হারের পর আবেগঘন পোস্ট নেমারের। ছবি: রয়টার্স
শুক্রবার ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিশ্বকাপে শেষ হয়ে গিয়েছে ব্রাজিলের অভিযান। অতিরিক্ত সময়ে দারুণ গোল করার পরেও দলের হার দেখেছেন নেমার। ম্যাচের পর তাঁকে দেখা যায় কাঁদতে। শনিবার সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ একটি পোস্টের সাহায্যে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করলেন নেমার।
ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার লিখেছেন, “আমি মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। এই ম্যাচে হারের পর সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি। প্রায় ১০ মিনিট অসাড় হয়ে বসেছিলাম। তার পরে এমন কান্না পেয়েছিল, যা কিছুতেই থামছিল না। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক দিন ধরে এই হার দুঃখ দেবে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি। তাই জন্যে সতীর্থদের প্রতি আমি গর্বিত। দায়বদ্ধতার কোনও খামতি ছিল না আমাদের মধ্যে।”
নেমারের সংযোজন, “এই দলটা বিশ্বকাপ জেতার যোগ্য ছিল। ব্রাজিল জেতার যোগ্য ছিল। তবে ঈশ্বরের বোধহয় এমন ইচ্ছা ছিল না। আমরা সবাই কতটা আত্মত্যাগ করেছি সেটা হয়তো এখন বলে বোঝানো যাবে না।”
শেষে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেমার। লিখেছেন, “জাতীয় দলকে সমর্থন করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। দুর্ভাগ্যবশত ট্রফি জিততে পারিনি, যেটা অনেক, অনেক দিন ধরে দুঃখে দেবে। আমাদের খেলা দেখা দেখার জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।”
শুক্রবার ম্যাচের পর একা একা বসেছিলেন নেমার। কিছু ক্ষণ পরেই ভেঙে পড়েন কান্নায়। সামলানোই যাচ্ছিল না ব্রাজিলের এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলারকে। ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেন দানি আলভেস। ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে খেলেননি। ৩৯ বছর বয়স তাঁর। এটাই ছিল শেষ বিশ্বকাপ। দাদা হিসাবে ভাইকে যে ভাবে সান্ত্বনা দেওয়ার দরকার, সেটাই করছিলেন। কাঁধে টেনে নিয়েছিলেন নেমারের মাথা। বুকে-পিঠে হাত বুলিয়ে নানা ভাবে চেষ্টা করছিলেন নেমারকে শান্ত করার। কিন্তু বৃথাই সেই প্রচেষ্টা। ৩১ বছরের নেমারের কাছেও তো সময় কমে আসছে। কে বলতে পারে এটা তাঁরও শেষ বিশ্বকাপ নয়। কাপ নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন মরিয়া হয়েই। আরও এক বার ঠোক্কর খেতে হল শেষ আটে এসে।
মাঠের আর এক প্রান্তে দেখা গিয়েছিল রদ্রিগোকে। হাউ হাউ করে কাঁদছিলেন। টাইব্রেকারে তাঁর মারা প্রথম শটটাই আটকে গিয়েছিল। তাতে আত্মবিশ্বাস আরও তলানিতে চলে গিয়েছিল ব্রাজিলের। সতীর্থদের সঙ্গে আনন্দ উৎসব করার ফাঁকে ছুটে এসেছিলেন লুকা মদ্রিচ। দু’জনে একসঙ্গে খেলেন স্পেনের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে। রদ্রিগোকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দেন শেষ বিশ্বকাপ খেলা মদ্রিচও। থামানো যাচ্ছিল না অ্যান্টনি এবং রাফিনহাকেও।