সফল: সামাদের গোলেই জয় পেল ভারত। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
গোল হওয়ার পরে কখনওই বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে ভেসে যান না সুনীল ছেত্রী। আশ্চর্যরকম ভাবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখা গেল শনিবার যুবভারতীতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের নাটকীয় জয়ের রাতে। সংযুক্ত সময়ে সাহাল আব্দুল সামাদ জয়সূচক গোল করতেই ইউসেইন বোল্টের গতিতে ছুটে গিয়ে অনুজ সতীর্থের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সুনীল।
আবেগের বিস্ফোরণের রহস্য কী? স্টেডিয়ামে ছাড়ার আগে হাসতে হাসতে সুনীল বললেন, ‘‘আফগানিস্তান সমতা ফেরানোর পরে একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল জিততে পারব না। সাহালের গোলের পরে আর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।’’ যোগ করলেন, ‘‘দলের সকলের মনেই প্রশ্ন, আমি নিজে গোল করলে কখনও এ রকম করি না। তা হলে আজ কী হয়েছিল?’’ কী বললেন? সুনীলের সংযোজন, ‘‘গোল খাওয়ার জন্য আমিও কিছুটা দায়ী ছিলাম। তাই খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সাহাল গোল করার পরে নিজেকে সামলাতে পারিনি। ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে গিয়েছিলাম অভিনন্দন জানাতে।’’৩৭ বছর বয়সেও সুনীল ভরসা ভারতের। তিনি গোল করলেই দল ম্যাচ জেতে। এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে দুই ম্যাচে তিন গোল করেছেন তিনি। দেশের হয়ে মোট ৮৩টি গোল। আর তিনটি গোল করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন লিয়োনেল মেসিকে। ভারত অধিনায়ক অবশ্য মানতে রাজি নন যে, তিনিই একমাত্র ভরসা। বললেন, ‘‘কে বলেছে আমি একাই শুধু গোল করি। সাহাল রয়েছে। আশিকও প্রায় গোল করে ফেলেছিল। এই জয়ে প্রত্যেকের মতো আমারও সামান্য ভূমিকা রয়েছে।’’
এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘আমি সব সময়ই আগ্রাসী। প্রতিটি ম্যাচেই গোল করতে চাই। হয়তা তা পারি না। কিন্তু চেষ্টা করে যাই। এই ম্যাচে দু’টি গোল নষ্ট করেছি। আমি খুশি অন্তত একটি গোল করতে পেরে। আমি মনে করি, চার-পাঁচটা সুযোগ তৈরি করতে পারলে একটি গোল হবেই। ব্যতিক্রম মেসি ও রোনাল্ডো।’’আফগানিস্তান সমতা ফেরানোর পরে কোচ তুলে নেওয়ায় কি হতাশ? সুনীল বলে দিলেন, ‘‘একেবারেই না। আমি একটা হলুদ কার্ড দেখে রয়েছি। আমাদের খেলা এখনও শেষ হয়নি। কোচের পরিকল্পনাই ছিল, ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরে ৮৭-৮৮ মিনিটে আমাকে তুলে নেওয়া হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘গোল খেয়ে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যের। তা সত্ত্বেও কোচ যে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আমাকে তুলে নেওয়ার, তার কোনও তুলনাই হয় না।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।