ওড়িশার রয় কৃষ্ণের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমার (ডান দিকে)। ছবি: আইএসএল
ইস্টবেঙ্গল ০
ওড়িশা এফসি ০
ঘরের মাঠে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করল ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচে গোলশূন্য ড্র লাল-হলুদের। টানা চার ম্যাচে অপরাজিত তারা। শক্তিশালী ওড়িশাকে আটকে দেওয়ার জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেদের। পাশাপাশি রেফারির দু’টি সিদ্ধান্ত বিপক্ষে না গেলে এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাওয়ার কথা ইস্টবেঙ্গলের। দ্বিতীয়ার্ধে নিশ্চিত দু’টি পেনাল্টি পেল না ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের পর এই ম্যাচেও খলনায়ক সেই রেফারি।
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের ম্যাচে রেফারি রাহুল গুপ্তা একের পর এক লাল এবং হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন। এই ম্যাচের শেষের দিকে অন্তত দু’বার পেনাল্টি পেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের একেবারে শেষের দিকে ওড়িশার এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন। সেই বল লাগে তাঁরই সতীর্থ মুর্তাদা ফলের হাতে। রেফারি পেনাল্টি তো দেনইনি, উল্টে প্রতিবাদ করায় ইস্টবেঙ্গলের দুই ফুটবলারকে হলুদ কার্ড দেখান। ইনজুরি টাইমের খেলা চলাকালীন ওড়িশার বক্সে জেরি ফেলে দেন ইস্টবেঙ্গলের এক ফুটবলারকে। সেটাও পেনাল্টি দেওয়া হয়নি।
খেলার শুরু থেকে প্রাধান্য ছিল ওড়িশারই। প্রথম দিকে দু’টি সুযোগ পেয়েছিলেন ইসাক ভানলালরুয়াতফেলা। প্রথমে বক্সের বাইরে থেকে তাঁর একটি শট আটকে দেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল। এর পর লালচুংনুঙ্গার ভুলে একটি বল পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই শটও বাঁচিয়ে দেন প্রভসুখন। ১৪ মিনিটের মাথায় ওড়িশার এক ফুটবলারের লম্বা বল ভেসে এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের বক্সে। প্রভসুখন সেটি ধরতে পারেননি। বল কর্নার হয় এবং কর্নার থেকে আহমেদ জাহুর শট বাইরে চলে যায়।
ইস্টবেঙ্গল প্রথম ভাল সুযোগ পেয়েছিল ১৬ মিনিটে। লালচুংনুঙ্গা বল বাড়িয়েছিলেন ক্লেটন সিলভার উদ্দেশে। কিন্তু ক্লেটন সেই বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ওড়িশার গোলকিপার সহজেই তা বাঁচিয়ে দেন। তবে এই আক্রমণের পরেই ইস্টবেঙ্গল কিছুটা জেগে ওঠে। বোরহা হেরেরা, নাওরেম মহেশ এবং নন্দকুমার মাঝমাঠে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ২৭ মিনিটে নন্দকুমার তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়লেও তাঁর শট দারুণ ভাবে বাঁচান অমরিন্দর।
আবার কিছুটা রক্ষণাত্মক খোলসে ঢুকে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। গোলের জন্য দু’-একটা আক্রমণ হচ্ছিল বটে। কিন্তু ওড়িশার আক্রমণ বাঁচাতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা। ওড়িশার খেলাতেও ছিল ছন্দের অভাব। খুব বেশি বল পায়ে রাখতে পারছিল না তারা। মিস্ পাস হচ্ছিল একের পর এক। প্রথমার্ধে তাই গোল করতেও পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পেনাল্টির আবেদন করে ইস্টবেঙ্গল। বাঁ দিক থেকে মহেশের ক্রস ওড়িশার এক ডিফেন্ডারের হাতে লাগে। ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা পেনাল্টির কাতর আবেদন করলেও রেফারি কর্ণপাত করেননি। ৬১ মিনিটের মাথায় প্রায় গোল করে ফেলেছিল ওড়িশা। লাল-হলুদ বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রয় কৃষ্ণ। বাঁ দিক থেকে তাঁর ক্রস ইস্টবেঙ্গলের কোনও ফুটবলার ক্লিয়ার করতে পারেননি। এগিয়ে আসা জেরি অল্পের জন্য বল পায়ে লাগাতে পারেননি। না হলে নিশ্চিত ভাবে পিছিয়ে পড়ত ইস্টবেঙ্গল।
শেষের দিকে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ওড়িশার রক্ষণ তখন কার্যত দিশেহারা। রেফারি যদি এই সময়ে ইস্টবেঙ্গলের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নিতেন, তা হলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত।