উচ্ছ্বাস ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের। —ফাইল চিত্র।
আইএসএলে প্রথম জয় পেল ইস্টবেঙ্গল। কোচ অস্কার ব্রুজ়োর প্রশিক্ষণে লাল-হলুদের খেলায় পরিবর্তন এসেছে। দল এখন অনেক বেশি গোছানো। ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া বেড়েছে। যুবভারতীতে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়ে সে কথাই বললেন কোচ।
গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন উইঙ্গার নন্দকুমার শেকর ও নাওরেম মহেশ সিং। নন্দর জায়গায় এই ম্যাচে পিভি বিষ্ণু ও মহেশের জায়গায় জিকসন সিংকে খেলান অস্কার। দুই নির্ভরযোগ্য সদস্যকে ছাড়াই উজ্জীবিত ফুটবল খেলে তাঁর দল। এই দলগত ফুটবলই আইএসএলে অষ্টম ম্যাচে প্রথম জয় এনে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। এই জয়ের জন্য গ্রিক স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস কৃতিত্ব দিলেন মহমেডান ম্যাচকে। তিনি বলেন, “মহমেডানের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল। ওদের বিরুদ্ধে গোল খাইনি আমরা। প্রথম পয়েন্ট পাই। এ দিন নর্থইস্টের বিরুদ্ধে জয় আমাদের তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছে। গত ম্যাচের মতো আমরা একসঙ্গে রক্ষণ সামলেছি। যার ফলে প্রতিপক্ষের কাজটা আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে। দলের জন্য আমাদের সব ম্যাচেই এ রকম লড়াই করতে হবে। এই খেলাটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।”
দলের স্ট্রাইকার রক্ষণ নিয়ে কথা বলায় মুগ্ধ কোচ ব্রুজ়ো। তিনি বলেন, “দলের স্ট্রাইকার যদি সাংবাদিক বৈঠকে গোল না খাওয়া নিয়ে কথা বলে, তা হলে বুঝতে হবে, আমাদের ফুটবলারদের পারফরম্যান্স কতটা ভাল হয়েছে। দিমি যখন বলছে গোল না খাওয়ার কথা, একসঙ্গে ডিফেন্স করার কথা, তখন বুঝতেই হবে দলের মানসিকতায় একটা বড়সড় বদল আসতে শুরু করেছে। সেটার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে এই ম্যাচে। দু-তিনটে গোলের সুযোগ পেয়ে তা থেকে একটি গোল পেয়েছি আমরা। দিমি যেমন গোল করেছে, তেমনই নীচে নেমে এসে রক্ষণও সামলেছে। এটাই বোঝায় দলের খেলোয়াড়দের আন্তরিকতা কোন পর্যায়ে রয়েছে। এখানে আমার প্রথম দিন থেকে আমি এটাই বলে এসেছি। আমাদের দল হিসেবে নিখুঁত খেলতে হবে। তা হলেই আমরা সাফল্য পাব।”
দিয়ামান্তাকাস মনে করেন নতুন কোচ এসে যে দলের ফুটবলারদের মনোভাব বদলে দিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের দিমি বলেন, “নতুন কোচ আসার পর আমাদের দলে কিছু বদল হয়েছে। সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ায় উপকারই হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। নিজেদের গোল অক্ষত রাখাটা যে জরুরি, এর ওপর জোর দেন কোচ। দলের ছেলেদের যে সমস্যাগুলো ছিল, সেগুলোও উনি মেটান। সেটাই দলকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।”
আইএসএলে প্রথমে ড্র করে পয়েন্ট পাওয়া, তার পর ম্যাচ জিতে নেওয়া। উন্নতির এই ধারা বজায় রাখতে চান ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিনি বলেন, “নর্থইস্ট অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করেছে। এক বার বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। আইএসএলে এখন কী করতে হবে, তা আমাদের দলের সকলেরই জানা। সেই জন্যই প্রায় প্রত্যেকে ভাল খেলছে। ধারাবাহিকতা এসেছে। এটা ধরে রাখতে হবে। সেই কাজটা মোটেই সহজ হবে না। আগামী ম্যাচগুলোয় আমাদের শুধু ইতিবাচক ভাবতে হবে।”
গত ম্যাচে দলের দু’জন লাল কার্ড দেখার পর শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের লালচুঙনুঙ্গা লাল কার্ড দেখেন। এত ঘন ঘন কার্ড দেখার প্রবণতায় আপত্তি রয়েছে কোচের। তিনি বলেন, “আমাদের ছেলেদের মানসিক নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়াতে হবে। রেফারির সামনে কোনও কটু কথা বলা যাবে না। কারণ, একটা ছোট ভুলের ফলে রেফারির সিদ্ধান্তে আমরা শেষ হয়ে যেতে পারি।”