Ole Gunnar Solskjaer

Cristiano Ronaldo: বিদায়ী সতীর্থের পাশে ক্রিশ্চিয়ানো থেকে রুনি

অস্থায়ী দায়িত্বে আসার পরে প্রথম ১৯টার মধ্যে ১৪টা ম্যাচ জেতার পরে তাঁকে পাকাপাকি ভাবে ম্যানেজার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৫৭
Share:

বিদায়: সোলসার-রোনাল্ডোর জুটি ভেঙে গেল ম্যান ইউয়ে। ফাইল চিত্র।

বিদায়ী কোচ ওয়ে গুন্নার সোলসার মনে করছেন, যে অবস্থায় পেয়েছিলেন তার চেয়ে অনেক উন্নত ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড রেখে তিনি যেতে পারছেন। ‘‘এই ক্লাব আমার কাছে সব কিছু। দুর্ভাগ্যের হচ্ছে, যে রকম ফলাফল দরকার ছিল, তা আমরা পাইনি। তাই সরে যাওয়ার সময় হয়েছে,’’ ম্যান ইউ মিডিয়াকে বলেছেন তিনি। কোচ নিয়ে ডামাডোলের মধ্যেই আজ, মঙ্গলবার, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পরীক্ষা দিতে নামছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা। প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়াল।

Advertisement

গণমাধ্যমে বিদায়ী ম্যানেজারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোনাল্ডো। সোলসারের সঙ্গে এক সময় ম্যান ইউতে খেলেওছেন রোনাল্ডো। সেই ছবি তুলে দিয়ে রোনাল্ডো লিখেছেন, “প্রথম যখন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এসেছিলাম, ওঁকে পেয়েছিলাম সতীর্থ স্ট্রাইকার হিসেবে। দ্বিতীয়বার ফেরার পর পেলাম কোচ হিসেবে। মানুষ হিসেবে ওলে অসাধারণ। ওঁর ভবিষ্যতের জন্য রইল অনেক শুভকামনা।” যাঁকে নিয়ে বলা সেই সোলসারের গলায় কিছুটা আক্ষেপের সুর। ‘‘আমি প্রিয় ক্লাবকে পরের স্তরে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বড় ম্যাচ জিততে চেয়েছিলাম, ট্রফি জিততে চেয়েছিলাম। সমর্থকদের জন্য, খেলোয়াড়দের জন্য, ক্লাবের জন্য।’’

অস্থায়ী দায়িত্বে আসার পরে প্রথম ১৯টার মধ্যে ১৪টা ম্যাচ জেতার পরে তাঁকে পাকাপাকি ভাবে ম্যানেজার করা হয়। কারও কারও মনে হচ্ছে, বড্ড তাড়াহুড়ো করে সোলসারকে ছেঁটে ফেলা হল কি না। তাঁর অধীনে পর-পর দুই মরসুমে ইপিএলে প্রথম চারের মধ্যে শেষ করে ম্যান ইউ। স্যর আলেক্স ফার্গুসন ২০১৩-তে অবসর নেওয়ার পরে যা দেখা যায়নি। অনেকের মনে পড়ছে, ফার্গুসনের শুরুর দিনের কথা। ১৯৮৬ নভেম্বরে আবের্দিন ক্লাব থেকে ম্যান ইউতে যোগ দেওয়ার ছয় বছরের মাথায় এসে ১৯৯৩-তে তিনি প্রথম ইপিএল খেতাব জেতেন। ফার্গি-হঠাওয়ের ধ্বনি উঠে গিয়েছিল টানা তিন বছর ব্যর্থ হওয়ার পরেই। বিখ্যাত সেই পোস্টার দেখা গিয়েছিল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে— ‘তিন বছর ধরে শুধু অজুহাত চলছে। তা রা ফার্গি’। সে বছরেই জোরালো জল্পনা শুরু হয়, তাঁকে ছাঁটাই করা হবে। রায়ান গিগ্‌স, এরিক কঁতোনাদের নিয়ে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ান ফার্গুসন এবং ম্যান ইউয়ের ইতিহাসে অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে শেষ করেন।

Advertisement

সোলসারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে চারটি কাপ সেমিফাইনালে পরাজয়, গত মরসুমে ইউরোপা লিগ ফাইনালে ম্যারাথন পেনাল্টি শুটআউটে হার এবং চলতি মরসুমে ইপিএলে দুঃস্বপ্নের ফলাফল। শেষ সাতটা ম্যাচের মধ্যে পাঁচটাতে হেরেছে ম্যান ইউ। লিভারপুলের কাছে ০-৫ এবং ম্যান সিটির কাছে ০-২ হারের লজ্জা তাঁকে নিয়ে অসন্তোষ বাড়িয়েছিল। কফিনে শেষ পেরেক ১৬ নম্বরে থাকা ওয়াটফোর্ডের কাছে ১-৪ হার। তবে ড্রেসিংরুমের সমর্থনও সোলসার হারাচ্ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। পল পোগবা প্রকাশ্যে রণনীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। ওয়াটফোর্ডের কাছে হারের পরে দাভিদ দা হিয়া বলেন, ‘‘বল নিয়ে কী করতে হবে আমরা বুঝতেই পারছি না। এই পরাজয় খুবই অপমানজনক।’’ তা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, দলও সে ভাবে আর পাশে থাকছে না তাঁর।

ফার্গুসন সরে যাওয়ার পরে সাত বছরে মোট পাঁচ জন কোচ এসেছেন ম্যান ইউ-তে। তার মধ্যে সাফল্যের শতকরা হারে সব চেয়ে এগিয়ে জোসে মোরিনহো (৫৮.৩%)। তার পরেই সোলসার (৫৪.২%)।

তবে সোলসার বিতাড়নের সিদ্ধান্ত মোটেও মেনে নিতে পারছেন না ওয়েন রুনি। তিনি মনে করছেন, ম্যান ইউয়ের ফুটবলারেরা এই বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারেন না। বর্তমানে ডার্বির কোচ রুনি এক সময় রোনাল্ডোর মতোই সোলসারের সঙ্গে ম্যান ইউতে খেলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যানেজার হিসেবে কেউ ছক সাজিয়ে দিতে পারে। পরিকল্পনা করতে পারে। কিন্তু মাঠে নেমে বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব তো ফুটবলারদেরই। ওয়াটফোর্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচটা দেখে আমি খুবই হতাশ হয়েছি। ফুটবলারদের এমন খেলার কোনও অজুহাতই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’’ রুনি বেশ ক্ষিপ্ত ভাবেই বলেছেন, ‘‘ফুটবলারেরা শুধু হাত নেড়ে যাচ্ছে আর বলটা আলতো করে পাস করে দিচ্ছে। এমন করলে কী করে হবে?’’ আরও তোপ, ‘‘আমার দলের ফুটবলারেরা এমন খেললে খুবই রেগে যেতাম। ম্যান ইউ ফুটবলারদের বোঝা উচিত, ওরা বিশ্বের সব চেয়ে নামী ক্লাবে খেলছে। তার জন্য ওরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতে পারে। আরও অনেক দায়িত্বসম্পন্ন ফুটবল ওদের থেকে প্রত্যাশা করা হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement