ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। — ফাইল চিত্র।
মাসখানেক আগে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সেখানকার দল ওড়িশা এফসি-কে হারিয়ে সুপার কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। ঠিক ৩২ দিন পরে আবার একই মাঠে একই প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হচ্ছে তারা। তবে সেই ইস্টবেঙ্গল আর এই দলে অনেক তফাত। একে তো কয়েক জন ফুটবলার ক্লাব ছেড়ে গিয়েছেন। দলে নতুন ফুটবলার এসেছেন। তার উপর সাম্প্রতিক একের পর এক হারের ধাক্কায় বেসামাল লাল-হলুদ। আগের ম্যাচে তারা চেন্নাইয়িনকে হারালেও বৃহস্পতিবারের ম্যাচে তারা জোড়া ধাক্কার সামনে। কার্ড সমস্যায় ডাগআউটে থাকবেন না কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তেমনই রক্ষণে থাকছেন না হিজাজি মাহের।
পয়েন্ট তালিকার এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে তা হলে ইস্টবেঙ্গল কী করবে? রয় কৃষ্ণ, দিয়েগো মৌরিসিয়োদের কারা আটকাবেন? কুয়াদ্রাতের পরিবর্তে বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন সহকারী কোচ দিমাস দেলগাডো। তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসী। বলেছেন, “প্রধান কোচের না থাকার প্রভাব পড়বে না। আমাদের কাছে ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক। মরসুমের শুরু থেকে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। সবাই নিজেদের কাজটা জানে। আমরা ছেলেদের বুঝিয়ে দিয়েছি যে কী করতে হবে। ওরাও সব জানে। তাই আমাদের কাছে চিন্তার কিছু নেই।” তাঁর সংযোজন, “বড় দলের বিরুদ্ধে বরাবরই আমরা ভাল খেলেছি। চেষ্টা করেছি নিজেদের জাত চেনানোর। আমরা চোখে চোখ রেখে লড়াই করি। আগে ওদের বিরুদ্ধে যেমন লড়াই হয়েছে, এ বারও সে রকম লড়াই আশা করছি।”
ওড়িশা ম্যাচে সহজ লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মঙ্গলবারই সুপার কাপের ভিডিয়ো পোস্ট করে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ‘‘কিচ্ছু ভুলে যাইনি।’’ কৃষ্ণ, মৌরিসিয়ো ছাড়াও এই ম্যাচে ফিরছেন মাঝমাঠের অস্ত্র আহমেদ জাহু। রক্ষণে রয়েছেন মুর্তাদা ফল। ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ এ সবে মাথা ঘামাতে চাইলেন না। বলেছেন, “আমরা নিজেদের নিয়ে চিন্তা করছি। ওদের কথা কেন ভাবতে যাব? আমরা নিজেদের ফুটবলারদের নিয়ে ভাবছি। সেরা মানসিকতা এবং শারীরিক দক্ষতা নিয়ে যাতে নামতে পারি সেই চেষ্টাই করছি। ওদেরও উচিত আমাদের ভয় পাওয়া। আমাদের হাতে কী অস্ত্র রয়েছে সেটা ওদের দেখিয়ে দিয়েছি আগেই। আপাতত ওদের হারিয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়ারই চেষ্টা করছি।”
সোমবার সকালে অনুশীলন করেছে ইস্টবেঙ্গল। বিকেলেই উড়ে যাওয়ার কথা ভুবনেশ্বরে। অনুশীলনে দেখা যায়নি আগের ম্যাচের গোলদাতা নন্দকুমারকে। তিনি কি বৃহস্পতিবার প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন? দেলগাডো বলেছেন, “নন্দকুমার একটানা খেলে চলেছে। কিছুটা ক্লান্তও। ওর উপর যাতে বাড়তি চাপ না পড়ে তাই অনুশীলন করানো হয়নি। ফুটবলারদের শরীরের খেয়াল তো আমাদেরই রাখতে হবে। আমরা একটানা খেলে চলেছি। নন্দ ফিট আছে। কোনও সমস্যা নেই।”
অনুশীলনে ফিরেছেন জর্ডান এলসেও। কিন্তু আইএসএলে তাঁকে পাওয়া যাবে না। এলসেকে নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেছেন, “জর্ডান আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। ডুরান্ড কাপে ও দলের হয়ে ভাল খেলেছে। তাই ওকে আমরা আবার দলে নিয়েছি। আপাতত সাপোর্ট স্টাফেদের কাজ ওকে সুস্থ করে তোলা এবং আগামী দিনে ও আমাদের দলে কী ভূমিকা নেবে সেটা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া।”
সহকারী কোচের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন তরুণ সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “সিনিয়র দলে খেলতে পেরে খুশি। কোচেদের ধন্যবাদ আমার উপরে আস্থা রাখার জন্য। কলকাতা লিগে তিনটে গোল করেছিলাম। এখানেও নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছি। সিনিয়রদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি।”