অপ্রতিরোধ্য: নয়্যারকে পরাস্ত করে প্রথম গোল রাফিনহার। ছবি রয়টার্স।
২৪ অক্টোবর: শাপমুক্ত বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ন’বছর পরে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে জয়। নেপথ্যে বিধ্বংসী রাফিনহার হ্যাটট্রিক। বিস্ময় গোলে ফুটবলবিশ্বকে মুগ্ধ করলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র আর্লিং হালান্ডও।
২০১৪-’১৫ মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ক্যাম্প ন্যু-তে শেষ বার বায়ার্নকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা। ৩-০ গোলে জয়ের রাতে জোড়া গোল করেছিলেন লিয়োনেল মেসি। একটি গোল করেছিলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)। তার পর থেকে গত ন’বছরে বায়ার্ন কাঁটায় বারবার বিদ্ধ হয়েছে বার্সেলোনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা ২০১৯-’২০ মরসুমে ঘরের মাঠে ২-৮ গোলে হার। সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহ শিকারের মতোই বুধবার রাতে মিউনিখে জার্মানির ক্লাবকে ৪-১ গোলে গুঁড়িয়ে দিলেন রাফিনহা-রা। বার্সেলোনার জয়ের নায়ক তাই বলেছেন, ‘‘এই জয় ভক্তদের কাছে প্রতিশোধ। আমরা ফুটবলাররা কখনও অতীতের দিকে তাকাই না। কিন্তু এক জন বার্সেলোনা ভক্ত হিসেবে আমিও যন্ত্রণা সহ্য করেছি এত দিন।’’
রবার্ট লেয়নডস্কিকে আগেই সই করিয়েছিল বার্সেলোনা। চলতি মরসুমে বায়ার্নের প্রাক্তন ম্যানেজার হান্সি ফ্লিকের হাতেই দলের দায়িত্ব তুলে দেন ক্যাম্প ন্যু-র কর্তারা। মঙ্গলবার রাতে ফুটবলপ্রেমীরা দেখেছিল রিয়াল মাদ্রিদের নাটকীয় জয়। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁরা সাক্ষী থাকলেন স্পেনের আর এক ক্লাবের দাপটের। খেলা শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যেই ফের্মিন লোপেসের পাস থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন রাফিনহা। ১৮ মিনিটে হ্যারি কেন সমতা ফেরান। ৩৬ মিনিটে বার্সেলোনাকে ২-১ এগিয়ে দেন লেয়নডস্কি। ৪৫ মিনিটে ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে ৩-১ করেন রাফিনহা। ৫৬ মিনিটে ইয়ামালের অসাধারণ পাস থেকে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন ব্রাজিল তারকা। মিনিট কুড়ির মধ্যেই রাফিনহা-কে তুলে দানি ওলমো-কে নামান ফ্লিক। হ্যাটট্রিক করে বার্সেলোনার জার্সিতে শততম ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে পেরে উচ্ছ্বসিত ব্রাজিল তারকা বলেছেন, ‘‘বার্সেলোনার হয়ে শততম ম্যাচে হ্যাটট্রিকের রাতটা অসাধারণ।’’
উচ্ছ্বাসে ভাসছেন হালান্ডও। ঘরের মাঠে স্পার্টা প্রাহা-র বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র ৫-০ জয়ের রাতে চর্চার কেন্দ্রে নরওয়ের স্ট্রাইকার। ৫৮ মিনিটে স্যাভিয়ো দে অলিভিয়েরা পেনাল্টি বক্সে ঢুকে ক্রস করেছিলেন। বিপক্ষের ডিফেন্ডাররা ঘিরে রেখেছিলেন হালান্ডকে। বল শূন্যে থাকা অবস্থাতেই তিন ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে লাফিয়ে উঠে ব্যাক হিলে (পায়ের পিছনের অংশ) বল জালে জড়িয়ে দিয়ে হালান্ড মনে করালেন জ়্লাটান ইব্রাহিমোভিচ-কে। হালান্ডের এই গোলে শুধু ফুটবলপ্রেমীরা নন, বিস্মিত পেপ গুয়ার্দিওলা-ও। ম্যান সিটি ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘হালান্ড কী ভাবে গোলটা করল, জানি না। এক জন মানুষের পক্ষে এ ধরনের গোল করা সম্ভব নয়।’’ তিন মিনিটে ম্যান সিটিকে এগিয়ে দেন ফিল ফোডেন। ৬৪ মিনিটে ৩-০ করেন জন স্টোনস। ৬৮ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন হালান্ড। ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে পঞ্চম গোল করেন মাতেউস নুনেস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্য ম্যাচে ইন্টার মিলান ১-০ হারায় ইয়ং বয়েজ়-কে। লিভারপুলও একই ব্যবধানে জেতে লাইপজ়িগের বিরুদ্ধে।