সেমিফাইনাল জেতার পরে যুবভারতীতে বাগান কোচ হাবাস। ছবি: এক্স।
৯০ মিনিটে ম্যাচ জিততে চেয়েছিলেন আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। অতিরিক্ত সময় বা টাইব্রেকারে খেলা গড়াক, চাননি পোড়খাওয়া কোচ। জানতেন, টাইব্রেকারে ভাগ্য একটা বড় ফ্যাক্টর। দলের ছেলেরা কোচের কথা শুনেছেন। নির্ধারিত সময়েই জিতেছে মোহনবাগান। ঘরের মাঠে আইএসএল সেমিফাইনালে ওড়িশা এফসিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে তারা। এ বার তাদের সামনে একটাই লক্ষ্য। ট্রফি জেতা। বলে দিলেন কোচ হাবাস।
আগামী শনিবার ফাইনাল। আবার ঘরের মাঠে খেলতে নামবে মোহনবাগান। তাই সমর্থনের কোনও অভাব হবে না। সেই কারণেই জয় ছাড়া কিছু ভাবছেন না হাবাস। ওড়িশাকে হারিয়ে আইএসএলের ওয়েবসাইটে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বাগান কোচ বলেন, “এ বার আমাদের পরবর্তী ধাপে যেতে হবে। সেমিফাইনালে আমাদের ছেলেরা এই প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতার মধ্যে যা পরিশ্রম করেছে, তা প্রশংসা করার মতো। এ জন্য দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন। ওরা নিখুঁত পেশাদারিত্বের প্রমাণ দিয়েছে। এই পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। ফাইনালে সামনে যে দলই থাকুক না কেন, আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামব।”
হাবাস জিততে চান সমর্থকদের জন্য। রবিবার যুবভারতী ভরিয়েছিলেন ৬২ হাজারের বেশি সমর্থক। বাগান কোচ জানেন, ফাইনালে হয়তো আরও ভিড় হবে। সমর্থকেরা যে ভাবে প্রতি ম্যাচে দলের পাশে থেকেছেন, তার জন্য তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে চান তিনি। হাবাস বলেন, “আমাদের সমর্থকদের নিয়ে আমি গর্বিত। আমাদের কাছে সমর্থকেরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমর্থকেরা যদি আমাদের পাশে এ ভাবে থাকেন, তা হলে পারফরম্যান্স এমনিতেই ২৫ শতাংশ ভাল হয়ে যায়। ফাইনালেও নিশ্চয়ই তা-ই হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।”
ওড়িশার বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে ১-২ গোলে হেরেছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয় পর্বে ২-০ গোলে জিতে ফাইনালে উঠেছে তারা। দলের এই প্রত্যাবর্তনের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ফুটবলারদের দিয়েছেন হাবাস। তিনি বলেন, “সেমিফাইনালে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা জিনিসের ঘাটতি হয়নি, শক্তি। এই ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট সমান শক্তি ও উৎসাহ নিয়ে খেলেছে আমাদের ছেলেরা। যারা পরিবর্ত হিসেবে নেমেছে, তারাও একই রকম উদ্যম নিয়ে লড়াই করে গিয়েছে। এই জয়ে দলের সবার ভূমিকা ছিল।”
পর পর এত ম্যাচ খেললেও ফুটবলারদের মানসিক শক্তি যে একটুও কমেনি, তা জানিয়ে দিয়েছেন হাবাস। তাঁর মতে, শারীরিক নয়, মানসিক জোরই দলকে জিতিয়েছে। বাগান কোচ বলেন, “সেমিফাইনাল শুরু হওয়ার আগে যখন দলের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলি, তখন একটা বিষয়ের ওপরই বেশি জোর দিই, ইচ্ছাশক্তি। একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে এটাই সবচেয়ে জরুরি। এ থেকেই একজন খেলোয়াড় তার শক্তি ফিরে পায়। ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময়ের কথা মাথায় রেখেও আমাদের ছেলেরা আজ পুরো ৯০ মিনিট ধরে লড়াই করে গিয়েছে। সেটা ইচ্ছাশক্তির জোরেই। খেলোয়াড়দের ওপর আমার ১০০ শতাংশ আস্থা রয়েছে।”
আগেও কোচ হিসাবে আইএসএল জিতেছেন হাবাস। আবার একটি ফাইনালে তিনি। আরও একটি দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে চান ভারতীয় ফুটবলে পোড়খাওয়া এই কোচ। যুবভারতীতে ওড়িশাকে হারিয়ে উঠেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি।