ইগর স্তিমাচ। ফাইল চিত্র
কোচ হিসাবে তাঁর মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ফলে হংকংয়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার জিতে ভারত এশিয়ান কাপের মূল পর্বে উঠলেও, আসল প্রতিযোগিতা তিনি কোচ না-ও থাকতে পারেন। যদি থাকেন, তা হলে তাঁর কথাতেই ভারতীয় ফুটবল চলুক, এমনটাই চান কোচ ইগর স্তিমাচ। মঙ্গলবার ম্যাচের পর বিস্ফোরক মেজাজে ক্রোয়েশিয়ার প্রাক্তন বিশ্বকাপার।
স্তিমাচ বলেছেন, “কিছু জিনিস আমূল বদলাতে হবে। যদি আমি কোচ থাকি, তা হলে যখন বলব তখনই লিগ শেষ করতে হবে। যতদিন চাইব জাতীয় শিবির করার ছাড়পত্র দিতে হবে। যাদের দলে নেব তারা যেন অবশ্যই কোনও ক্লাবের হয়ে নিয়মিত খেলে। উন্নতির ব্যাপারে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে। এশিয়ার প্রথম আটটি দেশের থেকে অন্তত ৮-১০ বছর পিছিয়ে আছি। কী ভাবে আমরা ওখানে পৌঁছব? এ বার জেগে ওঠার সময়।”
স্তিমাচের সংযোজন, “ক্লাব এবং এআইএফএফের মধ্যে যোগাযোগ আরও ভাল করতে হবে। নিজে থেকে আইএসএল ক্লাবের কোচেদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখেছি। আমার কাছে সব তথ্য পৌঁছনো চাই। ক্লাবের কোচেদের সঙ্গে কথা বলে নির্দিষ্ট কোনও ফুটবলারের ব্যাপারে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মেনে এগোতে হবে। আশা করি প্রত্যেক ফুটবলারদের সঙ্গে এ বার বেশি সময় কাটাতে পারবেন ক্লাবের কোচেরা।”
ক্লাবস্তরের প্রতিযোগিতায় বিদেশিদের সংখ্যা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে স্তিমাচের। বলেছেন, “আইএসএলে এখনও চার বিদেশি খেলে। সামনে এগোতে হলে আই লিগ থেকে বিদেশি খেলানোই তুলে দেওয়া উচিত। আমি জাতীয় দলে আরও বেশি স্ট্রাইকার, সেন্টার ব্যাক চাই। কেন আই লিগে বিদেশিদের খেলানো হয় সেই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিলে ভাল হয়। আমি পাল্টা ১০০ যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেব কেন আই লিগে বিদেশি দরকার নেই।”
স্তিমাচের দাবি, তিনি অনেক কম বেতনে ঝুঁকি নিয়ে ভারতে কোচিং করাতে এসেছেন। এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন সমালোচকদের মুখে উপর একটা জবাব। হাতে ক্ষমতা থাকলে তিনি আরও অনেক কিছু করতে পারেন। বলেছেন, “অনেক ভারি বায়োডাটা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। বাজারে আমার যা দাম, তার থেকে অনেক কম বেতনে ভারতে এসে কোচিং করাচ্ছি। অন্য লোভনীয় প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ভারতে যোগ দিই। এসে দেখি অনেকে আমাকে নিয়ে সন্দেহ করা শুরু করেছেন। ঝুঁকি নিয়ে এখানে এসেছি। আর্সেনাল বা ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে কোচিং করানোও এর থেকে সহজ। এখানে অনেক প্রত্যাশার ভার নিয়ে নতুন করে দলটা গড়তে হচ্ছে। ৫-৬ দিনে তাদের ফুটবলের কোনও বিষয় শিখতে হচ্ছে। ভাবা যায়!”
যে ভাবে ফুটবল সংস্থার কর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা নিয়েও ক্ষুব্ধ স্তিমাচ। বলেছেন, “এ রকম একটা প্রতিযোগিতার আগেই এটা করতে হল? কেউ এক বার ভেবে দেখল না সাজঘরে এর প্রভাব কী হতে পারে? কে ঠিক কে ভুল তা বলছি না। আমি সময়টার কথা বলছি। এত বছর যখন অপেক্ষা করা হয়েছে, তখন আরও তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করলে কিচ্ছু এসে যেত না।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।