ফ্লয়েড মেওয়েদার এবং কনর ম্যাকগ্রেগর
এক বছর ধরে প্রচুর জল্পনার পরে শেষ পর্যন্ত লড়াইটা হচ্ছে—ফ্লয়েড মেওয়েদার বনাম কনর ম্যাকগ্রেগর।
একজন বক্সিং রিংয়ের কিংবদন্তি মেওয়েদার। আর তাঁর প্রতিপক্ষ মিক্সড মার্শাল আর্টসের রাজা।
আসল চমকটা হল তাঁদের লড়াইয়ের মোট মূল্য নিয়ে। এক বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৬,৪৫৮ কোটি টাকা।
৪০ বছর বয়সি মার্কিন কিংবদন্তি বক্সার মেওয়েদার টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে নিশ্চিত করে দেন লড়াইটা হচ্ছেই। লেখেন, ‘সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়ে গেল।’
মিক্সড মার্শাল আর্টসের বিশ্বখ্যাত টুর্নামেন্ট আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন ২৮ বছর বয়সি ম্যাকগ্রেগরও বলে দিয়েছেন, ‘‘লড়াইটা হচ্ছেই।’
আরও পড়ুন: চমক আরও দেখবেন, বলছেন গোপীচন্দ
বক্সিংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি যুদ্ধের ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুই শিবিরের তরফে গোলাগুলিও শুরু হয়ে গিয়েছে। দুই শিবিরের পক্ষ থেকেই দাবি করা হচ্ছে তারাই জিতছেন। কেউ বলছেন পেশাদার বক্সিংয়ে তো কোনও অভিজ্ঞতাই নেই ম্যাকগ্রেগরের। মেওয়েদারের মতো অভিজ্ঞ বক্সারের বিরুদ্ধে টিকতেই পারবেন না। আইরিশ চ্যাম্পিয়নের শিবিরের আবার দাবি, চমক দেওয়াটাই ম্যাকগ্রেগরের বিশেষত্ব। মেওয়েদারও যেন আরও একটা চমক দেখার অপেক্ষায় থাকেন। এর মধ্যে মেওয়েদারের শিবির আবার নিশ্চিত করে ফেলেছে বক্সিং রিং-য়ে কোনওভাবে যদি ম্যাকগ্রেগর লাথি মেরে বসেন (ইউএফসি-র লড়াইয়ে যেটা স্বাভাবিক) তা হলে কয়েক মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।
মজার কথা, পাঁচটি ওজন বিভাগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেওয়েদার ২০১৫-তেই অবসর নিয়েছিলেন। ৪৯টি লড়াইয়ের পরে। যার কোনওটিতেই তিনি হারেননি। অবশ্য এটাই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি অবসর নিয়েছিলেন ২০০৮ সালে ৩৯টি লড়াইয়ের পরে। এটা সত্যি যে ম্যাকগ্রেগর এর আগে পেশাদার বক্সিংয়ে কোনও দিন লড়েননি। তবে তিনি ইউএফসি-র ইতিহাসে প্রথম যিনি দুটি বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়েছেন।
বক্সিং লাইসেন্সের আবেদন জানান তিনি গত বছরের শেষের দিকে। শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট অ্যাথলেটিক কমিশন তাঁকে মার্কিন মুলুকে বক্সিং করার অনুমতি দেয়। ম্যাকগ্রেগরের শিবিরের অন্যতম এক কর্তা বলেছেন, ‘‘কনর ম্যাকগ্রেগর আজ এই জায়গায় এমনি এমনি পৌঁছয়নি। ম্যাকগ্রেগর যে কোনও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, যে কোনও সময়ে, যে কোনও জায়গায় লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। ফ্লয়েড মেওয়েদারকেও নকআউট করার চেষ্টা করবে ম্যাকগ্রেগর।’’
বছর খানেক ধরেই দু’জনের লড়াইয়ের আশায় ছিল সমর্থকরা। হয়তো দু’জনেই দীর্ঘদিন ধরেই চাইছিলেন লড়াইটা হোক। না হলে কেন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে একে অন্যের প্রসঙ্গ এক বার হলেও তুলতে দেখা যাবে দু’জনকে!
মেওয়েদারের শিবিরের এক কর্তা আবার দাবি করলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে যেখানেই মেওয়েদার গিয়েছে সেখানেই প্রশ্ন শুনতে হয়েছে ম্যাকগ্রেগরের বিরুদ্ধে কবে লড়ছে?’’
৪০ বছরের মেওয়েদারের বিরুদ্ধে ২৮ বছরের ম্যাকগ্রেগরের এই মেগা-লড়াইয়ে কে জিততে পারেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেওয়েদারের প্রতিদ্বন্দ্বীর বয়স কিন্তু অনেকটাই কম, ক্ষিপ্রতা তাই বেশি থাকবে, আর কনর যখন কাউকে মারেন, সে মাটিতে আর দাঁড়িয়ে থাকে না। মেওয়েদারেরও চ্যালেঞ্জটা তাই মোটেই সোজা হবে না।