১০ বছর আগে মেসির সঙ্গে কিশোর আলভারেস (বাঁ দিকে), ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে মেসি-আলভারেসের উল্লাস। —ফাইল চিত্র
এক জনের বয়স ৩৫। নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন। আর একটা ম্যাচ খেলেই ‘অলবিদা’ জানাবেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁকে আর দেখা যাবে কি না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
অন্য জন সবে ২২। এ বারই বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে আবির্ভাব হয়েছে তাঁর। আর প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। তাঁকে বলা হচ্ছে আর্জেন্টিনার নতুন নায়ক। এক জনের বিদায় মঞ্চে আবির্ভাব হচ্ছে আর এক জনের। নিঃশব্দে ব্যাটনের হাতবদল হয়ে যাচ্ছে। প্রবীণকে কাঁধে নিয়ে বিশ্বকাপের বৈতরণী পার করাতে বদ্ধপরিকর নবীন।
প্রথম জন লিয়োনেল মেসি। আকাশি-সাদা জার্সিধারীদের ভরসা। কোটি কোটি সমর্থক চান, এ বার বিশ্বকাপ উঠুক তাঁর হাতে। আর সেই স্বপ্নপূরণে মেসি পাশে পেয়েছেন ইউলিয়ান আলভারেসকে। মেসির ভক্ত তিনি। ১০ বছর আগে এক বার ছুঁতে পেরেছিলেন নিজের স্বপ্নের ফুটবলারকে। তখন আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-১৩ দলে খেলেন আলভারেস। ছবি তুলেছিলেন মেসির পাশে দাঁড়িয়ে। মেসি সে দিন হাত রেখেছিলেন আলভারেসের নরম কাঁধে। আলভারেস এখন মেসির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে বিস্ময় গোলের পরে আলভারেসের কাঁধে উঠে পড়েছিলেন মেসি। নরম কাঁধ যে এখন শক্ত। দুই ফুটবলারের ১০ বছর আগে-পরের কোলাজ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব জুড়ে।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মেসি-আলভারেস যুগলবন্দিতে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। তিনটি গোলই এসেছে এই দু’জনের পায়ে। প্রথম ক্ষেত্রে বক্সের মধ্যে আলভারেসকে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। গোল করেন মেসি। দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রে প্রতি-আক্রমণ শুরু হয়েছিল মেসির পা থেকেই। তাঁর কাছ থেকে বল পেয়ে প্রায় ৫০ গজ দৌড়ে বিস্ময় গোল করেছেন আলভারেস।
দলের তৃতীয় গোলও আলভারেসের। তবে সেই গোলের ক্ষেত্রে মেসির কৃতিত্ব কম নয়। সাইডলাইনের কাছে বল ধরে ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে গোলের দিকে ছুটে যান মেসি। বক্সে ঢুকে অরক্ষিত আলভারেসকে বল বাড়ান। গোল করতে ভুল করেননি তরুণ স্ট্রাইকার।
আলভারেসকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত আর্জেন্টিনার কোচ লিয়োনেল স্কালোনি। তিনি বলেছেন, ‘‘আলভারেস খুব ভাল খেলেছে। শুধু দুটো গোল করেছে বলে নয়, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের মাঝমাঠ শক্তিশালী করতে বড় ভূমিকা নিয়েছে। গোটা মাঠ জুড়ে খেলেছে। ওর খেলা দলকে ভরসা দিয়েছে।’’