উদ্বেগ: ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচে চোট পাওয়ার পরে সাহাল। —নিজস্ব চিত্র।
আশিক কুরুনিয়ন, আনোয়ার আলি, দিমিত্রি পেত্রাতস, মনবীর সিংহ আগেই চোট পেয়েছিলেন। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হুগো বুমোস, সাহাল আব্দুল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা, গ্লেন মার্টিন্স ও কিয়ান নাসিরি। মোহনবাগান শিবিরের অবস্থা এখন কার্যত ছোটখাটো হাসপাতালের মতো! এই পরিস্থিতিতে মাজ়িয়ার বিরুদ্ধে এএফসি কাপের নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলতে কোচ জুয়ান ফেরান্দো-সহ প্রথম একাদশের অধিকাংশ ফুটবলারই মলদ্বীপ যাচ্ছেন না। দায়িত্ব সামলাবেন সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। আজ, শুক্রবার অনুশীলনের পরেই দল ঘোষণা হবে।
যুবভারতীতে বুধবার রাতে আইএসএলে ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ শুরু হওয়ার ঠিক আগে ওয়ার্মআপ করতে গিয়ে পেশিতে চোট পেয়ে ছিটকে যান বুমোস। ৪৫ মিনিটে হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অনিরুদ্ধ। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সাহালও যে ভাবে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বেরিয়ে গেলেন, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তাঁর পরিবর্তে নামা গ্লেনও চোট পেয়ে উঠে গেলেন ৭১ মিনিটে। ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে ক্লিফোর্ড কাঠগড়ায় তুললেন ওড়িশার ফুটবলারদেরও! তাঁর অভিযোগ, ‘‘সাহাল ও থাপা দারুণ ছন্দে ছিল, তাই ওদের আঘাত করা হয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘হুগো চোট পেয়েছিল ম্যাচ শুরুর আগে। কিয়ানেরও পেশিতে টান লেগেছে। তবে ফুটবলে এ রকম হয়েই থআকে।’’ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সাহালের ডাক্তারি পরীক্ষায় উদ্বেগজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন উঠছে সাহাল কি পারবেন আগামী ১৫ ডিসেম্বর গুয়াহাটিতে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে খেলতে? সতর্ক ক্লিফোর্ড বললেন, ‘‘সাহালের চোটের ব্যাপারে মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে। এত চোট-আঘাত নিয়ে খেলে যাওয়াটা খুবই কঠিন। তবে এরকম যে হতে পারে, তা আমাদের ভাবনায় ছিল। এই কারণেই ভাল দল গড়েছি। যাতে কেউ চোট পেয়ে ছিটকে গেলে বাকিরা শূন্যস্থান পূরণ করতে পারে।’’
আর্মান্দো সাদিকু জোড়া গোলে ওড়িশার বিরুদ্ধে মোহনবাগানের হার বাঁচালেও, দিমিত্রি ও মনবীরের অভাব বারবার বোঝা গিয়েছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কাতার বিশ্বকাপে খেলা স্ট্রাইকার জেসন কামিংস একেবারেই ছন্দে না থাকায় সমস্যা আরও আরও বেড়েছে। সাদিকু যদিও বলেছেন, ‘‘প্রতি ম্যাচেই আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। কখনও নিজে গোল করি। কখনও আবার গোলের পাস দিই। যখনই গোল করতে পারি, খুশি হই। দলের জন্য নিজের একশো শতাংশ দিতেপেরে ভাল লাগছে। এই ম্যাচে দু’টি গোল করেছি। আশা করছি আরও গোল করব।”
বুধবার প্রথমার্ধেই ওড়িশার বিরুদ্ধে ০-২ পিছিয়ে পড়েছিল মোহনবাগান। দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের রহস্য কী? সাদিকুর কথায়, ‘‘আমরা দুগোলে পিছিয়ে থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার পরে কোচ বলেছিলেন, প্রত্যেককে একশো শতাংশ দিতে হবে। আর গোলরক্ষক কোচ বলে দিয়েছিলেন, প্রতিপক্ষ এ বার সময় নষ্ট করার চেষ্টা করবে। বিশ্বাস ছিল, গোল আমরা শোধ করতে পারব। সমর্থকদের প্রত্যাশাপূরণ করতে পেরে তাই খুশি।’’ একাধিক সতীর্থের চোটও তাঁকে চিন্তায় রেখেছে, গোপন করেননি। বলেন, ‘‘দলে চোট পাওয়া ফুটবলারের সংখ্যা এত বেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের।’’
হার বাঁচাল জামশেদপুর এফসি: বৃহস্পতিবার আইএসএলে জামশেদপুর এফসি এবং চেন্নাইয়িন এফসির মধ্যে ম্যাচ ২-২ ড্র হয়। প্রথমার্ধেই দু’গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেন্নাইয়িন এফসি। ৯ মিনিটে গোল করেন ফারুখ চৌধরি। ৪০ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান নিনথইনগানবা মেইতেই। প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে হেড করে গোল করেন জামশেদপুরের লালডিনপুইয়া। ৯০ মিনিটে নিখিল বার্লার ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ২-২ করেন ড্যানিয়েল চিমা। এই ড্রয়ের ফলে ৯ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবলের সপ্তম স্থানে উঠে এল চেন্নাইয়িন। অষ্টম স্থানে নেমে গেল ইস্টবেঙ্গল। তিনেরয়েছে মোহনবাগান।