দলকে স্বাগত জানাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ভিড় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার ভুবনেশ্বরে সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সোমবার বিকেলে কলকাতায় পৌঁছল ইস্টবেঙ্গল। বিমানবন্দরে অনেক আগে থেকেই জড়ো হয়েছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা। ক্লেটন সিলভা, নন্দকুমার, সল ক্রেসপোরা বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই তাঁদের নিয়ে উৎসব শুরু হয়।
দীর্ঘ ১২ বছর অপেক্ষার পর জাতীয় পর্যায়ে কোনও ট্রফি পেল ইস্টবেঙ্গল। ফলে লাল-হলুদ সমর্থকেরা আর আবেগ সামলাতে পারেননি। বিমানবন্দরের বাইরেটা কার্যত ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের দখলে চলে যায়। চারদিকে তখন শুধু লাল-হলুদ পতাকা, পোস্টার। বিমানবন্দর থেকে শুরু হয় ফুটবলারদের নিয়ে শোভাযাত্রা।
বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস লাল-হলুদ সমর্থকদের। —নিজস্ব চিত্র।
বিমানবন্দরে লাল-হলুদের বিমান নামে বিকেল ৩:৫৬এ। কোচ এবং ফুটবলারেরা বেরন সাড়ে ৪টের সময়। তাঁদের দেখামাত্র প্রবল চিৎকার শুরু হয়ে যায়। বিমানবন্দর থেকে ভিআইপি রোডের মুখ পর্যন্ত আসতে ৪০ মিনিট লেগে যায়। তখন ইস্টবেঙ্গল টিমবাসের সামনে প্রচুর বাইক আর গাড়ি। অধিকাংশই লাল-হলুদ পতাকায় মোড়া।
২০১২ সালে ফেডারেশন কাপের পর ২০২৪-এর সুপার কাপ। স্পেনের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের হাত ধরে রবিবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে লাল-হলুদে। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সেখানকারই ক্লাব ওড়িশা এফসি-কে অতিরিক্ত সময়ে ৩-২ গোলে হারিয়ে ট্রফি জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। প্রথমে পিছিয়ে পড়ে এবং নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষের কয়েক মুহূর্ত আগে গোল খেয়েও ঘুরে দাঁড়ায় তারা। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গোটা দল। নন্দকুমার, সাউল ক্রেসপো এবং ক্লেটন সিলভা গোল করেন। ওড়িশার গোলদাতা দিয়েগো মৌরিসিয়ো এবং আহমেদ জাহু।
১২ বছর ধরে জাতীয় পর্যায়ের কোনও ট্রফি ছিল না ইস্টবেঙ্গলের। অপেক্ষা করতে করতে সমর্থকেরাও এক সময় ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। নামীদামি কোচেরা আসা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য বদলাচ্ছিল না। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সমস্যা থাকায় পাওয়া যাচ্ছিল না ভাল মানের বিদেশিও। এ বার সবই যেন হয়েছে নিখুঁত পরিকল্পনা মেনে। মরসুমের শুরুতে কুয়াদ্রাতকে আনা। তাঁর পরামর্শ নিয়ে ভাল মানের বিদেশি আনা, দেশীয় ফুটবলারদের ট্রান্সফার ফি দিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া— এ সব কিছুরই ফলশ্রুতি ছিল ডুরান্ড কাপের ফাইনাল। সেই লক্ষ্য পূরণ না হলেও সুপার কাপ জিতে ইস্টবেঙ্গলের স্বপ্ন পূরণ হল।