চার উইকেট পেয়েছে ডম বেস। পিটিআই
টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনেই সব চেয়ে বেশি নজর থাকে সমর্থকদের। ম্যাচের ভাগ্য কোন দিকে গড়াবে, তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের শেষে ভারতের অবস্থা দেখে বলে দেওয়াই যায়, ইংল্যান্ড অনেকটাই সুবিধেজনক জায়গায় রয়েছে। ঋষভ পন্থ ও চেতেশ্বর পুজারা মিলে ১১৯ রানের জুটি না গড়লে ব্যাটিং বিপর্যয়ের আতঙ্ক নেমে আসত ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। তবে জমে যাওয়ার পরে উইকেট ছুড়ে দেওয়ার অভ্যাস ঋষভকে ছাড়তে হবে। নিজের উইকেটের মূল্যটা বুঝতে হবে।
ইংল্যান্ডের ৫৭৮ রানের জবাবে ছয় উইকেট হারিয়ে ভারতের স্কোর ২৫৭। পিছিয়ে ৩২১ রানে। ভারতকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করছে তামিলনাড়ুর দুই অফস্পিনার— আর অশ্বিন ও ওয়াশিংটন সুন্দর। এই জুটির উপরেই অনেকটা নির্ভর করছে চলতি টেস্টের ভাগ্য। চৃতুর্থ দিন সকালে এই জুটি দ্রুত ভেঙে গেলে ফের পাল্লা ভারী হবে ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ায় কিন্তু ব্যাট হাতে ম্যাচ ঘোরানো ইনিংস আছে এই দু’জনের। তাই অশ্বিন-সুন্দর জুটির উপরে ভরসা রাখা যায়।
এই ইংল্যান্ড বোলিংয়ের অন্যতম অস্ত্র জফ্রা আর্চার। যে কোনও পিচেই ভয়ঙ্কর। ইনিংসের শুরুতে তাকে কিছুটা সমীহ করে খেললে ডম বেসের মতো অনভিজ্ঞ স্পিনার এতটা ভয়ডরহীন বোলিং করতে পারত না। জফ্রাকে আক্রমণ করতে গিয়েই সমস্যা ডেকে আনে রোহিত ও শুভমন। জফ্রার লেগকাটারে ব্যাট বাড়িয়ে দিয়ে কট বিহাইন্ড রোহিত (৬)। ক্রিজে থিতু হয়ে যাওয়া শুভমন পরাস্ত হল গতির হেরফেরে। জফ্রার বলে অনড্রাইভ করতে গিয়ে শুভমন বুঝতে পারে বল তার ব্যাটে আসেনি। কিন্তু তত ক্ষণে ও শট খেলে ফেলেছে। মিডঅন অঞ্চলে সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে শুভমনের ক্যাচ ধরে নেয় ৩৮ বছরের জেমস অ্যান্ডারসন!
প্রথম দু'দিন যে পিচ থেকে কোনও ভাবেই বোলাররা সাহায্য পাচ্ছিল না, সেই পিচেই এখন পর্যন্ত সেরা ডেলিভারি এল ডম বেসের হাত থেকে। তরুণ অফস্পিনারের বল অফস্টাম্পের বাইরে থেকে আচমকা ঘুরে আছড়ে পড়ে বিরাটের ইনসাইড এজ-এ। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাটের মুখটা এক্সট্রা কভারের দিকে রেখে ডিফেন্ড করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনে ভারত অধিনায়ক। অজিঙ্ক রাহানের আউটের ক্ষেত্রে বোলার বেসের চেয়েও ফিল্ডার রুটের কৃতিত্ব বেশি। ২১৮ রান করার পরে বাঁ-দিকে শূন্যে শরীর ছুড়ে দিয়ে এক হাতে দুরন্ত ক্যাচ নিল ইংল্যান্ড অধিনায়ক। মনে হচ্ছে, এই টেস্টে যা চাইবে, সেটাই করতে পারবে রুট।
ভারতকে ম্যাচে ফেরায় পুজারা-পন্থের জুটি। ৭৩-৪ স্কোর থেকে পাল্টা আক্রমণের রাস্তা নেয় ঋষভ। বিশেষ করে ওদের বাঁ-হাতি স্পিনার জ্যাক লিচকে। বোলারদের স্পাইকসে ক্ষত হওয়া পিচের অংশে বল ফেলছিল লিচ। তাই আক্রমণ না করে বলকে ঘোরার জায়গা দিলে বিপদে পড়ত ঋষভ।
৮৮ বলে ঋষভের ৯১ রানের ইনিংস সাজানো হয় ৯টি চার ও পাঁচটি ছয়ে। প্রত্যেকটি ছয় এসেছে বাঁ-হাতি স্পিনারের বিরুদ্ধে। দুর্ভাগ্যবশত এই জুটি ভেঙে যায়। পুজারার পুল শট ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ অঞ্চলের ফিল্ডারের গায়ে লেগে চলে যায় রোরি বার্নসের হাতে। এর পরে ঋষভের আরও একটু দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু অফস্পিনারকে স্টেপ আউট করে মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিল ঋষভ। ভারতেরও সমস্যা বাড়ল।