হরমনপ্রীতের স্বপ্নভঙ্গ মেলবোর্নে। জোহানেসবার্গ ফিরিয়েছিল সৌরভকে। —নিজস্ব চিত্র।
২৩ মার্চ ২০০৩। ঠিক ১৭ বছর আগের এক দিন। ১০০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্নটা চূর্ণ হতে শুরু করেছিল জাহির খানের প্রথম ওভার থেকেই। বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই প্রথম ওভারে উঠেছিল ১৫ রান।
৮ মার্চ ২০২০। দীপ্তি শর্মার প্রথম ওভারে উঠল ১৪ রান। তখন থেকেই যেন মহিলাদের টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দেওয়াললিখন পড়ে ফেলেছিলেন ভারত সমর্থকরা।
সে বার জোহানেসবার্গে রিকি পন্টিংদের হাতে চূর্ণ হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত। শত কোটির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল সে দিন।
আরও পড়ুন: হার্দিক-শিখর-ভুবির কামব্যাক, বাদ কেদার-সহ তিন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে দল ঘোষণা ভারতের
এ বার হিলি-মুনির দাপটে স্রেফ উড়ে গেল হরমনপ্রীতের ভারত। পুরুষ ও মহিলাদের ফাইনাল এসে যেন মিশে গেল একই বিন্দুতে! বিশ্বের দুই প্রান্তের দুই শহরে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হল দুই অধিনায়ককে। ২০০৩ বিশ্বকাপে সৌরভ। আর ২০২০ বিশ্বকাপে হরমনপ্রীত।
জো’বার্গের সেই ফাইনালে শুরু থেকেই দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেড়াচ্ছিল ভারতকে। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথু হেডেন প্রথম থেকেই চালাতে শুরু করেন। হরভজন সিংহ যখন দু’জনকে ফেরান, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পরে রিকি পন্টিং (১৪০ অপরাজিত) ও ডেমিয়েন মার্টিন (৮৮ অপরাজিত) ম্যাচ নিয়ে চলে যান ভারতের হাতের বাইরে। অজিরা করে পাহাড়প্রমাণ ৩৫৯ রান।
সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। গ্লেন ম্যাকগ্রাকে চালাতে গিয়ে ফেরেন সচিন। সহবাগ ছাড়া বাকিরা সে ভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। বৃষ্টিভেজা জো’বার্গে শেন ওয়ার্নকে বার কয়েক গ্যালারিতে তুলে ফেলেছিলেন সহবাগ। শেষ পর্যন্ত ৮২ রানে ফেরেন তিনি। রাহুল দ্রাবিড় করেন ৪৭ রান। ভারত হার মানে ১২৫ রানে।
ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি সম্পূর্ণ ভিন্ন ফরম্যাট। অনেকেই বলতে পারেন, জো’বার্গের সেই ফাইনাল ও মেলবোর্নের আজকের ফাইনালের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। কিন্তু দুটো ফাইনালের মধ্যে মিল এক জায়গাতেই। দুটো ম্যাচই অনেক আগে শেষ হয়ে গিয়েছিল।
ভারতের মহিলারা গোটা টুর্নামেন্টে দাপিয়ে খেললেও মোক্ষম দিনে ভেঙে পড়লেন। ভারত বড্ড বেশি নির্ভর করেছিল শেফালি ভার্মার ব্যাটের উপরে। শুরুতে তিনি ফিরে যাওয়ায় ছন্দ হারিয়ে যায় গোটা দলের। বাকিরা এলেন আর গেলেন। ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাত্র ৯৯ রানে। ম্যাচের শেষে হতাশ মুখে হরমনপ্রীত সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন শেফালিকে। জো’বার্গেও তো সচিন-সৌরভরা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এত কাছে এসেও তাঁদের শূন্য হাত ফিরতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লেন শেফালিরা, বিশ্বকাপ অধরা ভারতের