গোলের পর মোহনবাগান ফুটবলারদের উল্লাস। ছবি টুইটার
ব্লু স্টারের বিরুদ্ধে দল পাঁচ গোলে জিতলেও তাঁর নামের পাশে ছিল না কোনও গোল। সেই আক্ষেপ আবাহনী ঢাকার বিরুদ্ধে সুদে-আসলে মেটালেন ডেভিড উইলিয়ামস। এএফসি কাপের প্লে-অফে আবাহনী ঢাকার বিরুদ্ধে ৩-১ ব্যবধানে জিতল এটিকে মোহনবাগান। হ্যাটট্রিক করলেন উইলিয়ামস। জয়ের ফলে এএফসি কাপের মূলপর্বে চলে গেল এটিকে মোহনবাগান। গ্রুপ ডি-তে তাদের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস, মলদ্বীপের মাজিয়া এফসি এবং ভারতের গোকুলম কেরল।
আগের ম্যাচের থেকে দলে দু’টি বদল এনেছিলেন এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ায় গোলে অমরিন্দর সিংহ ফিরেছিলেন অর্শ আনোয়ারের জায়গায়। এ ছাড়া আক্রমণভাগ আরও শক্তিশালী করে তুলতে কিয়ান নাসিরির জায়গায় এনেছিলেন লিস্টন কোলাসোকে। দ্বিতীয় পরিবর্তনটি করেই আবাহনী ঢাকার ঘুম কেড়ে নিলেন স্প্যানিশ কোচ।
শুরু থেকেই বাঁ দিক দিকে একের পর এক আক্রমণ তুলে আবাহনীর ডিফেন্ডারদের বিপদে ফেলছিলেন লিস্টন। প্রথম গোল পেতে এটিকে মোহনবাগানকে অপেক্ষা করতে হল মাত্র ছয় মিনিট। মাঝমাঠে বল পেয়েছিলেন লিস্টন। তিনি বল বাড়ান বাঁ প্রান্ত ধরেই ছুটতে থাকা জনি কাউকোকে। ফিনল্যান্ডের ফুটবলার মুখ তুলে এক বার দেখে নেন ডেভিড উইলিয়ামস ঠিক কোথায় রয়েছেন। তার পর চলতি বলেই ক্রস ভাসান তিনি। আবাহনীর ডিফেন্ডারদের টপকে প্রায় উড়ে এসে বলে পা ছুঁইয়ে গোল করেন উইলিয়ামস। তাঁর সামনেই ছিলেন ডিফেন্ডার মিলাদ সোলেমানি। তিনি উইলিয়ামসকে আটকাতে পারেননি।
২০ মিনিটে সুযোগ মিস করেন কাউকো। ডান দিক থেকে প্রীতম কোটালের ভাসানো পাসে তাড়াহুড়ো করে শট মারতে গিয়ে বল উড়িয়ে দেন। এর নয় মিনিট পরে আবার এগিয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান। এ বার বুমোসের থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত ধরে উঠে এসে বল ভাসান প্রবীর দাস। একই ভাবে চলতি বলে পাঁ ছুঁইয়ে গোল উইলিয়ামসের। হ্যাটট্রিক করার দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিলেন কয়েক মিনিট পরেই। কিন্তু বুমোসের পাস থেকে সামনে একা গোলকিপারকে পেয়েও তাঁর গায়ে বল মারেন উইলিয়ামস। প্রথমার্ধ শেষের কিছুক্ষণ আগে লিস্টন একক প্রচেষ্টায় একটি শট নিয়েছিলেন, যা প্রতিহত হয়। সেই বল ফাঁকায় থাকা উইলিয়ামসকে বাড়ালে গোল হতেও পারত।
বিরতির পর আবাহনী ঢাকা অবশ্য অনেক বেশি সংগঠিত হয়ে নেমেছিল। বল আদানপ্রদানের জায়গায় দিচ্ছিল না সবুজ-মেরুনকে। আক্রমণেও তারা এগিয়েছিল। সেই পরিশ্রম কাজে আসে ৬০ মিনিটে। রাকিবের বাড়ানোর বলে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়ে গোল করেন ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া জনি আকোস্তার বন্ধু ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেস। এর পরে বার বার আক্রমণে উঠেছে আবাহনী। ৬৭ মিনিটের মাথায় জুয়েল রানার গড়ানোর শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশের ক্লাবটির আক্রমণ দেখে মনে হচ্ছিল যে কোনও সময় তারা সমতা ফেরাতে পারে।
তবে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এটিকে মোহনবাগানও। সেই সুযোগ এল খেলা শেষের পাঁচ মিনিট আগে। আক্রমণে এটিকে মোহনবাগানের অর্ধে উঠে এসেছিল আবাহনীর প্রায় গোটা দলই। সবার অলক্ষ্যে মাঝমাঠ থেকে ভাসানো পাস উইলিয়ামসের উদ্দেশে বাড়িয়ে দেন বুমোস। এ বারও অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের সামনে একা ছিলেন গোলকিপারই। কিন্তু দ্বিতীয় বার ভুল করলেন না উইলিয়ামস। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করলেন তিনি। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল এএফসি কাপের মূলপর্বে এটিকে মোহনবাগানের খেলাও।