অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল (বাঁ দিকে) এবং মোহনবাগানের ফুটবলারেরা। ছবি: এক্স।
কয়েক ঘণ্টা পরেই মরসুমের প্রথম কলকাতা ডার্বি। কলকাতা লিগে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। তবে এই ডার্বি নিয়ে সমর্থকদের উৎসাহ কিছুটা হলেও কম। কারণ, কলকাতা লিগের এই ডার্বিতে থাকবেন না কোনও বিদেশি ফুটবলার। দু’দলেই বেশির ভাগ ভূমিপুত্র। সিনিয়র দলের কিছু ফুটবলার থাকলেও সংখ্যায় অনেক কম। সাধারণত ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগানের ম্যাচে যে উৎসাহ দেখা যায়, তা এই ম্যাচে নেই। তবে কলকাতা লিগে চার বছর পর হতে চলেছে ডার্বি।
ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই মেরুতে। ইস্টবেঙ্গল যেখানে দুই ম্যাচেই জিতেছে, সেখানে মোহনবাগান দু’টিতেই ড্র করেছে। ইস্টবেঙ্গলের যেখানে দশ গোল, সেখানে মোহনবাগানের তিন। স্বাভাবিক ভাবেই লাল-হলুদকে কিছুটা এগিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু ডার্বি ম্যাচ বলেই কেউ ম্যাচের ফলাফল আগাম অনুমান করতে চাইছেন না।
ম্যাচের আগের দিন শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল অনুশীলন করেছে সকালে বৃষ্টির মধ্যে। সেই অনুশীলনে দেখা গিয়েছে ভিপি সুহের, ডেভিড লালানসাঙ্গা, দেবজিৎ মজুমদারদের মতো ফুটবলারকে। তিন জনকেই কলকাতা লিগের জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে ডার্বিতে খেলানো হবে কি না, সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কোচ বিনো জর্জ।
শুক্রবার বিনো বলেছেন, “ওরা অনুশীলনে এসেছে। ডার্বির অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছে। খেলাব কি না এখনও ঠিক করিনি।” তবে ডার্বিকে যে কোনও ভাবেই হালকা করে দেখছে না ইস্টবেঙ্গল, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বিনোর গলায়। তিনি বলেছেন, “ডার্বির গুরুত্ব কতটা সেটা সবাই জানে। মোহনবাগানও জানে। আমরা সে ভাবেই পরিকল্পনা করছি। ম্যাচের জন্য তৈরি।”
বিনোর মতে, আগের দু’টি ম্যাচে জিতলেও ডার্বির গুরুত্ব সব সময় আলাদা। সে ভাবেই তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মোহনবাগান আগের দু’টি ম্যাচে ড্র করলেও তা নিয়ে ভাবছেন না। বিনো বলেছেন, “আমরা দেরিতে প্রস্তুতি শুরু করেছি। অনেকেই দেরি করে এসেছে। এখনও টিম গেম তৈরি হয়নি। এক-এক দিন ধরে ধরে উন্নতি করছে। তবে এই ম্যাচের গুরুত্ব আমরা জানি। সেই কারণেই এটাকে ডার্বি বলা হয়। এটা যুদ্ধের মতোই। দুটো দলই ম্যাচটা জিততে চাইবে। সে ভাবেই অনুশীলন করেছি।”
তাঁর সংযোজন, “এটা ফুটবল। আগে থেকে কাউকে জিতিয়ে দেওয়া যায় না। আমরা ডার্বির গুরুত্বের কথা ভেবেই অনুশীলন করছি। মাঠে ১০০ শতাংশ দিতে চাই।” সিনিয়র দলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের কোনও নির্দেশ পাননি বিনো। কুয়াদ্রাতের সম্পর্কে বিনোর মন্তব্য, “উনি সব সময়ে আমাদের পাশে থাকেন। সব ম্যাচে আসছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন। এই ম্যাচের জন্য আলাদা করে কিছু বলেননি।”
এ দিকে, মোহনবাগান শুক্রবার অনুশীলন করেছে বিকাল সাড়ে ৩টে থেকে। দলের সেট-পিস বিশেষজ্ঞ শিবাজিৎ সিংহের চোট রয়েছে। তাঁকে শুক্রবার অনুশীলন করতে দেখা যায়নি। বাঁ পায়ে ব্যান্ডেজ় বাঁধা ছিল। চোট সারিয়ে ফেরা আশিক কুরুনিয়ান দীর্ঘ দিনই এই দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন। শুক্রবার তাঁকেও বাইরে বসে থাকতে দেখা যায়।
কলকাতা লিগের দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন সিনিয়র দলের গ্লেন মার্টিন্স। সঙ্গে ছিলেন আর্শ আনোয়ার। দু’জনকেই খেলানো হতে পারে ডার্বিতে। চোট সারিয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। ডার্বিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ভার তাঁর কাঁধেই থাকতে পারে।
মোহনবাগানের অনুশীলনে সাধারণ ফিটনেস ড্রিলের পাশাপাশি সিচুয়েশন প্র্যাকটিস, সেট-পিস অনুশীলন এবং ছোট ছোট পাসে খেলতে দেখা যায়। কোচ ডেগি কার্ডোজ়ো জানিয়েছেন, আগের দু’টি ম্যাচে তাঁরা ড্র করলেও ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েই জয়ে ফিরতে চান।