কাতারে বিশ্বকাপ নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ফুটবলপ্রেমীরা। ছবি: টুইটার।
এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ফুটবলপ্রেমীরা আশঙ্কায় রয়েছেন। রক্ষণশীল কাতারের আইনই তাঁদের আশঙ্কার কারণ। কাতার বিশ্বকাপের আয়োজকরা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ফুটবলপ্রেমীদের নিশ্চিন্তে এবং নিরাপদে বিশ্বকাপ উপভোগের াশ্বাস দিলেও সংশয় কাটছে না।
কাতার প্রশাসন কখন কী নির্দেশ জারি করে এই ভেবেই আশঙ্কায় ভুগছেন এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ফুটবলপ্রেমীরা। বিশ্বকাপ শুরুর আগে শনিবার প্রথাগত ভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। সেখানেও উঠল এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ। সকলকে আশ্বস্ত করে ফিফা সভাপতি বলেছেন, ‘‘আজ নিজেকে কাতারের মানুষ মনে হচ্ছে। আজ নিজেকে আরবের মানুষ মনে হচ্ছে। আজ নিজেকে গে মনে হচ্ছে। আজ নিজেকে বিশেষ ভাবে সক্ষম মনে হচ্ছে। আজ নিজেকে অনেকটা ভবঘুরের মতো মনে হচ্ছে। আজ নিজেকে অনেকটা পরিযায়ী শ্রমিকের মতো মনে হচ্ছে। এক সঙ্গে নিজেকে এত কিছু মনে হচ্ছে কারণ, এ সবই আমাকে ব্যক্তিগত কিছু স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।’’
ফিফা সভাপতি নিজেকে আশঙ্কায় থাকা ফুটবলপ্রেমীদের সঙ্গে একই আসনে বসাতে চেয়েছেন। বোঝাতে চেয়েছেন তাঁদের উদ্বেগ অনুভব করার কথা। একই সঙ্গে তাঁদের নিশ্চিন্তে বিশ্বকাপ উপভোগের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজের অতীতের প্রসঙ্গে তুলে ইনফান্তিনো বলেছেন, কী ভাবে তিনি সুইৎজারল্যান্ডে অভিবাসী শ্রমিকের সন্তান হিসাবে বেড়ে উঠেছেন। লাল চুল এবং ঝুঁটি থাকার জন্য তাঁকে কেমন বকুনি খেতে হয়েছিল।
পরে যদিও বলেছেন, ‘‘আমি অবশ্যই কাতারের মানুষ নই। আরবের মানুষ নই। আমি আফ্রিকার মানুষও না। আমি গে বা বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিও না। তবে এ সব কিছুই আমি অনুভব করতে পারি। কারণ আমি জানি বৈষম্য কী জিনিস। তার কী অর্থ। অন্য দেশের মাটিতে এক জন বিদেশিকে কেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।’’ কাতারের আইন অনুযায়ী এলজিবিটিকিউ শাস্তি যোগ্য অপরাধ। যা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
ফিফা সভাপতিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়, আপনি সত্যিই সমকামী হলে এ ভাবে কি কথাগুলো বলতে পারতেন? এই সময় ইনফান্তিনোকে থামিয়ে ফিফার ডিরেক্টর অফ মিডিয়া রিলেশনস ব্রায়ান সোয়ানসন বলেন, ‘‘ফিফায় যোগদান করার পর থেকে ইনফান্তিনোর অনেক সমালোচনা দেখছি। বিশেষ করে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের দিক থেকে। কাতারের প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের কোনও সমস্যা হবে না। আয়োজকরা সকলকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ইনফান্তিনো সমকামী নন। কিন্তু তিনি সত্যিই এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য আন্তরিক ভাবে ভাবেন। সে জন্যই কাতার প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলে আশ্বাস আদায় করে নিয়েছেন।’’
এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ফুটবলপ্রেমীরা সত্যিই নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বিশ্বকাপ উপভোগ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কা অবশ্য থাকছেই। ফিফা সভাপতির বক্তব্য তাঁদের সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত করতে পারছে না। তাঁদের সব থেকে ভয় কাতারের রক্ষণশীল রাজ পরিবারকে।