সাংবাদিক বৈঠকে (বাঁ দিকে) নন্দকুমারের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ছবি: পিটিআই।
পাঁচ দিনের মধ্যে দু’টি বড় ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের। প্রথমে বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর যোগ্যতাঅর্জন ম্যাচে মুখোমুখি তুর্কমেনিস্তানের অলটিন আসির। তার পরে রবিবার ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সামনে মোহনবাগান। দুই ম্যাচেরই পরিকল্পনা তৈরি, এমনটাই জানালেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।
আসিরের বিরুদ্ধে নামার আগে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে কুয়াদ্রাতকে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল, তা হল কী ভাবে দু’টি বড় ম্যাচের পরিকল্পনা করছেন তিনি। জবাবে লাল-হলুদ কোচ বললেন, “দুটো সম্পূর্ণ আলাদা ম্যাচ। আলাদা প্রতিযোগিতা। একটা এশীয় স্তরে নিজেদের জায়গা করে নেওয়ার লড়াই। অন্যটা দেশের বড় প্রতিযোগিতা। তবে দুটো ম্যাচকেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। দুটো ম্যাচেরই পরিকল্পনা করেছি।”
পাঁচ দিনের মধ্যে দু’টি বড় ম্যাচ খেলার ধকল ফুটবলারেরা নিতে পারবেন তো? নিজের দলের উপর আস্থা রয়েছে কুয়াদ্রাতের। তিনি বলেন, “আমি বাস্তবে পা দিয়ে চলি। সবসময় ইতিবাচক থাকি। দলের ফুটবলারেরা তৈরি। কারণ, এটা যেমন ওদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনই নিজেদের প্রমাণ করার জায়গাও। এএফসি-তে আমরা পিছিয়ে আছি। আসির খুব ভাল দল। ওরা অনেক বার এই প্রতিযোগিতা খেলেছে। তাই ওদের উপর চাপ বেশি থাকবে। কী ভাবে ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়া যাবে সেই পরিকল্পনাও করেছি। আমরা তৈরি।”
কুয়াদ্রাতের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার নন্দকুমার। বড় ম্যাচের আগে তিনি উত্তেজিত। নন্দকুমার বলেন, “আমার প্রথম এএফসি ম্যাচ। আমি খুব উত্তেজিত। এটা আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা তৈরি।”
এই প্রথম আসিরের মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল। সম্পূর্ণ অপরিচিত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা কী ভাবে করছেন কুয়াদ্রাত? তিনি অবশ্য আসিরকে একেবারেই চেনেন না তা নয়। পাঁচ বছর আগে এই ক্লাবের কাছেই ২-৫ গোলে হেরেছিল বেঙ্গালুরু এফসি। সেই সময় বেঙ্গালুরুর কোচ ছিলেন এই কুয়াদ্রাত। সে বার হারতে হয়েছিল। এ বার ফলাফল বদলে দিতে চান তিনি। কুয়াদ্রাত বলেন, “আমি আসিরের বিরুদ্ধে খেলেছি। সেই সময় ওরা অনেক শক্তিশালী ছিল। সেটা মাঠে বোঝা গিয়েছে। এ বার নতুন দল। সময়ও আলাদা। এ বার আমরা জিততে চাই।”
ডার্বির কথা মাথায় রেখে আসিরের বিরুদ্ধে সব বিদেশিকে না-ও খেলাতে পারেন কুয়াদ্রাত। কোন দল তিনি নামাবেন তা নিয়ে বিশেষ কিছু খোলসা করেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি ও প্রতিপক্ষ দেখে সিদ্ধান্ত নেব। তিন জন বিদেশি খেলাতে পারি। তার বেশিও খেলাতে পারি। কারণ, দুটো ম্যাচের কথাই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। হাতে অনেক বিকল্প আছে। নিশু কুমার ছাড়া বাকি সকলেই ফিট। তাই চোট-আঘাতের কোনও সমস্যা দলে নেই।”
দীর্ঘ দিন এশীয় প্রতিযোগিতায় সাফল্য নেই ইস্টবেঙ্গলের। সেই পরিস্থিতির বদল চান কুয়াদ্রাত। দেশীয় ফুটবলের বাইরে বার হতে চান তিনি। কুয়াদ্রাত বলেন, “অনেক বছর ইস্টবেঙ্গল এশীয় স্তরে সাফল্য পায়নি। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আছে আমাদের। তাই এই ম্যাচের গুরুত্ব অনেক বেশি। জয় ছাড়া আপাতত কিছু ভাবছি না। আমাদের জন্য গলা ফাটাতে মাঠ ভরাবেন সমর্থকেরা। সেটা আমাদের সাহায্য করবে।”
বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হবে ইস্টবেঙ্গল বনাম অলটিন আসির ম্যাচ। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু খেলা। টেলিভিশনে জি ২৪ ঘণ্টা চ্যানেলে সরাসরি দেখা যাবে খেলা।