সতর্ক: বিশেষ পর্যবেক্ষণে থাকবেন স্যাঞ্চেজ। ফাইল চিত্র
ক্রীড়া দুনিয়ায় আগেই উদ্বেগ তৈরি করেছিল। করোনাভাইরাস এ বার প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করল খেলোয়াড়দের উপরেও। বিভিন্ন খেলায় কয়েক জন করোনা-আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন কি না, সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
চিলি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের দুই তারকা ফুটবলার আলেক্সিস স্যাঞ্চেজ এবং আর্তুরো ভিদালকে আলাদা ভাবে করোনাভাইরাসের শুশ্রূষা ব্যবস্থাপনার মধ্যে রাখা হবে। তাঁরা ইটালি ও স্পেনে ক্লাব ফুটবল খেলেন এবং বিশ্বকাপের যোগ্যতামান পর্বের ম্যাচ খেলার জন্য দেশে ফিরবেন চিলির হয়ে। দুই ফুটবলারকে আলাদা করে পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার মধ্যে রাখার কথা ঘোষণা করেছেন স্বয়ং চিলির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি ইটালির উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ‘‘কে কী পেশার সঙ্গে যুক্ত, তা দেখে পদক্ষেপ ঠিক করা হবে না। কে এই ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারবে, কেউ জানে না। ইটালি যে ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে, সেটাই অনুসরণ করতে চাই।’’
ইটালি এ দিনই দেশব্যাপী চরম সতর্কতা জারি করেছে এবং বলে দিয়েছে, সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই তাকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ইটালিতে করোনাভাইরাসের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা ১৬৮ থেকে লাফিয়ে ৬৩১ হয়ে গিয়েছে। তার পরেই সরকার ঘোষণা করেছে, ৩ এপ্রিল পর্যন্ত খুব প্রয়োজন না-হলে কেউ যেন ভ্রমণ না করেন। চিলির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলে দিচ্ছেন, ‘‘যদি এই ফুটবলাররা নিজেদের বাড়ির মধ্যে পৃথক ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে ও সেখানে মেশিনে চড়ে ট্রেনিং করে, তা হলে সেটা তাদের ব্যাপার। অথবা ওদের সকলকে দেশের ফুটবল স্টেডিয়ামে পর্যবেক্ষণে রাখা যেতে পারে।’’
যদিও চিলি ফুটবল ফেডারেশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইউরোপ থেকে ফেরা ফুটবলারদের জন্য আলাদা করে নজরদারির ব্যবস্থার কথা তাদের কিছু জানানো হয়নি। ‘‘আমাদের কাছে এ রকম কোনও নির্দেশই পৌঁছয়নি। তাই মন্ত্রীর কথা শুনে আমরা স্তম্ভিত,’’ বলেছেন ফেডারেশনের এক কর্তা। আলেক্সিস স্যাঞ্চেজ খেলেন ইটালির ইন্টার মিলানের হয়ে। আর্তুরো ভিদাল খেলেন স্পেনের বার্সেলোনা দলে। এই দু’টি দেশেই করোনাভাইরাসের আক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। স্পেন যেমন ইটালি থেকে সমস্ত উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ বাতিল করার আর্জি জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্পেনে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। ১,৬৩৯ জন আক্রান্ত। ইটালিতে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ১০,১৪৯। স্যাঞ্চেজের দল ইন্টার মিলান ফাঁকা স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলছিল। মঙ্গলবার থেকে এক মাসের জন্য সব খেলাই বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, দু’টি বিশ্বযুদ্ধের সময় ফুটবল পাগল ইটালিতে যে রকম স্তব্ধতা নেমে এসেছি, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে করোনাভাইরাস নিয়ে পরিস্থিতি।
ইটালি ফুটবল সংস্থার কর্তারা জরুরি বৈঠকে বসছেন, সমাধান সূত্র বের করার জন্য। এপ্রিলে ‘সেরি আ’ ফের চালুর কথা ভাবা হলেও তা আদৌ সম্ভব কি না, নির্ভর করছে কতটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে তার উপরে।