৩০ বছরের মার্তিনেস খেলেন ইংল্যান্ডের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার হয়ে। —ফাইল চিত্র
কাতার বিশ্বকাপে টাইব্রেকারে পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেশের নায়ক হয়ে গিয়েছেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। কিন্তু সেই সময় তাঁর আচরণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়। এর পরই পেনাল্টির নিয়ম পাল্টাতে চায় ফিফা। নিয়ম বদল নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন মার্তিনেস। জানিয়ে দিলেন, নতুন নিয়ম নিয়ে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই।
৩০ বছরের মার্তিনেস খেলেন ইংল্যান্ডের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার হয়ে। ফিফা পেনাল্টি নেওয়ার নিয়ম পাল্টাতে পারে শুনে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক বলেন, “কোপা আমেরিকার পরে বলেছিলাম, আমি জানি না আবার কখনও পেনাল্টি আটকাতে পারব কি না। যে পেনাল্টি বাঁচানোর ছিল, সেটা বাঁচিয়ে দিয়েছি। আবারও একই কথা বলছি। আগামী দিনে আমি পেনাল্টি বাঁচাতে পারব কি না জানি না। কিন্তু কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপে আমি পেনাল্টি বাঁচিয়েছি। দরকারের সময় দলকে সাহায্য করতে পেরেছি। ট্রফি জিতেছি। এটাই সব। নতুন নিয়ম এলে সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। কিছু করার নেই।”
কাতার বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ ফুটবলারের পেনাল্টি বাঁচানোর জন্য সব রকম কায়দা করেছিলেন মার্তিনেস। তার জন্য বিতর্কও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছিলেন মার্তিনেসই। ফিফা সূত্রে জানা গিয়েছে, পেনাল্টির নিয়ম বদলে যেতে পারে। পেনাল্টি নেওয়ার সময় গোলরক্ষকদের নড়াচড়ায় আরও বিধিনিষেধ আসতে পারে। সংবাদপত্র ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, নতুন নিয়ম আরও কঠিন হবে গোলরক্ষকদের জন্য। কারণ, সেই নিয়ম চালু হয়ে গেলে অবৈধ ভাবে স্ট্রাইকারকে বিরক্ত করা যাবে না। অযথা দেরি করাতে পারবেন না গোলরক্ষক। এই সংক্রান্ত নতুন নিয়মের খসড়া করে মার্চ মাসে লন্ডনে অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভার বৈঠকে তা পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকার শুরু হওয়ার পরে দেখা গিয়েছিল মার্তিনেসের অনেক রূপ। কিলিয়ান এমবাপে পেনাল্টি নিতে যাওয়ার সময় তিনি রেফারির কাছে বার বার অভিযোগ করছিলেন, বল ঠিক জায়গায় বসানো হয়েছে কি না তা দেখার। প্রথম বার রেফারি পাত্তা না দিলেও কোম্যানের পেনাল্টির আগেও মার্তিনেস একই অভিযোগ করায় রেফারি দেখতে গিয়েছিলেন ঠিক জায়গায় বল বসানো হয়েছে কি না। ঠিক তখনই কোম্যানের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন মার্তিনেস। তাঁর মুখের সামনে গিয়ে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন। তাতে কিছুটা হলেও মনোযোগ নষ্ট হয়েছিল কোম্যানের। তাঁর নেওয়া শট বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন মার্তিনেস।
চুয়ামেনি ফ্রান্সের হয়ে তৃতীয় পেনাল্টি নেওয়ার সময় অন্য কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মার্তিনেস। তিনি বল নিয়ে গোলের পিছনে থাকা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে গিয়ে তাঁদের চিৎকার করতে বলেছিলেন। তার পরে চুয়ামেনিকে বল না দিয়ে অন্য দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে চুয়ামেনিকে বল আনতে হয়েছিল। এই সব ঘটনায় তাঁরও মনোযোগ নষ্ট হয়েছিল। বাইরে মেরেছিলেন তিনি। চুয়ামেনি পেনাল্টি নষ্ট করার পর ‘অশ্লীল’ অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গিয়েছিল মার্তিনেসকে। সঙ্গে অনেক কিছু বলছিলেন তিনি।
ফ্রান্সের হয়ে শেষ পেনাল্টি নিতে এসেছিলেন কোলো মুয়ানি। তাঁর কাছে গিয়েও অনেক কিছু বলেছিলেন মার্তিনেস। রেফারি বাধ্য হয়ে তাঁকে ঠেলে গোলপোস্টে নিয়ে যান। মার্তিনেসকে হলুদ কার্ডও দেখানো হয়েছিল। তাতে অবশ্য ভ্রুক্ষেপ করেননি তিনি। কোলো মুয়ানি গোল করলেও আর্জেন্টিনার হয়ে পেনাল্টি থেকে মন্টিয়েল গোল করায় বিশ্বকাপ জিতে যান মার্তিনেসরা।