— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নতুন সহ-সভাপতি মুরারি লাল লোহিয়া চান, ক্লাবের অ্যাকাডেমি হোক এবং ভাল ফুটবলার উঠে আসুক। এটাও জানালেন, বিনিয়োগকারী ইমামি গ্রুপ টাকা দিলেও কিছুটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেই শূন্যস্থানটা তিনি ভরাট করতে চান।
তিনি আদ্যোপান্ত ব্যবসায়ী। কিন্তু ফুটবলের, বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলের খবর রাখেন ভাল মতোই। গত কয়েক বছরে ক্লাবের সাফল্য ঠিক মতো না থাকার দরুণ তিনি প্রস্তাব পাওয়ামাত্র রাজি হয়েছেন ক্লাবের কাজের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে। দীর্ঘ দিন থেকেই ওঁর ইচ্ছা ছিল, ব্যবসাটাকে দাঁড় করিয়েই ক্লাবের জন্য কাজ করবেন।
কলকাতার ‘জুপিটার ওয়াগন্স’ সংস্থার কর্ণধার মুরারি লাল লোহিয়া সম্প্রতি ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়েছেন। ব্যবসায়ী সত্তা ছাড়াও তাঁর ফুটবলের প্রতি প্রেম আছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে বিনিয়োগ করতেও তিনি আগ্রহী। দরকারে ক্লাবের পাশে থাকতে চান। ক্লাবের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে শুক্রবার তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “পল্টু বাবু (ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন সচিব পল্টু দাস) যখন ছিলেন, তখন থেকে আমি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। সেটা সত্তরের দশকের কথা। তখন কোনও ফুটবলারকে সই করাতে হলে যদি কোনো আর্থিক সমস্যা হতো, সেটা ১০ হাজার টাকা হোক বা ৫০ হাজার টাকা, আমি সেই মতো টাকা দিয়ে ফুটবলারকে সই করাতাম। সালটা ঠিক মনে নেই, সনৎ শেঠ গোলকিপার ছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে এরিয়ানের খেলায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তখন থেকে আরও বেশি করে ইস্টবেঙ্গলের খেলার প্রেমে পড়ে যাই। নিয়মিত মাঠে যেতাম। বলরাম, রামবাহাদুর আমার খুব পছন্দের খেলোয়াড় ছিলেন। পল্টুর সঙ্গে আমার খুব বন্ধুত্ব ছিল। আমরা একে অপরের পরিপূরক ছিলাম। সরাসরি যুক্ত না থেকেও ক্লাবের বহু কাজ করতাম। দু’বার সহ-সভাপতিও হয়েছি। কিন্তু ব্যবসার কারণে ছেড়ে যেতে হয়েছে। এর মধ্যে পল্টুও চলে গেল। কিন্তু মাঠে কী হচ্ছে সেটার দিকে নজর রাখতাম। ব্যবসা এখন দাঁড়িয়ে যাওয়াতে আমি ফিরে এসেছি ক্লাবকে সময় দিতে।”
মুরারি লাল লোহিয়া। ছবি: এক্স।
মুরারি বাবুর সংযোজন, “সাম্প্রতিক কালে বুঝতে পারছিলাম ক্লাবের সাফল্যে ব্যাঘাত ঘটছে। কিছু একটা নিশ্চয়ই হচ্ছে। তাই প্রণবদা (দাশগুপ্ত), নিতুর (দেবব্রত সরকার) কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়া মাত্র আমি চলে এলা। তবে ধীরে ধীরে সব কিছু আবার বদলাতে হতে শুরু করেছে। এই তো আমরা সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হলাম। আগামী বছর আরও ভাল কিছু করা যায় কিনা সেই লক্ষ্যে দৌড়োবো। আমি শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, বাংলার ফুটবলের উন্নতি চাই। আমি সব সময় ক্লাবের সমস্ত কর্মযজ্ঞের পাশে আছি। যে জায়গায় ক্লাবের আমাকে দরকার হবে, পাশে থাকব।’’
বাঙালি ফুটবলার আরও বেশি সংখ্যায় দেখতে চাইছেন তিনি। তাই ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাডেমিতে বিনিয়োগে আগ্রহী। বলেছেন, “আমি চাই দেশি ফুটবলারেরা উঠে আসুক। তার জন্য একটা অ্যাকাডেমি দরকার। যদি আজ থেকে আট-দশ বছর পর দুটো-তিনটে ভাল ফুটবলার বেরোতে পারে তা হলেই আমাদের সাফল্য। আমরা এখন কোনও ফুটবলারকে চিনতে পারি না। বাঙালি ফুটবলার যাতে উঠে আসে তার জন্য বিনিয়োগ করতে চাই। বিদেশিরা কোনও দিন এখানকার ফুটবলের উন্নতি করতে পারবে না।”
গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সমস্যা বার বার দেখা গিয়েছে। প্রথমে কোয়েস, তার পরে শ্রী সিমেন্ট। তাঁর সঙ্গে সে রকম সমস্যা হলে কী ভাবে সামলাবেন? মুরারি বাবুর স্পষ্ট উত্তর, “সেটা আমি সামলে নেব। ইমামি বা শ্রী সিমেন্টের কর্তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে। ওদের সঙ্গে দরকার মতো কথা বলে নেব। যাতে একটা ভাল দল তৈরি হয়, তার জন্য নিজের থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করা দরকার সেটাই করব।”