(বাঁ দিক থেকে) ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার সাউল ক্রেসপো, কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত, ওড়িশার কোচ সের্জিয়ো লোবেরা, ফুটবলার কার্লোস দেলগাদো। ছবি: সংগৃহীত।
গত বছর ডুরান্ড কাপ। এ বছর সুপার কাপ। কয়েক মাসের ব্যবধানে আবারও একটি ট্রফি জয়ের সামনে ইস্টবেঙ্গল। সে বার ট্রফি জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল মোহনবাগানের কাছে ফাইনালে হেরে। এ বার লাল-হলুদের সামনে ওড়িশা এফসি, যাদের কোচ সের্জিয়ো লোবেরা প্রায় ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়েই গিয়েছিলেন। রবিবারের লড়াই তাই দুই কোচের কাছেই মস্তিষ্কের যুদ্ধ বলা চলে। সেই যুদ্ধে ওড়িশা এফসি-কে সমীহ করেই ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত জানিয়ে দিলেন, ট্রফি জেতার জন্য তাঁরা সর্বস্ব উজাড় করে দেবেন। ক্লাবের ট্রফি খরা কাটাতে মরিয়া তিনি।
জাতীয় পর্যায়ে ১২ বছর কোনও ট্রফি জেতেনি ইস্টবেঙ্গল। ২০১২ সালে শেষ বার ফেডারেশন কাপ জিতেছিল তারা। শিলিগুড়িতে অতিরিক্ত সময়ে হারিয়েছিল ডেম্পোকে। ডুরান্ড জিতলেই জাতীয় পর্যায়ের ট্রফি জয় হয়ে যেত। তা হয়নি। তাই সুপার কাপের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কুয়াদ্রাত।
ম্যাচের আগের দিন তিনি বলেছেন, “গোটা শিবিরই চাঙ্গা। অনেক দিন ধরেই আমরা ট্রফির চেষ্টা করে চলেছি। আরও একটা ফাইনালে ওঠা নিঃসন্দেহে ভাল ব্যাপার। প্রথমটা (ডুরান্ড) জিততে পারিনি। তাই এ বার জয়ের জন্য নিজেদের সেরাটা দিতে মরিয়া।”
লাল-হলুদ ভাল ফর্মে রয়েছে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ন’টি ম্যাচে অপরাজিত তারা। সুপার কাপে প্রতিটি ম্যাচেই জিতেছে। ক্লেটন সিলভা যেমন চার গোল করে নজর কেড়েছেন। তেমনই বাকিরাও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন। কুয়াদ্রাতের কথায়, “দুটো দলই ফলাফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আমরা ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছি। ওড়িশার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। অনেক দিন ধরে অপরাজিত। দুর্ভাগ্যবশত কোনও একটা দলকে কাল হারতে হবে। আমাদের কাছেও কঠিন ম্যাচ হতে চলেছে। কিন্তু আমি বরাবরই বলি। জয়ের জন্যেই নামব। প্রতি ম্যাচে গোল করা তারই প্রমাণ।”
জাতীয় দল থেকে ফিরে শুক্রবারই ইস্টবেঙ্গল শিবিরে যোগ দিয়েছেন নাওরেম মহেশ এবং লালচুংনুঙ্গা। কিন্তু সুপার কাপের ফাইনালে তাঁদের দেখা যাবে কি না সেটা ফাঁস করতে চাননি কুয়াদ্রাত। হেসে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেন তিনি।
২০১৮ সালেও সুপার কাপের ফাইনালে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল। সে বার ফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসি-র কাছে ১-৪ গোলে হারে তারা। সেই সময় বেঙ্গালুরুর কোচ থাকা কুয়াদ্রাত এ বার ইস্টবেঙ্গলে। কী মনে হচ্ছে? স্প্যানিশ কোচের উত্তর, “এখানে এসে খুবই খুশি। তখন সময়টা আলাদা ছিল। আমি ভাগ্যবান যে ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতে পেরেছি। ফাইনাল জিততে গেলে কোনও না কোনও সময় হারতেই হয়। সেই চাপ, সেই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া দরকার।”
কুয়াদ্রাতের মতো ওড়িশা কোচ লোবেরাও সমীহ করছেন ইস্টবেঙ্গলকে। একই সঙ্গে তিনি আত্মবিশ্বাসী। বলেছেন, “আমাদের সামনে একটা বিরাট ম্যাচ। ঘরের মাঠে খেলতে নামছি। তাই ট্রফি জেতার ব্যাপারে একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। তবে ফাইনালটা আমরা উপভোগ করতে চাই। মোহনবাগান, বসুন্ধরার মতো দলকে আমরা এএফসি কাপে হারিয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় গোয়া, মুম্বইকে হারিয়েছি। আমি নিশ্চিত ফাইনালে আমার ফুটবলারেরা নিজেদের দুশো শতাংশ উজাড় করে দেবে।”