, তত লাল জার্সিধারীদের সমর্থক কমল। মাঠের এক দিকে উল্লাস করলেন কয়েক হাজার ইকুয়েডর সমর্থক। কিন্তু কেন প্রথম ম্যাচেই আয়োজক দেশের দর্শক এত কম? কাতারের খারাপ খেলাই কি তার একমাত্র কারণ? না কি পিছনে অন্য কারণও রয়েছে?
বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম আয়োজক দেশ হিসাবে উদ্বোধনী ম্যাচ হেরেছে কাতার। প্রথম ১০ মিনিটেই বোঝা গিয়েছিল, কী হতে চলেছে। প্রথমার্ধে ২-০ এগিয়ে যায় ইকুয়েডর। ম্যাচে হার নিশ্চিত জেনে গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেন কাতারের দর্শকরা। মাঠে খেলা দেখতে যাওয়া এক দর্শক জানিয়েছেন, বিরতিতে প্রায় ১৫,০০০ দর্শক স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান। দলের হার মেনে নিতে পারছিলেন না তাঁরা।
গ্যালারি ফাঁকা হওয়ার আর একটি কারণ হিসাবে উঠে আসছে চরম অব্যবস্থা। সংবাদপত্র ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, বিশেষ অতিথিদের মাঠে বসার ব্যবস্থা করতে গিয়ে সাধারণ দর্শকদের দিকে নজর দেননি আয়োজকরা। মাঠে ঢোকার একটি প্রবেশপথ বন্ধ রাখা হয়েছিল। ফলে রাস্তায় ট্রাফিক স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। খেলা শুরু হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক দর্শক মাঠেই ঢোকেননি। তার ফলে শুরু থেকেই অনেক আসন ফাঁকা ছিল।
খেলা শুরুর আড়াই মিনিটের মাথায় আয়োজক দেশের জালে বল জড়িয়ে দিয়েছিলেন এন্নার ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু অফসাইডের জন্য সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। তাতে যদিও খুব অসুবিধা হয়নি ইকুয়েডরের। ভ্যালেন্সিয়া গোটা ম্যাচে আরও দু’বার জালে বল জড়ালেন হলুদ জার্সিধারিদের হয়ে। এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের নায়ক হয়ে রইলেন ভ্যালেন্সিয়া। ইকুয়েডরের অধিনায়ক প্রথম গোলটি করেন পেনাল্টি থেকে। ১৬ মিনিটের মাথায়। পরের গোলটি করেন হেডে। সেটি করেন ৩১ মিনিটে। প্রথমার্ধেই কাতারকে পিছনে ফেলে দেয় ইকুয়েডর। গোটা ম্যাচেই হলুদ জার্সিধারিদের দাপট ছিল। দাপট ছিল ভ্যালেন্সিয়ার। তিনি ইকুয়েডরের সব থেকে বেশি গোলের মালিক। বিশ্বকাপেও পাঁচটি গোল করে ফেললেন তিনি। সেটাও দেশের হয়ে সব থেকে বেশি গোল।
৩৩ বছরের ভ্যালেন্সিয়া ইকুয়েডরের সেরা স্ট্রাইকারদের মধ্যে অন্যতম। দেশের হয়ে ৭৫টি ম্যাচে ৩৭টি গোল করে ফেলেছেন তিনি। এর মধ্যে দু’টি এল রবিবার। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আয়োজক দেশ কখনও প্রথম ম্যাচে হারেনি। কাতার হারল। ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে তাদের যাবতীয় লড়াই প্রথমার্ধেই শেষ করে দিয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। আর ম্যাচ যত গড়াল তত ফাঁকা হল স্টেডিয়াম।