football

বাঁদরের আওয়াজ করে লুকাকুকে বর্ণবিদ্বেষী ইঙ্গিত! সম্মান দেখানো হয়েছে, দাবি সমর্থকদের

খেলার মধ্যে বর্ণবিদ্বেষী কোনও রকম ইঙ্গিত বা কথাকে কঠোর হাতেই প্রতিরোধ করে ফিফা বা আইসিসি-র মতো সংস্থাগুলি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মিলান শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:০০
Share:

লুকাকুর গোলে ইন্টার এগিয়ে যেতেই তাঁর উদ্দেশে আসে বাঁদরের আওয়াজ। ছবি: রয়টার্স

ফুটবল বিশ্বে আবার বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ।

Advertisement

এই সপ্তাহের শুরুতে ইতালির সেরি এ-তে মুখোমুখি হয়েছিল ইন্টার মিলান ও ক্যাগিলারি। খেলা শেষ হয় ইন্টারের পক্ষে ২-১ ফলে। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে জেতান এই মরশুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ইন্টারে আসা বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু।

ম্যাচটি ছিল ক্যাগিলারির হোম ম্যাচ। ২৭ মিনিটে লুয়াতারো মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে যায় ইন্টার। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেই গোল শোধ করে দেন জোয়াও পেদ্রো। ৭২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় ইন্টার। লুকাকুর গোলে ইন্টার এগিয়ে যেতেই গোল পোস্টের পিছন থেকে তাঁর উদ্দেশে বাঁদরের আওয়াজ করেন ক্যাগিলারি দলের সমর্থকরা। যা অপমানজনক ভাবে নেন লুকাকু। তিনি খেলা শেষে বলেন, “আমরা পেছনের দিকে হাঁটছি।” তাঁর সতীর্থ ডিফেন্ডার মিলান স্ক্রিনিয়ারকে দেখা যায় ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন সমর্থকদের।

Advertisement

বাঁদরের আওয়াজ করা বা বাঁদর বলা বর্ণবিদ্বেষী বলেই মনে করা হয়। ক্রিকেটে হরভজন সিংহ এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের সেই ‘মাঙ্কিগেট’ নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ক্রীড়াপ্রেমীরা। খেলার মধ্যে বর্ণবিদ্বেষী কোনও রকম ইঙ্গিত বা কথাকে কঠোর হাতেই প্রতিরোধ করে ফিফা বা আইসিসি-র মতো সংস্থাগুলি।

আরও পড়ুন: অঘটন ঘটানোর আশায় সুনীল থেকে গুরপ্রীত

কিন্তু লুকাকুর বিরুদ্ধে এই আওয়াজকে বর্ণবিদ্বেষী বলে মানতে রাজি নয় ইতালির ফুটবল সমর্থকরা। সোশ্যাল মিডিয়াতে লুকাকু-র উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন ইন্টারেরই এক সমর্থক। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, লুকাকু যেন এই আওয়াজকে অপমানসূচক না মনে করেন। এই আওয়াজ করা হয়েছে ‘সম্মান দেখিয়ে’। ক্যাগিলারি সমর্থকরা লুকাকুকে ভয় পেয়েই এই আওয়াজ করা হয়েছে বলেওদাবি করা হয়েছে সেই চিঠিতে। এর মধ্যে কোনও রকম বর্ণবিদ্বেষী বা অপমানজনক কিছু নাকি ছিল না। সেই চিঠিতে আরও বলা হয় যে, ইতালির ফুটবল সমর্থকরা বর্ণবিদ্বেষী নয়। তাঁরা কোনও দিন বর্ণবিদ্বেষকে সমর্থন করে না।

সেই ফেসবুক পোস্ট

গত মরশুমে এভারটনের ইতালিয়ান ফুটবলার ময়েজ কিনওক্যাগিলারি সমর্থকদের থেকে এই একই ব্যবহার পেয়েছিলেন। য়ুভেন্তাসের মাতুইদির সঙ্গেও একই ব্যবহার করেন এই সমর্থকরা। যদিও কোনও বারই এই সমর্থকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ম্যাচ রেফারিরা কোনও অভিযোগই দায়ের করেননি তাদের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার: ফুটবলার হয়ে ভারতকে বিধ্বস্ত করা সেই কোম্যান আজ পরীক্ষা নেবেন সুনীলদের​

২০১৭ সালে পেস্কারা ক্লাবের ফুটবলার সুলে মুন্তারি ক্যাগিলারি সমর্থকদের এই বাঁদরের আওয়াজের প্রতিবাদে মাঠ ছেড়ে বেড়িয়ে যান খেলার মাঝ পথেই। সেই জন্য শাস্তি হয় মুন্তারিরই। অতীতে লুকাকুর পুরনো সতীর্থ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পল পোগবা, র‌্যাশফোর্ড, চেলসির স্ট্রাইকার ট্যামি আব্রাহামের মতো ফুটবলারদের সোশ্যাল মিডিয়াতেই বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যণীয়, এই সব তারকা ফুটবলারদের সবাই কৃষ্ণাঙ্গ।

বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন চেলসি ম্যানেজার ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড থেকে শুরু করে ইংরেজ মহিলা দলের ম্যানেজার ফিল নেভিল। যদিও তাঁদের ব্যবহারের ভুল মানে তাঁর কাছে পৌঁছানোর জন্যলুকাকুর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ক্যাগিলারি সমর্থকরা। তবে ম্যাচ রেফারি বিষয়টি নিয়ে কোনও রিপোর্ট না দেওয়ায় ফিফা এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement